ফিরে এলো ১০ বছরের পুরোনো লজ্জা, বাংলাদেশের করুণ হার

দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ম্যাচে ৩৩৩ রানের বড় ব্যবধানে হেরে গেছে বাংলাদেশ। ৪২৪ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে একশর নিচে, মাত্র ৯০ রানে গুটিয়ে যান মুশফিকরা। টেস্টে একশ রানের নিচে বাংলাদেশ সর্বশেষ অলআউট হয়েছিলো ১০ বছর আগে।

২০০৭ সালে কলম্বোতে বাংলাদেশ অলআউট হয়েছিলো ৬২ রানে। এরপর আর একশর নিচে অলআউট হওয়ার লজ্জা পেতে হয়নি। কিন্তু পচেফস্ট্রুমে ফিরে এলো ১০ বছরের পুরোনো লজ্জাটা। এবার নিয়ে নবমবার টেস্টে একশর নিচে গুটিয়ে গেলো বাংলাদেশ।

শেষ ইনিংসে বাংলাদেশ ধসে পড়ে মূলত কেশব মহারাজ ও কাগিসো রাবাদার কাছে। চতুর্থ দিনের খেলা শেষে লিটন দাস বলেছিলেন যে, শেষ দিনে বাংলাদেশের জন্য বিপদ বয়ে আনতে পারেন কেশব। তার আশঙ্কাই সত্য হয়েছে। শেষ দিনে চার উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের ম্যাচ বাঁচানোর আশা শেষ করে দিয়েছেন মহারাজ। আর রাবাদা নিয়েছেন তিন উইকেট।

চতুর্থ দিন শেষে অপরাজিত থাকা মুশফিক আজ ব্যাটিং শুরু করেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদকে নিয়ে। দর্শকরা ঠিকঠাক তাদের আসনে বসার আগেই বিদায় নেন মুশফিক। এরপর একে একে ড্রেসিংরুমে ফিরে যান মাহমুদুল্লাহ, লিটন ও সাব্বির। মুশফিককে দিয়ে শিকার শুরু করা রাবাদা পরে বিদায় করেন মাহমুদুল্লাহ ও লিটনকেও।

চতুর্থ দিন ৩২ রান করা ইমরুলই এই ইনিংসে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ স্কোরার। এ ছাড়া ১৬ রান করেন মুশফিক। ১৫ রানে অপরাজিত থাকেন মেহেদি হাসান মিরাজ। এ ছাড়া আর কোনো বাংলাদেশি ব্যাটসম্যান দুই অংকের রানই করতে পারেননি।

ম্যাচের প্রথম ইনিংসে দক্ষিণ আফ্রিকা করে ৪৯৬ রান। ১৯৯ রানের অসাধারণ এক ইনিংস খেলেন ডিন এলগার। অভিষিক্ত ব্যাটসম্যান অ্যাইডেন মার্করাম করেন ৯৭ রান। এ ছাড়া সেঞ্চুরি করেন হাশিম আমলা। এই তিনজনের ব্যাটে চড়ে বিশাল স্কোর দাঁড় করায় তারা।

জবাব দিতে নেমে বাংলাদেশ গুটিয়ে যায় ৩২০ রানে। সর্বোচ্চ ৭৭ রান আসে মুমিনুলের ব্যাট থেকে। ৬৬ রান করেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। মুশফিক, তামিম সেট হয়েও বড় ইনিংস খেলতে ব্যর্থ হন। দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে তিনটি উইকেট নেন কেশব মহারাজ। দুটি করে উইকেট নেন কাগিসো রাবাদা ও মরনে মরকেল।

১৭৬ রানের লিড নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নামে দক্ষিণ আফ্রিকা। এবার তারা ছয় উইকেটে ২৪৭ রান করে ইনিংস ঘোষণা করে। তাদের লিড দাঁড়ায় ৪২৩ রান। এই ইনিংসে অবিশ্বাস্য এক স্পেলে তিন উইকেট নেন মুমিনুল হক।

চতুর্থ দিনের এক সেশন এবং পঞ্চম দিনের তিন সেশন; এই চার সেশনে বাংলাদশের লক্ষ্য দাঁড়ায় ৪২৪ রান অথবা পুরোটা সময় টিকে থাকা। দ্বিতীয়টাই বেছে নিয়েছিলেন মুশফিকরা।

চতুর্থ দিনের শেষ সেশনটা বৃষ্টির কারণে একদমই হতে পারেনি। ফলে একটু হলেও সুবিধা পায় বাংলাদেশ। কিন্তু দ্বিতীয় ইনিংস খেলতে নেমেই তামিম ও মুমিনুল বিদায় নেন কোনো রান না করে। যা অনন্ত চাপে ফেলে দেয় বাংলাদেশকে। সেই চাপ আর কাটিয়ে উঠতে পারেননি মুশফিকরা।

শেষ পর্যন্ত সাত উইকেট হাতে নিয়ে ৯০ ওভার খেলার লক্ষ্য সামনে রেখে পঞ্চম দিনের খেলা শুরু করে বাংলাদেশ। কিন্তু পুরো একটা সেশনও আর এদিন খেলা হয়নি মুশফিকদের।