আবারও উইকেট বুঝতে ব্যর্থ মুশফিক?

উইকেটে দেখা গেলো হালকা বাদামী ঘাস। যেখানে পেসাররা পেতে পারেন দারুণ সুবিধা। টস আগে হয়তো এমন চিন্তাই ভিড় করেছিলো মুশফিকুর রহিমের মনে। ব্যস, টস জিতে বোলিং বেছে নেয়ার জন্য আর কিছু চিন্তাই করলেন না তিনি!

কিন্তু মুশফিকের চিন্তা কি ঠিক ছিলো? ব্লুমফন্টেইন টেস্টের প্রথম দিন শেষে তো মনে হচ্ছে আবারও উইকেট বুঝেননি মুশফিক। ঘাস দেখেই তিনি ভেবে বসেছিলেন বোলিং উইকেট, অথচ সেই সেই উইকেটে প্রথম দিন শেষে ৯০ ওভারে মাত্র তিন উইকেট হারিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা তুলে ফেললো ৪২৮ রান!

টেস্টের প্রথম দিনে এর বাংলাদেশ এর চেয়ে বেশি রান দিয়েছে আর একবারই। ২০০৫ সালে কলম্বো টেস্টের প্রথম দিনে শ্রীলঙ্কা তুলে নিয়েছিলো ৪৪৯ রান। আর মাত্র ২২ রান করলে সেই রানকে পিছনে ফেলতে পারতেন এলগার-মার্কামরা। সেটা করতে না পারার কারণেও অবশ্য মুশফিকের সিদ্ধান্তকে সঠিক বলে প্রমাণ করা যাচ্ছে না।

নাকি মুশফিকের সিদ্ধান্ত ঠিকই আছে, ব্যর্থ হয়েছেন বাংলাদেশের বোলাররা? এমন প্রশ্ন উঠাও কিন্তু অযৌক্তিক নয়। এ ধরনের উইকেটে কিভাবে বোলিং করতে হয়, এ বিষয়ে যে রুবেল-তাইজুলরা পুরোপুরি অজ্ঞ, দিনভর স্পষ্ট হয়ে উঠেছে এ ব্যাপারটাই।

বাংলাদেশের বোলারদের অজ্ঞতার সুযোগে ২৪৩ রানের ওপেনিং জুটি গড়েছেন ডিন এলগার ও অ্যাইডেন মার্করাম। গত ম্যাচে তারা করেছিলেন ১৯৬ রান। হয়তো জুটিতে দুইশ না করতে পারা নিয়ে আফসোসও ছিলো তাদের।

সেই আফসোস দূর করার পথে আরো একটা সেঞ্চুরি করেছেন এলগার। সেঞ্চুরি করেছেন মার্করামও। এই তরুণ ব্যাটসম্যান অবশ্য আগের ম্যাচে, মানে তার টেস্ট অভিষেকেই সেঞ্চুরি পেতে পারতেন। কিন্তু রান আউটের ফাঁদে পড়ে দক্ষিণ আফ্রিকান ব্যাটসম্যান হিসেবে অভিষেকে সেঞ্চুরির তালিকায় সপ্তম হতে পারেননি তিনি।

প্রথম ম্যাচের দুঃখটা দ্বিতীয় ম্যাচে ঠিকই ভুলে গেলেন মার্করাম। কিন্তু দুঃখ গেলো না বাংলাদেশি বোলারদের। পচেফস্ট্রুমে বিশেষজ্ঞ স্পিনার হয়ে খেলা মেহেদি হাসান মিরাজ কিছুই করতে পারেননি। প্রথম দিনে ১৯ ওভার বোলিং করে ৯৮ রান দিয়ে তার পথে হাঁটছেন তাইজুল ইসলামও।

তাইজুল হতাশ করলেও বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে আলোর ঝলকানি ঠিকই ছিলো। যদিও তা একেবারেও অপ্রতুল। সেই ঝলকটা দেখিয়েছেন শুভাশিস রায়। শফিউল ইসলামের ব্যর্থতায় একাদশে সুযোগ পাওয়া এই পেসার দক্ষিণ আফ্রিকার পতন হওয়া তিন উইকেটের দুটিই তুলে নিয়েছেন।

১১৩ রান করা ডিন এলগার এবং চার নম্বরে নামা ট্যাম্বা বেভুমাকে বিদায় করেন শুভাশিস। অন্য উইকেটটি নিয়েছেন রুবেল হোসেন। তার শিকার হয়েছেন টেস্টে প্রথম সেঞ্চুরি করা মার্করাম।

প্রথম ম্যাচের মতো এই ম্যাচেও এখন পর্যন্ত আনন্দদায়ক বা আশাবাদী হওয়ার মতো কোনো উপলক্ষ্য উপহার দিতে ব্যর্থ মুশফিকুর রহিমরা। প্রোটিয়াদের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে এখন পর্যন্ত বোলিং করাকেই যেনো নিজেদের কাজ বানিয়ে বসে আছেন তারা!