আপনি পড়ছেন

আজ থেকে ঠিক ৫০ বছর, মানে অর্ধ শতাব্দী আগে বিশ্বজুড়ে খবর ছড়িয়ে পড়লো যে, চে গুয়েভারা মারা গেছেন। বিশ্ববাসী খবরটা প্রথমে উপেক্ষা করে গেলো। কারণ চে’র মৃত্যুর খবর সেবার নিয়ে সম্ভবত দশমবারের মতো তাদের কানে এসেছিলো। কিন্তু ২৪ ঘণ্টার মধ্যে উপেক্ষা পরিণত হলো আক্ষেপে, আক্ষেপ বদলে গেলো আফসোসে। সত্যি সত্যিই ১৯৬৭ সালের নয় অক্টোবর মারা যান লাতিন আমেরিকার বিপ্লবী নেতা চে গুয়েভারা।

iconic image of guevara

গুয়েভারার মৃত্যুর খবর নিয়ে ধোঁয়াশা ছিলো তৎকালীন বড় বড় সংবাদ মাধ্যমেরও। বলিভিয়ান সেনাবাহিনী তাকে সত্যিই মেরে ফেলেছে, নাকি জীবিত বন্দি করে রেখেছে, তা নিশ্চিত হতে লেগে গেছে অনেকটা সময়।

১৯৬৭ সালের ১০ অক্টোবর, মানে গুয়েভারারার মৃত্যুর একদিন পর নিউইয়র্ক টাইমসে কেবল লেখা হয়, ‘বলিভিয়ান সেনাবাহিনী জানিয়েছে, গুয়েভারা এক মুখোমুখি লড়াইয়ে মারা গেছেন।’ নিউ ইয়র্ক টাইমসকে এই খবর সরবারহ করেছিলো এপি।

মৃত্যুর এতো বছর হয়ে গেলেও চে গুয়েভারা যেনো এখনো জীবিত। বিশ্বজুড়ে যেখানেই আন্দোলন-বিপ্লব, গুয়েভারা যেনো জীবন্ত হয়ে উঠেন সেখানেই। তার আইকনিক একটি ছবি; যতো দিন যাচ্ছে ততোই যেনো হয়ে উঠছে শক্তিশালী। চে ছিলেন কমিউনিস্ট নেতা। কিন্তু তার ছবি ও চেতনা কমিউনিজম থেকে বের হয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে প্রতিবাদের ভাষায়। যেখানে প্রতিবাদে সামিল হয় মানুষ, সেখানেই যেনো চে উঠে আসেন নতুন করে।

যেভাবে বিপ্লবের প্রতিশব্দ হয়ে উঠেন চে

আর্জেন্টিনায় জন্ম নেয়া চে আলোচনায় আসেন কুবা বিপ্লব দিয়ে। তিনি ফিদেল কাস্ত্রো ও রাউল কাস্ত্রোর অত্যন্ত বিশ্বাসভাজন ছিলেন। ১৯৫৯ সালে কুবার বিপ্লব শেষ হয়। একনায়ক ফুলজেনসিও বাতিস্তা কুবা থেকে পালিয়ে যান এবং চে গুয়েভারার নেতৃত্বে বিদ্রোহীরা হাভানায় প্রবেশ করে।

কুবা কমিনিউনিস্টদের দখলে এলেও শেষ যুদ্ধে সামিল হতে পারেননি গুয়েভারা। সে সময় তার হাত ভাঙা ছিলো। এই অসুস্থতা নিয়েই বিদ্রোহীদের নেতৃত্ব দেন গুয়েভারা। তার আদেশ ছিলো খুবই সরল— যাও, এবং বাতিস্তার উপর হামলা করো।

অন্তরালে চে গুয়েভারা

১৯৬৫ সালে হঠাৎ করেই অন্তরালে চলে যান গুয়েভারা। ফিদেল কাস্ত্রোর কাছে একটা চিঠি লিখে চলে যান তিনি। চিঠিতে গুয়েভারা লিখেন, ‘আমার মনে হয় বিপ্লবী হিসেবে কুবার প্রতি আমার যে দায়িত্ব ছিলো, তা পালন করেছি। এখন আমি চলে যাচ্ছি।’

গুয়েভারার এমন কুবা ত্যাগ করার পূর্বেই কুবা হয়ে উঠেছিলো স্থিতিশীল দেশ। তখনই গুয়েভারা সিদ্ধান্ত নেন, তিনি আর কুবায় থাকবেন না। চিঠিতে গুয়েভারা আরো লিখেন, ‘আমার এখন যেতে হবে অন্য জায়গায়। অন্য জাতিরও আমাকে দরকার।’

গুয়েভারা যে জাতির কথা বলেছিলেন, তার প্রথমটি ছিলো কঙ্গো। যেখানে ছয় মাসের বিপ্লব ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়। পরে গুয়েভারা যান বলিভিয়ায়। যেখানে তাকে সেখানকার সেনাবাহিনীর কারণে পালিয়ে বেড়াতে হয়। পরে বলিভিয়ান সেনাদের হাতে তার মৃত্যু হয়।

জানা যায়, গোপনে গুয়েভারাকে হত্যা করে তার লাশের শেষকৃত্য করে ফেলে বলিভিয়া। প্রমাণ হিসেবে তার একটা হাত কেটে রেখে দেয় তারা। এরপর ৩০ বছর পর কুবার বিপ্লবীরা আবার তার শেষকৃত্য করে।

গুয়েভারা বেঁচে আছেন, এখনো!

গুয়েভারা বেঁচে আছেন, এখনো বেঁচে আছেন! হ্যা, এই দাবিটা করা হয়। চিরবিপ্লবী চে গুয়েভারার চেতনার ধারকগণ মনে করেন, গুয়েভারার শরীরাটা পৃথিবীতে নেই। তারপরও তিনি বেঁচে আছেন। তিনি বেঁচে আছেন তার চেতনায়।

Get the latest world news from our trusted sources. Our coverage spans across continents and covers politics, business, science, technology, health, and entertainment. Stay informed with breaking news, insightful analysis, and in-depth reporting on the issues that shape our world.

360-degree view of the world's latest news with our comprehensive coverage. From local stories to global events, we bring you the news you need to stay informed and engaged in today's fast-paced world.

Never miss a beat with our up-to-the-minute coverage of the world's latest news. Our team of expert journalists and analysts provides in-depth reporting and insightful commentary on the issues that matter most.