দিল্লিতে আজ শেষ হচ্ছে এক ‘লড়াকু সৈনিকে’র গল্প

কদিন আগে কম সমালোচনা হলো না তাকে নিয়ে। বয়স ৩৯ চলছে। এই বয়সে নিউজিল্যান্ড সিরিজের দলে সুযোগ দেওয়া হলো আশিষ নেহরাকে। সেটাও টি-টোয়েন্টির দলে! অনেকেই নাক শিটকেছিলেন। তবে সেটা বাড়তে দিলেন না নেহরা। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা জানিয়ে দিয়েছেন। আজ নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি ম্যাচটার পর আর ভারতের জার্সি গায়ে আর দেখা যাবে না আশিষ নেহরাকে।

মাঠ থেকে অবসরের সুযোগ দিতেই হয়তো নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে নেহরাকে ভারতীয় দলে বিবেচনা করেছিল ভারতীয় ক্রিকেট বোার্ড। ঘটনা যাই হোক না কেন, মূল কথা আজ ভারতীয় ক্রিকেটের এক লড়াকু সৈনিকের আন্তর্জাতিক অধ্যায় শেষ হচ্ছে। লড়াকু সৈনিক বলাই যায়। চোটে জর্জরিত পুরো ক্যারিয়ার। চোট যে কতবার মাঠের বাইরে ছিটকে দিয়েছে নেহরা নিজেও হয়তো সেই হিসেব রাখতে পারেননি!

উপমহাদেশের স্পিন প্রাধান্যতার বাঁধা তো আছেই। বিশেষ করে চোট জর্জরিত ক্যারিয়ারটাকে যেভাবে টেনে নিয়েছেন নেহরা সেটা অবাক করার মতোই। শুধু টেনে নিয়েছেন বললে ভুল হবে। ‘ভারতের পেসাররাও ভালো’ কপিল দেবের পর জহির খানের সাথে দীর্ঘদিন এই কথাটার প্রমাণ দিয়ে গেছেন নেহরা। সমসাময়িকরা যেখানে বিভিন্নভাবে নজড় কাড়ার চেষ্টা করেছেন, নেহরা সেই চিন্তা থেকে ছিলেন দশ ধাপ দূরে। সব সময়ই ‘কথা কম কাজ বেশি’ নীতিতে চলেছেন। ভারতীয় ক্রিকেটের আলোচনায় তার নাম নেই হয়তো এই কারণেই।

গত আইপিএলে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের হয়ে দুর্দান্ত বোলিং করেছিলেন। তারপরও নিজেকে আলোয় নিয়ে আসার ‘কৌশল’ অবলম্বন করেননি নেহরা। আইপিএলে এক সংবাদ সম্মেলনে  জানিয়েছিলেন, মোবাইল ব্যবহার করেন না নেহরা, ভাবা যায়! নেহরার ব্যক্তিত্বটাাই হয়তো এমন।

আজ সেই নেহরার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের ইতি ঘটছে। পুরো ক্যারিয়ারে যেভাবে চলেছেন, আজও হয়তো সেভাবে দুর্দান্ত কিছু করে পেছনের দরজা দিয়ে বাড়ি হাঁটা দিবেন নেহরা!  বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭টা ৩০ মিনিটে মাঠে গড়াবে ভারত-নিউজিল্যান্ডের প্রথম টি-টোয়েন্টি। উত্তরটা তখনই মিলবে।

১৯৯৯ সালে ভারতীয় দলে অভিষেক নেহরার। টেস্ট খেলেছেন ১৭টি, ওয়ানডে ১২০টি, টি-টোয়েন্টি ২৬টি। রঙিন পোশাকের ক্রিকেটেই বেশি সফল নেহরা। ১২০ ওয়ানডেতে নেহরার উইকেট ১৫৭। ২৬ টি-টোয়েন্টিতে উইকেট সংখ্যা ৩৪টি। ১৭ টেস্টের নেহরার উইকেট ৪৪টি।