রেকর্ডবুক ওলট পালট করে জিতল বাংলাদেশ

ঘরের মাঠে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৩-১ ব্যবধানে সিরিজ হেরে মালয়েশিয়ায় যুব এশিয়া কাপ খেলতে গিয়েছিল বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল। সেখানে গিয়ে নেপালের মতো দলের বিপক্ষে জিততে ঘাম ঝরাতে হয়েছে। খারাপ সময়টা আজ কি দারুণভাবেই না ছিটকে ফেলল অনূর্ধ্ব-১৯ দল। যুব এশিয়া কাপে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে স্বাগতিক মালয়েশিয়াকে ২৬২ রানে হারিয়েছেন সাইফ হাসানরা।

জয়ের ব্যবধান দেখেই হয়তো আন্দাজ করছেন, কতটা একতরফাভাবে জিতেছে বাংলাদেশ। সাইফরা বেশ কিছু রেকর্ডও গড়েছে আজ মালয়েশিয়ার বিপক্ষে।

প্রথমে ব্যাট করতে নেমে তৌহিদ হৃদয়ের দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি ও অধিনায়ক সাইফ হাসানের সেঞ্চুরিপ্রায় (৯০) ইনিংসের উপর ভর করে নির্ধারিত ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ৩৩৫ রানের সংগ্রহ দাঁড় করায় বাংলাদেশ। বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের পক্ষে যেটা সর্বোচ্চ সংগ্রহ। অতীতে এতো রান তুলতে পারেনি অনূর্ধ্ব-১৯ দল। আগের রেকর্ডটি ছিল ৩০৭ রানের। ২০১৫ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ৩০৭ রান তুলেছিল যুবারা।

ওই সংগ্রহটাকে ভেঙে দিতে হৃদয়-সাইফের ব্যাটিংই বড় ভুমিকা রেখেছে। তৃতীয় উইকেট জুটিতে ১৯২ রান যোগ করেছেন এই দুজন। এটাও রেকর্ড, অনূর্ধ্ব-১৯ দলের পক্ষে এটিই এখনো তৃতীয় উইকেটে সর্বোচ্চ রানের জুটি। আগের রেকর্ডটি ছিল পিনাক ঘোষ ও নাজমুল হোসেন শান্তর দখলে। ২০১৬ সালে চট্টগ্রামে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওই রেকর্ড গড়েছিলেন পিনাক-শান্ত।

তৌহিদ হৃদয় ৭টি চার ও ৪টি ছয়ে ১২০ রানের দুর্দান্ত ইনিংসটি খেলতে মোকাবিলা করেছেন ঠিক ১২০টি বল। সাইফ ১০৩ বল খেলে ৫টি চার ও ৩টি ছক্কার সাহায্যে ৯০ করে আউট হয়েছেন। শেষ দিকে ১৭ বল খেলে ৩৯ রান করে অপরাজিত ছিলেন আমিনুল ইসলাম। আমিনুলের ইনিংসটি ছিল ২টি চার ও ৪টি ছক্কায় সাজানো। এছাড়া আফিফ হোসেন ৯ বলে করেছেন ২১ রান।

মালয়েশিয়ার পক্ষে মোহাম্মদ হাফিজ ৭৮ রানে ৪ উইকেট দখল করেছেন। অপর দুই উইকেট তুলে নিয়েছেন সাঈদ আজিজ। তবে ওই দুই উইকেট দখল করতে রান দেওয়াতে প্রায় সেঞ্চুরিই করে ফেলেছেন সাঈদ! ১০ ওভারে ৯৬ রান দিয়েছেন তিনি।

পরে জবাব দিতে নেমে বাংলাদেশের স্পিন আক্রমণের বিপক্ষে স্রেফ ভেঙে পড়েছে মালয়েশিয়া। সাখাওয়াত হোসেন, আফিফ হোসেনরা শুরু থেকেই কাঁদিয়ে ছেড়েছেন মালয়েশিয়া ব্যাটসম্যানদের। স্বাগতিকদের পক্ষে দুই অঙ্কের কোঠা স্পর্শ করতে পেরেছেন কেবল অধিনায়ক ভিরানদ্বীপ সিং (৪৬)। মজার ব্যাপার হলো ওয়ানডে ম্যাচ হলেও এই ৪৬ রান করতে ১৩০ বল মোকাবিলা করেছেন ভিরানদ্বীপ।

ভিরানদ্বীপের সৌজন্যেই পুরো ৫০ ওভারই ব্যাটিং করেছে মালয়েশিয়া। কিন্তু ৫০ ওভার খেলেও মালয়েশিয়ার সংগ্রহ মাত্র ৭৩! সাখাওয়াত ১০ ওভার বোলিং করে মাত্র ১৮ রান দিয়ে ৩ উইকেট দখল করেছেন। আফিফ ১০ ওভারে ১৯ রান দিয়ে তুলে নিয়েছেন ২ উইকেট।

তবে বলতে হবে আসল বোলিং জাদু দেখিয়েছেন নাঈম হাসান। ১০ ওভারে মাত্র ৮ রান দিয়েছেন নাঈম। অধিনায়ক সাইফ ৯ ওভার বোলিং করে রান দিয়েছেন ৭। একটি উইকেটও দখল করেছেন সাইফ। বাংলাদেশের ২৬২ রানের এই জয়টা চলতি আসরের সবচেয়ে বড় ব্যবধানের জয়।