অসুস্থ প্রতিযোগিতায় ভেস্তে যাচ্ছে ক্রিকেট সূচি

এক সময় এফটিপি (ফিউচার ট্যুর প্ল্যান) তৈরি করতো ক্রিকেটের সর্বোচ্চ সংস্থা আইসিসি। এই প্ল্যান অনুযায়ীই বিশ্বজুড়ে দলগুলো দ্বিপক্ষীয় সিরিজ খেলতো। কিন্তু এখন পরিস্থিতি বদলে গেছে। এফটিপির বাইরেও দলগুলো নিজস্ব উদ্যোগে সিরিজ আয়োজন করতে পারে। যেমন আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলার সুযোগ নিশ্চিত করার জন্য ত্রিদেশীয় সিরিজ আয়োজন করেছে জিম্বাবুয়ে। এই সিরিজের ফলাফল প্রভাব ফেলতে বাংলাদেশের সম্ভাবনা। অথচ আইসিসির নির্ধারিত এফটিপি থাকলে এই সমস্যা হতো না। দলগুলোর মধ্যে এই যে জোর করে সিরিজ জয়ের প্রতিযোগিতা, এটাকে ঠিক সুস্থ প্রতিযোগিতা বলা যায় না বলে মন্তব্য করেছেন বিসিবির মিডিয়া কমিটির প্রধান জালাল ইউনুস।

সোমবার দক্ষিণ আফ্রিকার সাথে হোম সিরিজের টাইটেল স্পন্সরশিপ ঘোষণার সময় জালাল ইউনুসকে ওই জিম্বাবুয়ের সিরিজটি নিয়ে প্রশ্ন করা হয়। জবাবে তিনি জানান, সিরিজটি নিয়ে বাংলাদেশের দুশ্চিন্তা নেই। বাংলাদেশ যদি দক্ষিণ আফ্রিকাকে অন্তত একটি ম্যাচে হারাতে পারে, তবে ওই সিরিজের ফলাফল বাংলাদেশের সম্ভাবনায় কোনো প্রভাব ফেলবে না। জালাল ইউনুস তাই খুব একটা বিচলিত নন ওই সিরিজ নিয়ে। তবে দলগুলোর মধ্যে প্রয়োজন অনুযায়ী সিরিজ আয়োজনের এই প্রতিযোগিতাকে তার কাছে অসুস্থ হুড়োহুড়ি বলে মনে হয়।

তিনি বলেন, 'আইসিসির এফটিপি-ই ভালো ছিলো। আইসিসির এফটিপি না করার সিদ্ধান্তের মাধ্যমে দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমে সিরিজ আয়োজনের সুযোগ তৈরি হয়েছে। এর মাধ্যমে সিস্টেম নষ্ট হয়ে গেছে। অনেক অনৈতিক সুযোগের সৃষ্টি হয়েছে। আমি এর সমর্থন করি না।'

জিম্বাবুয়েকে সামনে রেখে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও পাকিস্তান যা করছে, তা অন্যায় নয়। কারণ আইন তাদের জন্য সুযোগ রেখেছে। এ কারণে জালাল ইউনুস তাদের আইসিসি ট্রফি খেলার প্রচেষ্টাকে অন্যায় বা ষড়যন্ত্র বলে মনে করেন না। এখানে তিনি সমস্যা পান আইনে এবং সিস্টেমে। সিস্টেমই তাদেরকে প্ররোচিত করছে সিরিজ আয়োজন করে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে সুযোগ তৈরির।

পূর্বানির্ধারিত সূচি অনুযায়ি সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ওয়েস্ট ইন্ডিজের কোনো খেলা নেই। পাকিস্তানের আছে পাঁচটি ওয়ানডে। শ্রীলঙ্কার সাথে পাঁচ ওয়ানডের সিরিজটি পাকিস্তান যদি হেরে যায়, তবে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলার শেষ সুযোগটাও হারাবে তারা। আর জিতলে বাদ পড়ে যাবে ক্যারিবীয়রা। এই ছিলো হিসেব। এই হিসেবে বাংলাদেশের কোনো সমস্যা হওয়ার কথা ছিলো না। ভারতকে সিরিজ হারিয়ে বাংলাদেশ এখন র‍্য্যাঙ্কিংয়ে সাত নম্বরে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলবে আটদল। হিসেবটা বদলে যেতে পারে ত্রিদেশীয় সিরিজটির কারণে। বাংলাদেশের যেহেতু দক্ষিণ আফ্রিকার সাথে তিন ম্যাচের সিরিজ ছাড়া আর কোনো খেলা সেপ্টেম্বরের মধ্যে নেই, সেহেতু প্রোটিয়াদের সাথে কোনো ম্যাচ জিততে না পারলে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি নাও খেলা হতে পার মাশরাফিদের। এই পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য আইনের 'লুপহোলস'কেই দায়ি করছেন জালাল ইউনুস।

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি নিয়ে বাংলাদেশের সব দুশ্চিন্তা দূর হয়ে যেতে পারে আগামী মাসের ১৫ তারিখের মধ্যে। এ সময়ে প্রোটিয়াদের বিপক্ষে তিনটি ওয়ানডে খেলবে বাংলাদেশ। এর মধ্যে একটি ম্যাচ জিতলেই ত্রিদেশীয় সিরিজের ফলাফল বাংলাদেশের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলার সম্ভাবনায় কোনো প্রভাব ফেলতে পারবে না। আপাতত বাংলাদেশ তাকিয়ে আছে সেদিকেই।

আপনি আরো পড়তে পারেন

দ্বিতীয় সারির দলই পাঠাচ্ছে ভারত

জিম্বাবুয়ে সফরে শক্তিশালী দলই পাঠাতে পারে ভারত

সমর্থকদের আচরণে ক্ষুব্ধ মাশরাফি