ভিলিয়ার্সকে আউট করতে পারলেই জিতবে ভারত?

নতুন বছরের শুরুতেই ক্রিকেটপ্রেমিদের জন্য অপেক্ষা করছে ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার ধ্রুপদি ক্রিকেটের লড়াই। আইসিসির সেরা দলগুলোর তালিকায় এ দুই দলের অবস্থান থাকে উপরের দিকেই। সুতরাং তাদের লড়াইও যে ‘বড়দের’ লড়াই হবে, সেটা নিশ্চয় বলে দেয়ার দরকার নেই। এই লড়াইয়ের মঞ্চে দুই দলের দুই ভরসার নাম এবি ডি ভিলিয়ার্স ও বিরাট কোহলি। এ দুজনের ভালো কিছু করা মানেই দলেরও ভালো কিছু করা। ভারতীয় সমর্থকদের বড় একটা অংশ মনে করে ভিলিয়ার্সকে আউট করতে পারলেই ভারতের জয় নিশ্চিত! কিন্তু আসলেই কি তাই?

বিরাট কোহলি ও ডি ভিলিয়ার্স আইপিএলে খেলেন একই দলে। তাদের হাত ধরে দারুণ সব কীর্তি আছে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর। কিন্তু এবার আর সতীর্থ নন এ দুজন। বরং নিজ দেশের পতাকা উঁচুতে তুলে ধরতে এবার তারা শত্রু।

শত্রুতার লড়াইয়ে অবশ্য শুধু তারাই নন, মাঠে থাকছে তাদের পুরো দল। সুতরাং ডি ভিলিয়ার্সকে আউট করতে পারলেই ভারতের জয়— এ মতের পক্ষে নন স্বয়ং বিরাট কোহলি। এ প্রসঙ্গে দক্ষিণ আফ্রিকায় গিয়ে সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে কথাও বলেছেন ভারতীয় অধিনায়ক।

কোহলি বলেন, ‘এই সিরিজে কিন্তু শুধুমাত্র দুজন খেলোয়াড় খেলছি না! ডি ভিলিয়ার্স আমার কাছের বন্ধু। আমরা একসঙ্গে অনেক ম্যাচ খেলেছি। তার খেলার ধরন আমার খুবই পছন্দের। ব্যক্তি ভিলিয়ার্সও আমার কাছের। কিন্তু যখন দেশের হয়ে আমরা পরস্পরের প্রতিপক্ষ, তখন চেষ্টা থাকে দেশের হয়ে দারুণ কিছু করার।’

কোহলি যতোই দারুণ কিছুর কথা বলুন না কেনো, দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে ভারতের দারুণ কিছু সহজ কথা নয়। এশিয়ান কোনো দেশই আসলে দক্ষিণ আফ্রিকায় গিয়ে ভালো স্মৃতি নিয়ে ফিরতে পারে না। সর্বশেষ বাংলাদেশ দলও সেখান থেকে নাকানিচুবানি খেয়ে ফিরেছে।

পেস সহায়ক উইকেটে এশীয় ব্যাটসম্যানদের দুর্বলতা অনেকটা চিরায়ত ব্যাপার। অন্য দিকে রামধনুর দেশ দক্ষিণ আফ্রিকা আবার পেসারদের খুবই সহায়ক। ফলে দক্ষিণ আফ্রিকান পেসাররা এশীয় ব্যাটসম্যানদের সামনে আবির্ভূত হন মূর্তিমান আতঙ্ক নিয়ে। ব্যাপারটি ভারতের ক্ষেত্রেও ব্যতিক্রম নয়।

সুতরাং ডি ভিলিয়ার্সকে আউট করলেও জেতা যাবে, ভারতের এই চিন্তা পরিহার করাই ভালো। তাদেরকে বরং খেলতে হবে পুরো দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষেই। যেখানে আছেন ডেল স্টেইনের মতো দুর্দান্ত সব পেসার। দীর্ঘ ইনজুরি কাটিয়ে এই সিরিজে স্টেইন নিজেও ফিরছেন। কোহলিদের তাই আতঙ্কিতই থাকার কথা।

দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে ভারত এখন পর্যন্ত মোট ১৭টি টেস্ট খেলেছে। এর মধ্যে আটটিই হেরেছে তারা। জিতেছে মাত্র দুটি। বাকি ম্যাচগুলো শেষ হয়ে ড্রয়ে। এই পরিসংখ্যানই বলে দিচ্ছে রামধনুর দেশে ভারতীয়রা ঠিক কতোটা অসহায়। এবার কি সেই অসহায়ত্বের কোনো রকম সমাপ্তির আশা করা যায়?