তামিম-ইমরুল, চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম সেশনের দুই আফসোস

বাংলাদেশের ইনিংসের দ্বিতীয় ওভার। স্ট্রাইকে ইমরুল কায়েস। ননস্ট্রাইকে তামিম ইকবাল। বোলিংয়ে লাহিরু কুমারা। প্রথম বলে এক রান নিলেন ইমরুল। স্ট্রাইকে গেলেন তামিম। মেরে দিলেন টানা তিন বলে তিন চার। ওভার শেষে যোগ হলো ১৫ রান।

চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম সেশনের ওই একটা ওভার হয়ে উঠতে পারতো পুরো টেস্টের ইঙ্গিত। কিন্তু আদতে যে তা হওয়ার সুযোগ নেই, সেটা প্রমাণ হতে লেগেছে আরো ১৪ ওভার। যখন ইনিংসের ষষ্টদশ ওভারে দিলরুয়ান পেরেরার চোখ ধাঁধিয়ে এক ডেলিভারিতে বোল্ড হয়ে ফেরেন তামিম ইকবাল।

পেরেরার বলটা পড়েছিলো তামিমের অফস্টাম্পে। পা এগিয়ে এনে রক্ষণাত্মক শট খেলতে যান বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। কিন্তু বলটা পুরোপুরি মিস করেন তিনি। এমন কি তার প্যাডেও লাগেনি পেরেরার এই ডেলিভারি। ব্যাট ও প্যাডের ফাঁক গলে তা ভেঙে দেয় তামিমের স্টাম্প। এরপর লাঞ্চ বিরতি নামিয়ে দেয়া ইমরুলের আউটও ছিলো চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম সেশনে বাংলাদেশের আরেক আফসোস। 

চট্টগ্রাম টেস্ট যে হয়ে উঠবে স্পিনারদের বিপক্ষে ব্যাটসম্যানদের যুদ্ধক্ষেত্রে, তা আন্দাজ করা যাচ্ছিলো আগে থেকেই। ১৩ ওভারের মধ্যে দিলরুয়ান পেরেরা ও রঙ্গনা হেরাথের হাতে বল তুলে দিয়ে সেটা প্রমাণ করে দেন টস হেরে বোলিংয়ে নামা শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক দিনেশ চান্দিমাল।

১৬তম ওভারে আউট হওয়ার আগে তামিম ইকবাল অবশ্য খেলছিলেন নিজের মতোই। শুরুর দিকে লাহিরু কুমারার এক ওভারে তিন চার মারার মতোই আগ্রাসী ছিলেন তিনি। এ দিন মাত্র ৪৬ বলে তিনি তুলে নেন নিজের ২৫তম টেস্ট হাফ সেঞ্চুরি। এর মধ্যেই ছয়টি চার ও একটি ছয় মারেন তামিম।

কিন্তু এই রকম দুর্দান্ত শুরুটা ধরে রাখত ব্যর্থ হন তিনি। সেটা না হলে লাঞ্চের আগে বাংলাদেশের রান বেড়ে যেতে পারতো আরো। তামিমের আউটটাই অবশ্য প্রথম সেশনে বাংলাদেশের একমাত্র আফসোস নয়। লাঞ্চ বিরতির ঠিক আগের ওভারে ইমরুল আউটটা বরং তার চেয়েও বেশি আফসোসের। চায়নাম্যান লক্ষণ সান্দাকানের ডেলিভারিটি ভুল লাইনে খেলতে গিয়ে এলবিডব্লিউর শিকার হন ইমরুল। যা বাংলাদেশের প্রথম সেশনটা একটুর জন্য সন্তোষজনক পর্যায়ে নিয়ে যেতে দেয়নি।

ইমরুল আউট হন ২৮তম ওভারের চতুর্থ বলে। তার আউটের সঙ্গে সঙ্গে লাঞ্চ বিরতির ঘোষণা করেন আম্পায়ার। প্রথম সেশনে বাংলাদেশের পতন হওয়া দুই উইকেটের উভয়টি শিকার করেছেন দুই স্পিনার। মানে চট্টগাম টেস্ট যে স্পিনারদের দাপটের মঞ্চ হয়ে উঠছে, সেটা প্রথম সেশন শেষে একেবারে স্পষ্টভাবে প্রমাণিত। বাকিটা সময় কেমন যাবে, সেটা মোটামুটি আন্দাজ করাই যায়।

প্রথম সেশন শেষে: বাংলাদেশ ১২০/২, (২৭ ওভার ৪ বল)। তামিম ৫২, ইমরুল ৪০ ও মুমিনুল ২৬*। একটি করে উইকেট দিলরুয়ান পেরেরা ও লক্ষণ সান্দাকানের।