আরো হতাশায় শুরু তৃতীয় দিন

মোস্তাফিজুর রহমানের একটা বল কুসাল মেন্ডিসের ব্যাট ছুঁয়ে গেলো স্লিপের দিকে। দুই দিক থেকে বল লক্ষ্য করে ডাইভ দিলেন স্লিপে দাঁড়ানো বাংলাদেশের দুই ফিল্ডার। কিন্তু বলের নাগাল পেলেন না কেউই। তাদের ফাঁকি দিয়ে বল চলে গেলো সীমানার বাইরে। মোস্তাফিজ দাঁড়িয়ে গেলেন মাথায় হাত দিয়ে!

হতাশার এমন দৃশ্য দিয়েই শুরু হয়েছে বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কার তৃতীয় দিনের খেলা। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে এ দিন সকাল থেকেই হাজার হয়েছে হাজার দুয়েক দর্শক। ছুটির দিন বলেই হয়তো মাঠে এসে মাহমুদুল্লাহদের হয়ে গর্জন করতে এসেছেন তারা। কিন্তু গর্জনের উপলক্ষ্য মিলছে কই!

দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে শ্রীলঙ্কার রান ছিলো ১৮৭, এক উইকেট হারিয়ে। সেঞ্চুরি করে ব্যাটিং করছিলেন ধনঞ্জয়া ডি সিলভা। সেঞ্চুরির কাছাকাছি ছিলেন কুসাল মেন্ডিস। তৃতীয় দিন সকালেই সেঞ্চুরি ছুঁয়ে ফেলেন কুসাল। তাদের রানেরও চাকাও ছুটতে থাকে পাগলা ঘোড়ার মতো।

শ্রীলঙ্কার রানের চাকা নিশ্চিত করে বাংলাদেশের হতাশা, দ্বিতীয় দিন থেকে যা গড়ায় তৃতীয় দিনেও। তৃতীয় দিনের প্রথম পানি পানের বিরতির সময় শ্রীলঙ্কার রান হয়ে যায় ২৪৫। উইকেট ওই একটিই।

চট্টগ্রামের উইকেট হতে যাচ্ছে স্পিনারদের স্বর্গরাজ্য— এমন ধারণা থেকে দুই দলই মাঠে নেমেছে তিনজন করে বিশেষজ্ঞ স্পিনার নিয়ে। কিন্তু স্পিনারদের উল্লাসের দৃশ্য দেখা যাচ্ছেই না প্রায়। উল্টো বরং ব্যাটসম্যানরা করে যাচ্ছেন রানের পর রান।

ম্যাচের প্রথম দিনে উইকেট থেকে স্পিনাররা বলতে গেলে পাননি কিছুই। দ্বিতীয় দিনে অবশ্য ওই রকম হতাশা ভর করেনি। দিন শেষের সংবাদ সম্মেলনে রঙ্গনা হেরাথই যেমন বলে গেছেন, কিছুটা স্পিন তিনি পাচ্ছেন। তৃতীয় দিনে স্পিনাররা আরো সহায়তা পাবেন বলেও প্রত্যাশার কথা শুনিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু আদতে তা হচ্ছে না।

মাহমুদুল্লাহ দিন শুরু করেন মোস্তাফিজের হাতে বল তুলে দিয়ে। অন্য প্রান্তে ছিলেন তাইজুল ইসলাম। পরে মোস্তাফিজকে সরিয়ে আনেন সানজামুলকে। কিন্তু শ্রীলঙ্কার দ্বিতীয় উইকেট জুটি ভাঙার কাজটা করতে পারছেন না কেউই। দ্বিতীয় দিনের ক্যাচ মিসের মাশুল তৃতীয় দিনেও দিতে হচ্ছে বাংলাদেশকে।

দিনের শুরুতে মোস্তাফিজের বলে ক্যাচ ছাড়ার পর যে চেনা হতাশা হাজির হলো জহুর আহমেদে, তা আরো কতবার হবে কে জানে! ৫১৩ রানের প্রথম ইনিংস-পুঁজি পেয়ে বাংলাদেশ দলের স্বস্তি ছিলো, শ্রীলঙ্কার ইনিংসের দ্বিতীয় জুটিতেই তা হাওয়া হয়ে গেছে কর্পুরের মতো। এই টেস্টের রহস্যময়ী উইকেট শেষ পর্যন্ত কী ফল দিবে, তা আন্দাজ করা যাচ্ছে না কিছুইতেই!