গণতান্ত্রিক অধিকার না থাকলে নির্বাচন হবে কীভাবে?

বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন,আজ বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক পরিবেশ নেই, গণতান্ত্রিক অধিকার নেই। বিএনপি সবচেয়ে বড় দল ও সবচেয়ে বেশি সময় ক্ষমতায় ছিল। অথচ বিএনপির এখন কথা বলার অধিকার নেই। আর গণতান্ত্রিক অধিকার না থাকলে নির্বাচন হবে কীভাবে?

ক্ষমতাসীন দল জনগণের অধিকার হরণ করছে উল্লেখ করে খালেদা জিয়া বলেন, নতুন কালাকানুন করা হচ্ছে যাতে সাংবাদিক ভাইয়েরাও সত্য কথা বলতে না পারেন। সত্য কথা তাদের (আওয়ামী লীগের) সহ্য হয় না।

শনিবার রাজধানীর লা মেরিডিয়েন হোটেলে জাতীয় নির্বাহী কমিটির সভায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এসব কথা বলেন। খালেদা জিয়ার সভাপতিত্বে ওই হোটেলের ১৪ তলার গ্র্যান্ড বল রুমের এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।

খালেদা জিয়া বলেন, সাড়ে ১৮ লাখ মানুষকে আসামি করা হয়েছে। মিথ্যা ও বানোয়াট মামলা দিয়ে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের হয়রানি করা হচ্ছে। যে লোক দেশেও থাকেনি তাকেও মামলায় জড়ানো হচ্ছে। এভাবে তারা জোর করে ক্ষমতায় থাকতে চায়।

তিনি বলেন, গুম-খুন এখন নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। গুম-খুন এখন প্রতিনিয়ত হচ্ছে। দেশে এখন ভয়ানক পরিস্থিতির সৃষ্টি করা হচ্ছে। সব জায়গায় এখন আতংক বিরাজ করছে।

বিএনপি চেয়ারপার্সন বলেন, পুলিশকে এখন ক্ষমতাসীনরা দলীয় স্বার্থে ব্যবহার করছে। তাদের কথামতো না চললে পুলিশকেও নানা ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। পুলিশ বাধ্য হয়ে এখন তাদের কথা শুনছে।

খালেদা জিয়া বলেন, বিএনপির সঙ্গে পুলিশ আছে, প্রশাসন আছে, জনগণ আছে। দেশের মানুষ আছে, প্রবাসীরা আছে। এজন্য বিএনপিকে কীভাবে নির্বাচনের বাইরে রাখা যায় তার ষড়যন্ত্র। অপরাধই নাই তবে বিচার হবে কীভাবে। তারা গায়ের জোরে বিচার করতে চায়।

খালেদা জিয়া বলেন, ‘নির্বাচন যদি ডিসেম্বরে হয় তারপরও তো অনেক সময় বাকি। আওয়ামী লীগের এত আগে কেন নির্বাচনী প্রচারণার প্রয়োজন হল? নৌকা কি এভাবেই ডুবে গেছে যে, তাদের টেনে তুলতে হবে? এখনই নির্বাচনী প্রচারণায় কেন নামতে হবে? নিম্ন আদালত এখন সরকারের কব্জায়। সঠিক রায় দেয়ার ক্ষমতা তাদের নেই। তারেক রহমানের যখন সঠিক রায় দেয়া হয় তখন জজ সাহেবকে দেশ থেকে বাইরে চলে যেতে হয়েছে। এখন তারা হুকুমের নির্দেশ মানতে বাধ্য।’

আজ শনিবার বেলা ১১টা ৫ মিনিটে লা মেরিডিয়েন হোটেলে খালেদা জিয়া পৌঁছালে দলীয় নেতারা তাঁকে স্বাগত জানান।

পরে কোরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে নির্বাহী কমিটির সভা শুরু হয়। এরপর শোক প্রস্তাব উপস্থাপন করেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন। শোক প্রস্তাব উপস্থাপন শেষে এক মিনিট দাঁড়িয়ে নিরবতা পালন করা হয়। এরপরই লন্ডনে নির্বাসনে থাকা দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের রেকর্ড করা বক্তব্য প্রচার করা হয়। পরে স্বাগত বক্তব্য দেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘স্বাধীনতার পর দেশ এখন বড় সংকটে রয়েছে। মানুষের এখন মৌলিক অধিকার নেই। সরকারের হাত এখন প্রতিবাদী মানুষের হাতের রক্তে রঞ্জিত।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘প্রহসন ও ভোটারবিহীন নির্বাচনের মাধ্যমে এই সরকার ক্ষমতায় আছে। নিত্যপণের দাম লাগামহীন। সরকার লুটপাটে ব্যস্ত। বিএনপি দানবীয় সরকারের মারমুখী আক্রমণের শিকার।’