কেমন হবে সাকিবহীন টি-টোয়েন্টির বাংলাদেশ?

ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসেবে ইয়ন্ডার মিউজিক অ্যাপের উদ্বোধন করতে গিয়ে সাকিব আল হাসান আজ বললেন, ‘যদি বুঝি টি-টোয়েন্টি খেলার অবস্থায় আছি তাহলে অবশ্যই খেলব।’ এটাতো জানা কথাই। কিন্তু অজানা কথা হলো, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের সময় সাকিব খেলার অবস্থায় থাকবেন তো?

ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে আঙুলে চোট পেয়েছেন সাকিব। আঙুলে চিড় ধরাতে সেলাই দিতে হয়েছে। যাতে ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনাল, টেস্ট সিরিজ খেলতে পারেননি। বিসিবির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে সাকিবকে নিয়ে কোনো ধরনের ঝুঁকি নেয়া হবে না। অর্থাৎ পুরো ফিট হলেই কেবল তাকে খেলানো হবে।

১৫ ফেব্রুয়ারির আগে সাকিব পুরো ফিট হয়ে উঠবেন কিনা তাতে বেশ বড় একটা প্রশ্নবোধক চিহ্ন। ১৫ তারিখ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুই টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথমটি খেলতে নামবে বাংলাদেশ। শঙ্কা সত্যি করে সাকিব যদি আসলেই না খেলতে পারেন টি-টোয়েন্টিতে, তবে?

বাংলাদেশ দলের সেরা পারফরমারের নাম যে সাকিব আল হাসান সেটা নতুন করে না বললেও চলবে। বোলিং, ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি ফিল্ডিংয়েও দলের অন্যতম সেরা। তাছাড়া বিশ্বজুড়ে টি-টোয়েন্টি লিগ খেলে অভিজ্ঞতায় ভরপুর সাকিব। আবার কিছুদিন আগে অধিনায়কত্ব দেয়া হয়েছে তাকে। এমন একজন যদি না খেলতে পারে তাহলে তার অনুপস্থিতিটা পূরণ করবে কে?

টেস্ট সিরিজে সাকিবের বদলে দলে বাড়তি দুই স্পিনার ডাকা হয়েছে। কিন্তু চট্টগ্রাম টেস্টে বাড়তি স্পিনার খেলিয়ে কোনো ফয়দা হয়নি। শ্রীলঙ্কান ব্যাটসম্যানরা যখন রানের জোয়ারে ভাসছিলেন সাকিবের অভিজ্ঞতা তখন খুব করে মিস করেছে বাংলাদেশ। টি-টোয়েন্টিতে তাকে আরও বেশি মিস করবে হয়তো দল।

সাকিব না থাকলে অধিনায়কত্ব নিয়েও ভাবনার আছে। সাকিবের অনুপস্থিতিতে টেস্টে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিয়েছেন সহ-অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের সহ-অধিনায়ক আবার তামিম ইকবাল। ফলে সাকিব না থাকলে হিসেব মতো তামিমই নেতৃত্ব দিবেন বাংলাদেশকে। অভিজ্ঞ ওপেনার কেমন দল পরিচালনা করবেন বা কেমন পরিকল্পনা করবেন সেটাও একটা ব্যাপার।

এদিকে, টি-টোয়েন্টি সিরিজের আগে কারো কারো মনে মাশরাফি বিন মর্তুজা নামটাও ঘুরছে! ত্রিদেশীয় সিরিজ শেষে মাশরাফির ‘ফেরা’ নিয়ে বেশ শোরগোল হয়ে গেল। ইনজুরি প্রবণতার কারণে অনেকদিন যাবত নিজে থেকেই টেস্ট খেলছেন না নড়াইল এক্সপ্রেস। গত বছর শ্রীলঙ্কা সিরিজ শেষে ‘বিতর্কিত’ভাবে টি-টোয়েন্টি থেকে অবসরই নিয়ে ফেলেছিলেন মাশরাফি।

অবসরের কারণ হিসেবে ‘নতুনদের জায়গা ছেড়ে দেওয়ার’ কথা বললেও ক্রিকেটপাড়ায় কান পাতলেই শোনা যায় অবসর নিতে বাধ্য করা হয়েছিল মাশরাফিকে। সাবেক কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহের পছন্দ হচ্ছিল না মাশরাফিকে। কোচের সঙ্গে তাল মিলান বিসিবির একটা অংশ, যাতে অনেকটা বাধ্য হয়েই টি-টোয়েন্টি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিতে হয় বাংলাদেশের সবচেয়ে সফল অধিনায়ককে। কদিন আগে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন জানিয়েছেন, টি-টোয়েন্টিতে মাশরাফিকে পেতে চায় বাংলাদেশ।

ত্রিদেশীয় সিরিজ শেষে এক প্রশ্নের জবাবে মাশরাফি বলেছিলেন, সাকিবের অনুপস্থিতিতে দলের প্রয়োজনে ডাকলে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে থাকার কথা ভেবে দেখবেন তিনি। কেউ সেটাকে মাশরাফির টেস্টে ফেরার ইচ্ছা হিসেবে ধরে নিয়ে বিসিবি প্রধান নাজমুল হাসান পাপনকে জিজ্ঞেসাও করে বসেছিলেন।

কিন্তু ওই প্রশ্নে পাপন জানিয়ে বলেছিলেন, ‘টেস্ট কঠিন, তবে টি-টোয়েন্টিতে তাকে দরকার। মাশরাফি চাইলে এখনই টি-টোয়েন্টিতে ফেরানো হবে তাকে।’ এমন কথায় হয়তো ফিরবেন না গত বছর টি-টোয়েন্টি থেকে অপ্রত্যাশিতভাবে অবসর নেয়া মাশরাফি। দলের বিপদের কথা বললে হয়তো রাজি হয়েও যেতে পারেন ম্যাশ। তবে কি হচ্ছে তার চূড়ান্ত উত্তর মিলবে ১৫ ফেব্রুয়ারির আগেই।