বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সাজা হওয়ার পর তার ছেলে ও সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এর আগে রায়কে সামনে রেখে সম্প্রতি বিএনপির স্থায়ী কমিটি ও জাতীয় নির্বাহী কমিটির বৈঠকে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল বলে গণমাধ্যমেও উঠে এসেছিল।

বৃহস্পতিবার দুপুরে দুর্নীতির মামলায় খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ডের রায় দেয় ঢাকার একটি বিশেষ আদালত। এরপর রাতে নয়াপল্টনে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে তারেক রহমানকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান উল্লেখ করে একটি বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়।

পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগারে থাকা খালেদা জিয়ার পদে যাকে স্থলাভিষিক্ত করা হয়েছে, লন্ডনে অবস্থানরত সেই তারেক রহমানও জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় ১০ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। এছাড়া অন্য আসামিদেরও ১০ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়।

‘বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমানের বিবৃতি’ নামে ওই বিজ্ঞপ্তি রাতে পাঠান বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। পরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, এখন থেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হচ্ছেন তারেক রহমান।

১৯৮৪ সালে সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানপত্নী খালেদা জিয়া দলটির চেয়ারপারসনের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এরপর এবারই প্রথম তিনি সাজা নিয়ে জেলে গেলে দলেও প্রথমবারের মতো ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হন তারেক রহমান।

উল্লেখ্য, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় তারেক রহমানকে কারাদণ্ডের সাথে অন্য আসামিদের মতো ২ কোটি ১০ লাখ টাকার অর্থ দণ্ড দিয়েছে আদালত। এ মামলায় তারেকের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি মায়ের সহায়তায় অস্তিত্ববিহীন ট্রাস্ট গঠন করে প্রধানমন্ত্রীর এতিম তহবিলের একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা আত্মসাৎ করেন, যা দণ্ডবিধির ৪০৯ ধারার অপরাধ।

এর আগে ২০১৬ সালের ২১ জুলাই মানি লন্ডারিংয়ের এক মামলায় বিচারিক আদালতের খালাসের রায় বাতিল করে তারেক রহমানকে সাত বছর কারাদণ্ড এবং ২০ কোটি টাকা জরিমানার রায় দেন হাইকোর্ট।

প্রসঙ্গত, সেনা সমর্থত ‘এক-এগারোর’ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জরুরি অবস্থার সময় ২০০৭ সালের ৩ সেপ্টেম্বর গ্রেপ্তার হন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। জাতীয় সংসদ ভবনের কাছে একটি বাড়িতে তাকে এক বছরের বেশি সময় বন্দী রাখা হয়। তখন পাশের একটি বাড়িতে বন্দী ছিলেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা।

ওই সময় খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে বিএনপির সংস্কারপন্থী একটি অংশ দলের স্থায়ী কমিটি বৈঠক ডেকে সিনিয়র সদস্য সাইফুর রহমানকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করার ঘোষণা দেয়। পরে তাদের ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে আখ্যা দিয়ে অন্য সদস্যরা মুখ ফিরিয়ে নিলে সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়।

এর আগে এরশাদবিরোধী আন্দোলনের সময় বেগম খালেদা জিয়া তিনবার গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। তবে সেসময় তাকে কারাগারে না নিয়ে ঢাকা সেনানিবাসের বাড়িটিতে গৃহবন্দি রাখা হয়। ওই সময়ও দলের চেয়ারপারসনের দায়িত্বে খালেদা জিয়াই ছিলেন।