বাম চোখ খুলতে পারছেন না ঢাবির সেই শিক্ষার্থী!

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সলিমুল্লাহ মুসলিম হলে গত মঙ্গলবার রাতে (৬ ফেব্রুয়ারি) নির্যাতনের শিকার এহসান রফিকের চোখ নিয়ে শঙ্কায় আছেন তার বাবা রফিকুল ইসলাম। হল শাখা ছাত্রলীগের এক নেতাকে ক্যালকুলেটর ধার দেয়ার পর তা ফেরত চাইতে গেলে তিন দফায় মারধর করা করা হয় এহসানকে।

মারধর শেষে পরদিন দুপুর পর্যন্ত কোন ধরনের খাবার না দিয়ে হল ছাত্রলীগের সভাপতি তাহসান আহমেদ রাসেলের কক্ষে তাকে আটকে রাখা হয়। সেখান থেকে কৌশলে পালিয়ে আসার পর হল প্রশাসনের সহযোগিতায় এহসানকে হাসপাতালে পাঠানো হয়। মারধরের সময় এহসানের চোখে উপর্যপুরি আঘাত করায় তার বাম চোখ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, এহসানের কর্ণিয়ায় বড় ধরণের আঘাত লেগেছে।

এদিকে ঘটনার চারদিনেও এহসানের চোখের অবস্থার খুব একটা উন্নতি হয়নি। দুর্যোগ বিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হওয়া এহসানের বাবা রফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, ‘ছেলের চোখ নিয়ে অনেক বিপদে আছি। এখনও সে বাম চোখ খুলতে পারছে না।’

ছেলেকে নিয়ে এখন রাজধানীতে এক আত্মীয়ের বাসায় অবস্থান করার কথা জানিয়ে রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘কয়েকজন চিকিৎসক পরিবর্তন করেও এখনও তেমন কোনো উন্নতি হয়নি। ছেলের চিকিৎসা দেশে করাতে পারবো নাকি দেশের বাইরে নিতে হবে তা নিয়ে বেশ চিন্তায় আছি।’

আহত এহসানের বাবা বৈশাখী টেলিভিশনের ঝিনাইদহ জেলা প্রতিনিধি রফিকুল ইসলাম আরও বলেন, ‘চোখের সমস্যা এখনও ভাল তো হয়ইনি বরং শুক্রবার সকালে তার নাক দিয়ে রক্ত বের হয়েছে। থেমে থেমে বমি করেছে বেশ কয়েকবার। যত দিন যাচ্ছে ততই তার অবস্থা আরও খারাপ হচ্ছে।

ঘটনার পরপর সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের প্রাধ্যক্ষ ড. মাহবুবুল আলম জোয়ার্দার এক সাক্ষাৎকারে এ প্রতিবেদকে জানিয়েছেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের ছাড় দেয়া হবে না। সিনিয়র হাউজ টিউটর সাব্বির আহমেদকে প্রধান করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তাদেরকে সাত দিনের মধ্যে রিপোর্ট দিতে হয়েছে। তদন্তে দোষীদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

মারধরের সঙ্গে বেশ কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতা জড়িত থাকলেও ঘটনার দুইদিন পর ৮ ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রীয় কমিটি মাত্র তিন ছাত্রলীগ নেতাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করে। এরা হলেন এসএম হল ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক ওমর ফারুক, উপ-প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক মেহেদী হাসান হিমেল এবং সহ সম্পাদক, রুহুল আমিন। বহিষ্কৃত তিনজনই সলিমুল্লাহ মুসলিম হল ছাত্রলীগের সভাপতি তাহসান আহমেদ রাসেলের অনুসারী।