ইতিবাচক থাকতে গিয়েই এমন ব্যাটিং ধস!

হঠাৎ পাওয়া অধিনায়কত্ব তাকে দিয়েছিলো অন্য রকম এক আনন্দ। ঘরোয়া পর্যায়ে অধিনায়কত্বের অভিজ্ঞতা ছিলো বলে কাজটা করতে খুব একটা সমস্যা হয়নি তার। কিন্তু দলীয় ব্যর্থতার কারণে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের অধিনায়কত্ব সেভাবে নজরে পড়েনি। দলের ব্যর্থতার কারণে অধিনায়কত্ব উপভোগ বাদ দিয়ে তাকে কথা বলতে হলো ব্যর্থতা নিয়ে।

শনিবার ঢাকা টেস্টে ২১৫ রানের বিশাল ব্যবধানে হারের পর সংবাদ মাধ্যমের সামনে এসে মাহমুদুল্লাহ বললেন, স্পিন সহায়ক উইকেটে জেতার আগ্রহ প্রকাশ করতে গিয়ে ইতিবাচক থেকেছেন তারা। এর মধ্যেই ঘটে গেছে ব্যাটিং ধস।

চট্টগ্রামের উইকেট বোলারদের জন্য মৃত্যুকূপ হলেও ঢাকা ছিলো তাদের উল্লাস-মঞ্চ। এখানে ব্যাটসম্যানরা একের পর ভুল করে গেছেন। এমন উইকেটে শেষ ইনিংসে ৩৩৯ রানের লক্ষ্য পূরণ করা প্রায় অসম্ভব। কিন্তু চেষ্টাটা তো থাকতে হবে! সেই চেষ্টাটাই অনুপস্থিত ছিলো ১২৩ রানে গুটিয়ে যাওয়া বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ে। ব্যাটসম্যানরা বরং উইকেটে এসেছেন এবং অপ্রয়োজনীয় আগ্রাসী মনোভাব দেখিয়ে ফিরে গেছেন।

ম্যাচ শেষে এমন ব্যাটিংয়ের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বাংলাদেশের অধিনায়ক বলেন, ‘এ ধরনের উইকেটে আপনি যদি জেতার ইচ্ছাটা না দেখান বা ইতিবাচক না থাকেন, তাহলে বোলাররা তার সুযোগ নিবে এবং আপনাকে স্থির হতে দিবে না। এভাবে ব্যাটসম্যান বিপদে পড়বেন। এই পরিস্থিতিতে জেতার ইচ্ছে প্রকাশ করে আপনকে ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করতে হবে। কোন বলটা মারবেন আর কোনট ছেড়ে দিবেন, তা অত্যন্ত সঠিকভাবে নির্বাচন করতে হবে।’

এই ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করতে গিয়েই ভুল করে বসেন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। তাদের সবার মধ্যে দেখা গেছে হুড়োহুড়ি। অহেতুক শট খেলতে গিয়ে উইকেট বিলিয়ে দিয়েছেন অন্তত ছয়জন ব্যাটসম্যান। এই ধরনের ইতিবাচক মনোভাবের ঠিক কী মানে দাঁড়ায় তাহলে?

এমন প্রশ্নে রিয়াদ বলেন, ‘এই তত্ত্বে না গেলে কিন্তু সাফল্যের সম্ভাবনাও কমে যাবে। কারণ এ ধরনের উইকেটে আপনি রক্ষণাত্মক ক্রিকেট খেলতে পারবেন না। আমার অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, এই ধরনের উইকেটে রক্ষণাত্মক ক্রিকেট বেশিক্ষণ খেলা সম্ভব নয়।’

বেশিক্ষণ— বলতে মাহমুদুল্লাহ আসলে কী বুঝিয়েছেন, তা স্পষ্ট নয়। বাংলাদেশ তো টিকতে পারেনি ৩০ ওভারও! ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনাল হার যে ক্ষত তৈরি করেছিলো, টেস্ট সিরিজ হার সেই ক্ষতেই লাগালো আরেক আঘাত। টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতলেও হয়তো এই আঘাতের রক্তক্ষরণ থামবে না।