এবার ‘কাউয়া’ মুক্ত করতে মোহাম্মদপুর থানা আ.লীগের বিলবোর্ড!

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের রাজনীতিতে প্রথম ‘কাউয়া’ শব্দটি পরিচিত করেছেন। ২০১৭ সালের মার্চ মাসে সিলেটে এক সমাবেশে তিনি বলেছিলেন, ‘কথা হাছা, সংগঠনে কাউয়া (কাক) ঢুকেছে। জায়গায় জায়গায় কাউয়া আছে। প্রচার লীগ, তরুণ লীগ, কর্মজীবী লীগ, ডিজিটাল লীগ, হাইব্রিড লীগ আছে। এমন পেশাহীন পেশাজীবীর দরকার নেই। ঘরের ভেতর ঘর বানানো চলবে না। মশারির ভেতর মশারি টানানো চলবে না।’

ওবায়দুল কাদের সে সময় আওয়ামী লীগের নাম ব্যবহার করে ভিত্তিহীন সহযোগী সংগঠন ও সেসব সংগঠনের পরিচয় ব্যবহার করা নেতাদের সমালোচনা করতে যেয়ে ‘কাউয়া’ শব্দটি ব্যবহার করেছেন বলে মনে করা হয়। তবে পরবর্তীতে দলের নাম ব্যবহার করে অপকর্ম করে বেড়ানো তথাকথিত নেতাদের বুঝাতেও কাউয়া, হাইব্রিডের মত শব্দ রাজনীতিতে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।

প্রতিপক্ষকে সুবিধাভোগী হিসেবে চিহ্নিত করতেও এসব শব্দের ব্যবহার দেখা গেছে গত এক বছরে। কিন্তু সম্প্রতি সংগঠনকে ‘কাউয়া’ মুক্ত করার দাবি জানিয়ে বিলবোর্ডে বিজ্ঞাপন দেয়ার ঘটনা ঘটেছে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ওই ব্যানারে লেখা আছে- ‘দাঁড় কাউয়ামুক্ত মোহাম্মপুর থানা আওয়ামী লীগ চাই’!

৩০ ফুটেরও বেশি দৈর্ঘ্যের ওই বিলবোর্ডটি রাজধানীর ধানমন্ডির ২৭ নং সড়কের শংকর আবাসিক এলাকায় (বিক্রমপুর মিষ্টান্ন ভাণ্ডারের সামনে) টানানো হয়েছে। মোহাম্মদপুরে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের একাংশের পক্ষ থেকেই ওই অভিনব ব্যানার টানানো হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত বছরের ২৭ ডিসেম্বর মহানগর উত্তরের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক রাজধানীর ২৬টি থানা, ৪৯টি ওয়ার্ড ও ৯টি ইউনিয়নের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা দেন। ওই কমিটি ঘোষণার পরপরই অভিযোগ ওঠে ত্যাগী ও প্রকৃত রাজনীতিকদের পরিবর্তে সুবিধাভোগীদের কমিটিতে স্থান দেয়া হয়েছে। পরে গত ২ জানুয়ারি আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষুব্ধ নেতাদের অভিযোগের ভিত্তিতে কমিটি বাতিলের ঘোষণা করেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কমিটি বাতিল ঘোষণা করলেও মোহাম্মদপুরে আওয়ামী লীগের কমিটি নিয়ে বিতর্ক থেমে ছিল না। ওই বিরোধের রেশ ধরেই দাঁড় কাউয়া মুক্ত আওয়ামী লীগ চেয়ে ব্যানার টানানো হয়ে থাকতে পারে বলে মনে করেন অনেকে।

তবে ঠিক কে বা কারা টানিয়েছে তা নির্দিষ্ট করে জানা না গেলেও স্থানীয়রা জানান, ‘আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশ ও সুবিধাভোগীদের ঠেকাতে এর আগে দলের হাইকমান্ড থেকে ঘোষণা দেয়া হয়েছিল। এবার তৃণমূল পর্যায় থেকে ব্যানার টানিয়ে সেই বিষয়টি জানান দেয়া হল।’

এ বিষয়ে মোহাম্মদপুর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ সাত্তার-কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘কে বা কারা এটি করেছে তা আমার জানা নেই।’ কমিটি নিয়ে বিরোধের কারণে এটি টানানো হয়ে থাকতে পারে কি না? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কমিটি স্থগিত করে দিয়েছেন। তাই এ বিষয় নিয়ে আর কোন বিতর্ক বা বিরোধ থাকার কথা নয়।’