আপনি পড়ছেন

‘ক্যাফে২৪’ -এর পার্কে প্রবেশের সময় কর্তব্যরত সেনা সৈনিক অনেকটা জোর করেই অ্যাডভেঞ্চার ট্রেইলের টিকিট ধরিয়ে দিলো। মূল্যমান ৫০ টাকা। টাকাটা খরচ করতে গায়ে লাগছিলো। পাছে কী না কী দেখি, শেষে আবার সময় ও টাকা দু’টোর জন্যই না আফসোস করতে হয়!

আমি একটু বাকযুদ্ধে নামলাম। মজা করে বললাম, ‘ওখানে গিয়ে যদি মজা না পাই তবে টাকা ফেরত দিতে হবে।’ ওই সেনা সৈনিক বেশ আত্মবিশ্বাসের সাথেই বললেন, ‘আপনি আরো একবার যেতে চাইবেন।’

শেষ পর্যন্ত তাঁর কথাই সত্যি হয়েছে। বাজিতে আমি হেরেছিলাম। যদিও সময় স্বল্পতার জন্য অ্যাডভেঞ্চার ট্রেইলে দ্বিতীয়বার যাওয়া হয় নি।

কথা প্রসঙ্গে জানা গেলো, প্রশিক্ষনের সময় সেনাবাহিনী যেসব উপকরণ ব্যবহার করে থাকেন এখানে সেসবের গুটিকতক সাধারণ জনগণের জন্য বানানো হয়েছে। নির্দিষ্ট দর্শণীর বিনিময়ে তারা এগুলো ব্যবহার করে সম্যক ধারণা নিতে পারবে। না বলে পারছিনা, যেকোন শিশুপার্ক বা এমিউজমেন্ট পার্কগুলোতে যেসব রাইড থাকে তার প্রায় সবই চরকি জাতীয় রাইড। আর এটা সম্পূর্ণই ব্যতিক্রম, 'লাইভ এক্সপেরিয়েন্স'।

যেকোন রাইডে যতবার খুশি উঠতে পারবেন, কোন সমস্যা নেই। তবে অবশ্যই রাইডে উঠতে চাওয়া অন্যদের সাথে সিরিয়াল মেইন্টেইন করতে হবে। আর কিছু কিছু রাইডে একত্রে একজনের বেশি ওঠা নিষেধ। সেটা অবশ্যই নিরাপত্তার কারনে।

প্রতিটি রাইডে চড়তে গিয়ে আপনি অনুভব করবেন অদ্ভুত রকমের থ্রিলিং। সেই সাথে রোমাঞ্চ ও শতভাগ অ্যাডভেঞ্চারের স্বাদ তো আছেই। আর আছে দুর্দান্ত আনন্দ!

সবগুলো রাইডের ছবি তোলা হয়নি। যেমন রোপ স্লাইড (ROPE SLIDE)। বাছাই করে কয়েকটি রাইডের ছবি দেয়া হলো।

প্রবেশ মুখেই দেখবেন র‍্যাঞ্চ টাইপের নামফলক।
শুরুতেই নেট ওয়ে। ওঠার জন্য ভালো। তুলনামূলক সমতল, অল্প ঢাল বিশিষ্ট। উপরের ঝুলন্ত রশি ধরে নিচের রশি বরাবর পা রেখে হেঁটে যেতে হয়। জালে পা পড়লেই নিচের দিকে গেড়ে যাবেন। তখন হাঁটতে কষ্ট হবে।
শুরুতেই নেট ওয়ে। ওঠার জন্য ভালো। তুলনামূলক সমতল, অল্প ঢাল বিশিষ্ট। উপরের ঝুলন্ত রশি ধরে নিচের রশি বরাবর পা রেখে হেঁটে যেতে হয়। জালে পা পড়লেই নিচের দিকে গেড়ে যাবেন। তখন হাঁটতে কষ্ট হবে।
পাহাড়ের যতই উপরে ওঠা যায়, সমতল ভূমির সাথে দূরত্ব ততই বাড়বে। এরকম বনানীর ভেতর দিয়ে দূরের জমিন চোখে পড়বে।
স্পাইডার নেট। না মাকড়সার জাল নয়, তবে তার মতোই। নিচ থেকে ২য় বা ৩য় সমান্তরাল রশিতে পা রেখে এবং সুবিধামতো উচ্চতার রশি ধরে দেখে দেখে হেঁটে সামনের দিকে যেতে হয়।
পাহাড়ি ঢালে মাটি কেটে এরকম সিঁড়ি বানানো আছে। উঠতে সুবিধা হয়। মাটি বেশ শক্ত, বৃষ্টির জলে ধুয়ে যায়না। পিছলে পড়ার ভয় নেই।
মাটি থেকে প্রায় ফুট দশেক উঁচুতে এই ট্রেইল। কাঠ নির্মিত গোলকের ভেতর দিয়ে বসে বসে বা ক্রল করে এগিয়ে যেতে হবে। দৈর্ঘ্য বেশি না। ২৫-৩০ ফুট মাত্র।
মাটি থেকে প্রায় ফুট দশেক উঁচুতে এই ট্রেইল। কাঠ নির্মিত গোলকের ভেতর দিয়ে বসে বসে বা ক্রল করে এগিয়ে যেতে হবে। দৈর্ঘ্য বেশি না। ২৫-৩০ ফুট মাত্র।
এটা সবার জন্য নয়। কমপক্ষে ৫ ফুট ৫ ইঞ্চির কেউ এটায় চড়তে হবে। অন্যরাও পারবে তবে একটু দুঃসাহস দেখাতে হবে আর কি। পাশাপাশি ঝুঁকিটাও নিতে হবে সাথে করে।
ভূমি থেকে প্রায় ১০-১২ ফুট উঁচুতে পাশাপাশি রাখা দু'টো গাছের কান্ড। এখান থেকে ছয় ফুট উঁচুতে আছে একটি নিরাপত্তা রশি। ওটা ধরে হেঁটে যাবেন। রশি না ধরে বা ধরতে না পারলেও হাঁটা যাবে তবে, ঐ যে দুঃসাহস...
এয়ার ওয়াকার। বাতাসে হাঁটা। তবে পুরো বাতাসে নয়, টায়ারের উপর দিয়ে। অনেক কঠিন, আমি শেষ করতে পারিনি। এক টায়ারে পা রাখলে আর এক টায়ার সরে যায়। তখন সেটায় আর পা দেয়া যায় না।
একদম শেষভাগে আছে এই নেট ওয়ে। তুলনামূলক দৈর্ঘ্য বেশি, দুই ধাপ বিশিষ্ট। এটা দিয়ে ওঠা বেশ কঠিন, তবে নামা অনেক সোজা। পূর্বের মতোই উপরের নিরাপত্তা রশি ধরে জালের মাঝ বরাবরের রশি ধরে ধীরে ধীরে নামতে হবে।
সিড়ি দিয়ে নেমে এলেই এডভেঞ্চার ট্রেইল শেষ। অতঃপর শুধুই প্রস্থান।
যেভাবে যাবেন:

চট্টগ্রামের অক্সিজেন মোড় থেকে সিএনজি’তে চড়ে বড় দীঘির পাড় যাবেন। ভাড়া জনপ্রতি ১০ টাকা। সেখান থেকে ভাটিয়ারির লেগুনা বা সিএনজি’তে চড়ে একটু সামনে গেলেই ‘ক্যাফে২৪’। লেগুনা ভাড়া জনপ্রতি ১৫ টাকা আর সিএনজি ভাড়া জনপ্রতি ২৫ টাকা।

‘ক্যাফে২৪’ এর ঢুকলে শুরুতেই পড়বে ক্যাফে, খাওয়ার জায়গা। তার পাশেই পার্ক। পার্ক পার করেই এডভেঞ্চার ট্রেইলে ঢুকতে হবে। ক্যাফে২৪ -এর পার্কে প্রবেশ টিকিট ১০ টাকা আর এডভেঞ্চার পার্কে প্রবেশ টিকিট ৫০ টাকা।

 

লেখা ও ছবিঃ জুবায়ের আব্দুল্লাহ

আপনি আরও পড়তে পারেন

সেপ্টেম্বর থেকে গ্যাসের দাম বাড়ছে

ভারতীয় হাইকমিশনের সতর্কবার্তা

এ পি জে আবদুল কালামের কয়েকটি উক্তি