অন্যরকম এক রেকর্ড, ৯০২ পাস এক গোল

ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের এবারের আসরের শুরু থেকেই গোল উৎসব করে আসছে ম্যানচেস্টার সিটি। চেলসির মুখোমুখি হওয়ার আগে ২৮ ম্যাচে সিটি গোল করেছিল ৮২টি।

অথচ রোববার ঘরের মাঠ ইতিহাদ স্টেডিয়ামে বার্নাডো সিলভার একমাত্র গোলের জয় নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হলো পেপ গার্দিওলার দলকে। পুরো ম্যাচে মুহুর্মুহু আক্রমণ শানিয়েও মাত্র একবারই চেলসির জালের ঠিকানা খুঁজে নিতে পেরেছে স্বাগতিক শিবির।

এর কারণ চেলসি কোচ অ্যান্তনিও কন্তের অতিমাত্রার রক্ষণনীতি। ইতিহাদের ম্যাচটিতে যে সিটির সামনে ৯ জন ডিফেন্ডার দাঁড় করিয়েছিলেন ইতালিয়ান কোচ। ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে বিরক্তিটা চেপে রাখেননি সিটি কোচ গার্দিওলা।

চেলসির বিপক্ষে তাই বার্সেলোনার ‘তিকিতাকা’ কৌশলে খেলল সিটি। আর তাতেই অনন্য একটা রেকর্ড হয়ে গেল তাদের। এদিন পুরো ম্যাচে ৯০২টা পাস দিয়েছেন গার্দিওলার ছাত্ররা। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ইতিহাসে এক ম্যাচে কোনো দলের এতগুলো পাসের নজির এবারই প্রথম।

এক ম্যাচে কোনো দলের সর্বোচ্চ পাসের পুরনো রেকর্ডটাও অবশ্য সিটি গড়েছিল। খুব বেশিদিন আগে নয়, গত বছরের ৩০ অক্টোবর। সেদিন ওয়েস্ট ব্রমউইচের বিপক্ষে ৮৪৪টা পাস দিয়েছিল ম্যানসিটি। তবে ২০১১ সালের ডিসেম্বরে ৮৪১ পাসে ম্যানচেস্টার জায়ান্টরা পেছনে ফেলেছিল সোয়ানসি সিটিকে (৮৩৫)।

রোববার তো নতুন করেই রেকর্ডটা লিখে দিল গার্দিওলার দল। এই রেকর্ডের রূপকার দুজন- ইকেই গান্ডোগান ও অলেকসান্দ্র জিঙ্কেঙ্কো। প্রথমজন ১৭২টি পাস সরবরাহ করেছেন, পরেরজন কুড়ি পাস কম দিয়েছেন।

মূলত চেলসির রক্ষণপ্রাচীর ভাঙতেই পাসের বন্যা বইয়ে দিয়েছিল স্বাগতিক দল। ম্যাচ শেষে স্কাই স্পোর্টসের মাধ্যমে চেলসি কোচ কন্তেকে খোঁচাটা দিলেন গার্দিওলা। বলেছেন, ‘চেলসি এখনো চ্যাম্পিয়ন দল। তাদের ১০ জন খেলোয়াড় বলের পেছনে খেলেছে। বিস্ময়কর! খুব ভালো সমণ্বয়।’

চেলসির বিপক্ষে গোল করাটা যে কতটা কঠিন ছিল সেটা গার্দিওলা বললেন একটু পরই, ‘কিন্তু আমরা একটা সুযোগ হাতছাড়া করিনি। অথচ আমরা আরো গোল করতে চেয়েছিলাম। ম্যাচটা জেতার জন্য অনেক সুযোগও তৈরি করেছিলাম। যখন কোনো দল তাদের বিপদসীমায় নয় জন দাঁড় করিয়ে রাখে তখন গোল করাটা সহজ নয়।’

কেন এমন আঁটসাঁট রক্ষণনীতির আশ্রয় নিতে হলো চেলসিকে? কেনই বা পুরো ম্যাচে সিটির গোলমুখে একটা শট নিতে পারেনি চ্যাম্পিয়নরা? স্বাভাবিকভাবেই ম্যাচ শেষে এ দুটি প্রশ্ন শুনতে হলো চেলসি কোচ কন্তেকে।

জবাবে ইতালিয়ান কোচের উত্তর, ‘দুইদিন আগের কথা আমার মনে আছে। আর্সেনাল সিটির কাছে ৩ গোল খেয়েছিল মাত্র ৩০ মিনিটের মধ্যে। কিন্তু আমি অত বোকা নই যে রক্ষণ ফাঁকা রেখে ৩-০ কিংবা ৪-০ গোলে হারব। হ্যাঁ এ রকম রক্ষণাত্মক কৌশলের জন্য আপনি আমার সমলোচনা করতে পারেন। আমিও শুনতে প্রস্তুত আছি।’

চার দিনের ব্যবধানে সিটির কাছে দুবার বিধ্বস্ত হয়ে চাকরি নিয়ে চাপে আছেন আর্সেনাল কোচ আর্সেন ওয়েঙ্গার। ফ্রেঞ্চ কোচের মতো অবস্থা যাতে না হয় এজন্যই সিটির বিপক্ষে দেয়াল দাঁড় করিয়েছেন চেলসি কোচ কন্তে। অবশ্য তার ভবিষ্যৎ যে স্বচ্ছ তাও কিন্তু নয়, লিগে শেষ পাঁচ ম্যাচের চারটিতে হেরে শঙ্কায় পড়ে যাচ্ছে কন্তের চেলসি অধ্যায়ও।