আদালতে আনা হয়নি, ‘অসুস্থ’ খালেদাকে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত জামিন

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে আগামী ৫ এপ্রিল পর্যন্ত জামিন দিয়েছেন ঢাকার পঞ্চম বিশেষ জজ আদালত। বুধবার এ আদেশ দেন বিচারক ড. আখতারুজ্জামান। নির্দেশনা থাকলেও আজ খালেদা জিয়াকে আদালতে হাজির করা হয়নি।

এর আগে বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আদালতে হাজির হন ঢাকার পঞ্চম বিশেষ জজ আদালতের বিচারক ড. আখতারুজ্জামান। কারাবন্দি খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতেই জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার শুনানি শুরু হয়। আদালতে ডিসি প্রসিকিউশন আনিসুর রহমান জানান, বিচারক নির্দেশ দিলেই খালেদা জিয়াকে আদালতে হাজির করা হবে।

গত ১৩ মার্চ বিচারক ড. আখতারুজ্জামান ২৮ ও ২৯ মার্চ খালেদা জিয়াকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করার জন্য কারা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন। কিন্তু নির্দেশনার পরও খালেদা জিয়াকে আদালতে হাজির করা হয়নি।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আবদুল্লাহ আবু সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, খালেদা জিয়া শারীরিক অসুস্থ থাকায় আজ আদালতে হাজির করা হচ্ছে না। তবে দুর্নীতি দমন কমিশন, দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল জানিয়েছেন, নিরাপত্তার কারণে খালেদা জিয়াকে আজ আদালতে আনা হয়নি।

দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল আদালতকে বলেন, ‘এ মামলার দুজন আসামি আদালতে উপস্থিত রয়েছেন। আরেক আসামি খালেদা জিয়া অনুপস্থিত রয়েছেন। প্রসিকিউটর হিসেবে তাকে আদালতে হাজির করানো আমার দায়িত্ব। তবে তার আদালতে না আসার কোনো কারণ থাকতে পারে স্যার।’

পরে এ মামলায় খালেদা জিয়ার জামিন বাড়ানোর আবেদন করেন তার আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া। এসময় জামিনের বিরোধিতা করে দুদকের আইনজীবী কাজল বলেন, ‘অন্য একটি মামলায় খালেদা জিয়া বর্তমানে কারাগারে আছেন। তাই তার জামিনের কোনো সুযোগ নেই।’ জবাবে সানাউল্লাহ মিয়া বলেন, ‘কারাগারে থাকা না না থাকার সঙ্গে জামিনের কোনো সম্পর্ক নেই।’ 

শুনানি শেষে বিচারক আখতারুজ্জামান বলেন, ‘আগামীকালও (বৃহস্পতিবার) এ মামলার শুনানির দিন ধার্য ছিল। কিন্তু শুনানি হবে না। আগামী ৫ এপ্রিল এ মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য হলো। একই সঙ্গে ওই দিন পর্যন্ত এ মামলায় খালেদা জিয়া জামিনে থাকবেন।

এদিকে খালেদা জিয়ার হাজিরাকে ঘিরে বুধবার সকাল থেকেই বকশীবাজার মাঠে অবস্থিত বিশেষ আদালত এলাকায় কঠোর নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়। র‌্যাব ও পুলিশ সদস্যদের ব্যাপক উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।

এদিকে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়ার সাজা বৃদ্ধি চেয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন, দুদকের করা এক আবেদনের গ্রহণযোগ্যতার ওপর হাইকোর্টে আজ বুধবার শুনানি হতে পারে। বিচারপতি এম এনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের বেঞ্চে আবেদনটি উপস্থাপন করেন দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। 

প্রসঙ্গত, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় গত ৮ ফেব্রুয়ারি দুপুরে খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন রাজধানীর বকশীবাজারে স্থাপিত অস্থায়ী পঞ্চম বিশেষ জজ আদালতের বিচারক ড. আখতারুজ্জামান। রায় ঘোষণার পরপরই তাকে ওই দিন বিকালে নাজিম উদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।