লেম্যান কিছুই জানতেন না?

অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটার ক্যামেরন ব্যানক্রফটের বল টেম্পারিং কেলেঙ্কারিতে টালমাটাল অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট। সদ্য দায়িত্ব হারানো অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক স্টিভ স্মিথ স্বীকার করেছেন যে, টেম্পারিং পরিকল্পনা ছিলো তাদের ‘লিডারশিপ গ্রুপের’। যে গ্রুপের ‘সদস্য’ কোচ ড্যারেন লেম্যানও। কিন্তু ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার প্রধান নির্বাহী বলছেন, কোচ এ ব্যাপারে কিছুই জানতেন না।

স্মরণকালের সবচেয়ে লজ্জার এই টেম্পারিং ঘটে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়ার চলমান সিরিজের কেপটাউন টেস্টের তৃতীয় দিন। এ দিন অস্ট্রেলিয়ার তরুণ ওপেনার ক্যামেরন ব্যানক্রফট বল টেম্পারিং করেন। যা টিভি ক্যামেরায় ধরা পড়ে।

তার টেম্পারিং চেষ্টার কিছুক্ষণ পরই কোচ ড্যারেন লেম্যানকে ওয়াকিটকি দিয়ে সাইডলাইনে বসা অতিরিক্ত খেলোয়াড় পিটার হ্যান্ডসকবের সঙ্গে কথা বলতে দেখা যায়। এরপর হ্যান্ডসকব মাঠে প্রবেশ করে ব্যানক্রফটের সঙ্গে কথা বলেন এবং এ পর্যায়ে ব্যানক্রফট তার পকেট থেকে কিছু একটা বের করে ট্রাউজের নিচে রাখেন।

এর মধ্যেই মাঠের দুই আম্পায়ার ব্যানক্রফটকে তার ট্রাউজারের ভিতরে কী, তা নিয়ে প্রশ্ন করেন। তখন ব্যানক্রফট তার সানগ্লাসের সফট কাভার বের করে দেখান। প্রাথমিকভাবে তার উত্তরে সন্তুষ্ট হতে দেখা যায় মাঠের দুই আম্পায়ারকে। কিন্তু ততক্ষণে ছড়িয়ে পড়েছে ব্যানক্রফটের টেম্পারিং চেষ্টার ভিডিও।

দিনের খেলা শেষে স্টিভ স্মিথ এবং ক্যামেরন ব্যানক্রফট টেম্পারিংয়ের কথা স্বীকার করে নেন এবং ক্রিকেট বিশ্বে হইচই পড়ে যায়। ঘটনার জেরে ম্যাচের মধ্যেই দায়িত্ব ছাড়তে হয় স্টিভ স্মিথকে। ডেভিড ওয়ার্নারও ‘লিডারশিপ গ্রুপের’ সদস্য হিসেবে সহঅধিনায়কত্ব ছাড়েন। দোষ স্বীকারের সময় স্টিভ স্মিথ বলেন যে, এই কেলেঙ্কারির কথা লেম্যান জানতেন না।

এরই মধ্যে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া তাদের নিজস্ব তদন্ত শুরু করেছে। তদন্তের এক পর্যায়ে সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার প্রধান জেমস সাদারল্যান্ড বলেন, ‘তদন্ত বিষয়ে এখনই কিছু বলতে চাচ্ছি না, শুধু ড্যারেন লেম্যানের একটা বিষয় ছাড়া। তিনি এ ঘটনার কিছুই জানতেন না। তিনি মাঠে যে একটা বার্তা পাঠিয়েছিলেন যে এটা বলে যে, সেখানে কি চলছে।’

সাদারল্যান্ড যখন সংবাদ মাধ্যমে এ সব কথা বলছেন, তখন স্টিভ স্মিথ, ডেভিড ওয়ার্নার ও ক্যামেরন ব্যানক্রফট দেশে ফেরার বিমান ধরেছেন। টেম্পারিং কেলেঙ্কারির এ প্রধান তিন চরিত্রের মধ্যে প্রথম দুজনকে এক বছরের জন্য নিষিদ্ধ করেছে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া। নয় মাসের নিষেধাজ্ঞা পেয়েছেন ক্যামেরন ব্যানক্রফট।

এ দিকে, প্রশ্ন উঠেছে লেম্যানের ভূমিকা নিয়ে। স্টিভ স্মিথ বলেছেন যে, টেম্পারিংয়ের সিদ্ধান্তটা নিয়েছে অস্ট্রলিয়ার ‘লিডারশিপ গ্রুপ’। তো সেই লিডারশিপ গ্রুপে তো কোচেরও থাকার কথা। থাকার কথা দলের অন্য সিনিয়র সদস্যদেরও। তারা কি কিছুই জানতেন না?