স্ত্রীর পরকীয়া: নিজ ঘরেই খুন হন আইনজীবী রথীশ

স্ত্রী স্নিগ্ধা দীপার পরকীয়ার জেরে রংপুর বিশেষ জজ আদালতের পিপি ও আওয়ামী লীগ নেতা রথীশ চন্দ্র ভৌমিক খুন হয়েছেন বলে জানিয়েছেন র‌্যাব মহাপরিচালক বেনজির আহমেদ। বুধবার দুপুরে র‌্যাব-১৩’র সদর দপ্তরে প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, ‘প্রাথমিক তদন্তে মনে হচ্ছে গত ২৯ মার্চ রাতেই স্ত্রীর পরিকল্পনায় নিজ শয়ন কক্ষে রথীশ চন্দ্রকে খুন করা হয়।’

এর আগে নিখোঁজের পাঁচ দিন পর মঙ্গলবার দিবাগত রাত আড়াইটায় দিকে তাজহাট মোল্লাপাড়ায় নির্মাণাধীন ভবনে মাটিচাপা দেয়া রথীশের লাশ উদ্ধার করে র‌্যাব। নিহতের ভাই সুশান্ত ভৌমিক লাশ শনাক্ত করেন।

প্রেস ব্রিফিংয়ে র‌্যাব ডিজি জানান, র‌্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে রথীশ হত্যার নিজের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছেন তার স্ত্রী স্নিগ্ধা দীপা। তিনি পারিবারিক কলহ, পরকীয়া প্রেমে লিপ্ত হয়ে স্বামীকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। এতে তাকে সহযোগিতা করেন প্রেমিক কামরুল ইসলাম।

বেনজির আহমেদ বলেন, ‘নিজ ঘরে খুন হওয়ার পর তার লাশ আলমারিতে করে বাড়ির বাইরে বের করা হয়। লাশটি প্রায় অর্ধ কিলোমিটার দূরে নিয়ে একটি পরিত্যক্ত বাড়ির খোলা কক্ষে বস্তাবন্দি করে পুতে রাখা হয়। এ ঘটনায় তার স্ত্রী স্নিগ্ধা সরকার দীপা ভৌমিক, তাজহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের দুই ছাত্রকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’

তিনি জানান, রথীশ চন্দ্র নিখোঁজের বিষয়টি তদন্ত করে র‌্যাব-১৩’র সঙ্গে ঢাকার একটি বিশেষজ্ঞ টিম। এ ঘটনায় কোতয়ালী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন নিহতের ভাই সুশান্ত। পরে র‌্যাবের গোয়েন্দা টিমের তথ্য অনুযায়ী রথীশের স্ত্রী স্নিগ্ধাকে মঙ্গলবার হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এ সময় তিনি স্বামী হত্যার সঙ্গে সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেন এবং লাশের অবস্থান জানান এবং লাশের অবস্থান জানান। 

র‌্যাব মহাপরিচালক বলেন, ‘প্রাথমিক তদন্ত ও স্ত্রীর স্বীকারোক্তি অনুযায়ী রথীশ চন্দ্র ভৌমিককে হত্যার পরিকল্পনা করা হয় দুই মাস আগে। পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী গত ২৬ মার্চ রাতে তাজহাট মোল্লাপাড়ার ওই পরিত্যাক্ত বাড়ির খোলা রুমে লাশ পুতে রাখার ব্যবস্থা করে রাখে তাজহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের দুই ছাত্র সবুজ ইসলাম ও রোকনুজ্জামান। কামরুল ইসলাম ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক এবং তার নির্দেশেই দুই ছাত্র এ কাজ করে।’

এরপর পরিকল্পনা অনুযায়ী ২৯ মার্চ রাত ১০টার দিকে রাতে ভাত ও দুধের সঙ্গে স্বামী রথীশ চন্দ্রকে ১০টি ঘুমের বড়ি খাওয়ান স্ত্রী স্নিগ্ধা দীপা। রথীশ অচেতন হয়ে পড়লে পেছনের দরজা দিয়ে ঘরে প্রবেশ করে প্রেমিক কামরুল ইসলাম। পরে স্নিগ্ধা ও কামরুল মিলে গলায় ওড়না পেচিয়ে শ্বাসরোধ করে রথীশকে হত্যা করে লাশ শয়ন কক্ষের আলমিরাতে রেখে দেয়। র‍্যাবের ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন রংপুর রেঞ্জ ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুক, পুলিশ সুপার মিজানুর রহমানসহ অনেকে।