কারাগার থেকে হাসপাতালে খালেদা জিয়া

কারাবন্দি সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) নেওয়া হয়েছে। শনিবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে তাকে পুরনো ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে কালো রঙের একটি গাড়িতে করে বিএসএমএমইউতে আনা হয়।

এর আগে কারা কর্তৃপক্ষের এক আবেদনের প্রেক্ষিতে খালেদা জিয়ার জন্য একটি কেবিন প্রস্তুত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিএসএমএমইউর কোষাধ্যক্ষ আলী আসগর মোড়ল। শনিবার সকাল পৌনে ১০টার দিকে তিনি বলেন, ‘এখানে খালেদা জিয়াকে দেখবেন তার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ড।’

তবে খালেদা জিয়াকে বিএসএমএমইউতে ভর্তি করা না করার বিষয়টি স্পষ্ট করেনি আলী আসগর মোড়ল। তিনি বলেন, ‘এ বিষয়টি মেডিকেল বোর্ড ঠিক করবে।’ কারাগারে খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চার সদস্যের মেডিকেল বোর্ড তাকে বিএসএমএমইউতে নেয়ার সুপারিশ করে।

বিএসএমএমইউ কর্মকর্তারা জানান, খালেদা জিয়ার এক্সরে ও রক্ত পরীক্ষা করা হবে। এ জন্য রেডিওলজি ও ইমেজিং বিভাগে এক্সরে কক্ষ এবং প্যাথলজি বিভাগের কেবিন ব্লুকে রক্ত পরীক্ষার কক্ষ প্রস্তত রাখা হয়েছে।

এদিকে শনিবার সকাল থেকে বিএসএমএমইউতে পুলিশের তৎপরতা ছিল কোখে পড়ার মতো। হাসপাতালের কেবিন ব্লকের চারপাশে মোতায়েন রয়েছে পুলিশ। এছাড়া সাদা পোশাকে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যদেরও লক্ষ করা গেছে।

বিএসএমএমইউ সংলগ্ন শাহবাগ মোড়ে রাখা হয়েছে পুলিশের একটি প্রিজন ভ্যান ও জলকামানের গাড়ি। পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারেও তৎপরতা দেখা গেছে। তবে এ বিষয়ে কারা কর্তৃপক্ষের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের নেতৃত্বে রয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের অর্থোপেডিক বিভাগের প্রধান অধ্যাপক মো. শামসুজ্জামান। বোর্ডে সদস্যরা হলেন- ডা. মনসুর হাবীব (নিউরোলজি), টিটু মিয়া (মেডিসিন) ও সোহেলী রহমান (ফিজিক্যাল মেডিসিন)। তারা গত সপ্তাহে কারাগারে খালেদাকে দেখার পর তার ‘অসুস্থতা গুরুতর নয়’ বলে জানিয়েছিলেন।

এর আগে খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন, তিনি হৃদযন্ত্র, চোখ ও হাঁটুর সমস্যায় ভুগছেন। এ কারণে তাকে নিয়মিত বিভিন্ন ধরনের ওষুধ খেতে হয়।

উল্লেখ্য, গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ৭৩ বছর বয়সী খালেদা জিয়াকে ৫ বছরের সাজা দেয় ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫। এরপর থেকে তিনি পুরান ঢাকার সাবেক ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে একমাত্র বন্দি হিসেবে থাকছেন। এক আবেদনের প্রেক্ষিতে হাইকোর্ট চার মাসের অন্তবর্তী জামিন দিলেও তা আটকে দেয় সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। আপিল বিভাগে খালেদার জামিনের আবেদনের ওপর মে মাসে শুনানির দিন নির্ধারিত রয়েছে। ফলে তার আগে খালেদার মুক্তি মিলছে না।