শিক্ষকের গাফিলতি, জমা হলো না মালার উত্তরপত্র

দেশে এক যোগে চলছে এইচএসসি পরীক্ষা। গত বৃহস্পতিবার ছিল ইংরেজি ১ম পত্রের পরীক্ষা। কিন্তু বরগুনার মালা নামের এক পরীক্ষার্থীর ইংরেজি ১ম পত্রের উত্তরপত্র শনিবার পাওয়া গেল কেন্দ্রের মেঝেতে! অর্থাৎ ওই পরীক্ষার্থীর উত্তরপত্র জমাই নেওয়া হয়নি! দায়িত্বরত শিক্ষকদের গাফিলতিতে চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছেন বরগুনার ওই শিক্ষার্থী।

বৃহস্পতিবার পরীক্ষা থাকলেও শনিবার সকালে কেন্দ্রে ফের পরীক্ষা দিতে এসে শিক্ষার্থীরা মালার উত্তরপত্র কেন্দ্রের পড়ে থাকতে দেখেন। বরগুনার আমতলী সরকারি কলেজ কেন্দ্রের ১০২ নম্বর কক্ষে পাওয়া যায় মালার ইংরেজি ১ম পত্রের উত্তরপত্রটি। ওই কক্ষেই পরীক্ষা দিয়ে আসছেন মায়া।

এই ঘটনার জন্য ওই কক্ষে দায়িত্বরত ৩ শিক্ষককে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। অব্যাহতিপ্রাপ্ত শিক্ষকরা হলেন, আমতলী সরকারি কলেজের প্রভাষক সাইফুর রহমান, টিয়াখালী কলেজের সাইফুল ইসলাম ও একই কলেজের তৌহিদুল ইসলাম।

জানা যায়, আমতলী সরকারি কলেজের ১০২ নং কক্ষে ৮৭ জন পরীক্ষার্থী ইংরেজি ১ম পত্রের পরীক্ষা শেষে যে যার মতো বাড়ি চলে যায়। শনিবার সকাল সাড়ে ৯টায় ১০২ নম্বর কক্ষের পরীক্ষার্থীরা ইংরেজি দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষা দেয়ার জন্য কক্ষে প্রবেশ করে। পরে মেঝেতে একটি উত্তরপত্র দেখতে পায় পরীক্ষার্থীরা।

উত্তরপত্রের রোল নম্বর মিলিয়ে দেখেন এটি ইউনুস আলী খান কলেজের মালা নামের এক পরীক্ষার্থীর। (রোল-৮২৩৮০৮, রেজিস্ট্রেশন নম্বর-১১১৫২৬৩০১৬) পরীক্ষার্থী নিজেও তখন কক্ষে উপস্থিত ছিল। সে তার উত্তরপত্র এভাবে পরে থাকতে দেখে কান্নায় ভেঙে পড়ে। উত্তরপত্রটি চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী মো. ইউসুফ হল কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছে দিয়েছেন।

চলমান পরীক্ষার ভারপ্রাপ্ত হল সচিব বকুল নেছা মহিলা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. মজিবুর রহমান বলেন, ভুল বসত এটি হয়েছে। কর্তব্যে অবহেলার দায়ে তিন শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। তিনি আরো বলেন, বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের নির্দেশে উদ্ধার হওয়া উত্তরপত্রটি আমি নিজে নিয়ে যাব।

এ বিষয়ে বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. আনোয়ারুল আজিমের সাথে কথা বলতে চাইলে তিনি কোনো কথা বলবেন না বলে জানান।

আমতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সরোয়ার হোসেন বলেন, খবর পেয়ে আমি কেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে ঘটনার সত্যতা পাই। বৃহস্পতিবার ওই কেন্দ্রে দায়িত্ব পালনকারী ৩ শিক্ষক তাদের দায়িত্ব পালনে চরম অবহেলা করেছে। অবহেলার দায়ে তাদেরকে চলমান পরীক্ষা থেকে অব্যাহতি ও শোকজ করা হয়েছে।

তিনি আরো জানান, উদ্ধার হওয়া উত্তরপত্রটি ভারপ্রাপ্ত কেন্দ্র সচিব মো. মজিবুর রহমানকে বোর্ডে পৌঁছে দেয়ার জন্য বলা হয়েছে। পরীক্ষার্থীর যাতে কোনো সমস্যা না হয় সে বিষয়ে আমরা ব্যবস্থা নেব। ইউএনবি।