রোহিঙ্গাদের দেখতে কক্সবাজারের মিয়ানমারের মন্ত্রী

কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে এসেছেন মিয়ানমারের সমাজকল্যাণ, ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রী উইন মিয়াত আই। মঙ্গলবার মধ্যরাতে ঢাকায় পৌঁছার পর বুধবার সকাল ৯টা ৫০ মিনিট কক্সবাজারে পৌছান তিনি। কক্সবাজার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের এনডিসি জুয়েল আহমেদ তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন। ইউএনবি।

সরকারি সূত্র জানায়, উইন মিয়াত আই-এর এ সফরের মধ্য দিয়ে প্রথমবারের মতো মিয়ানমারের কোনো মন্ত্রী নিজ দেশের বাস্তুচ্যুত নাগরিকদের অবস্থা পর্যব্ক্ষেণে এলেন। মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ভয়াবহ নির্যাতন ও সহিংসতার শিকার হয়ে গত বছরের আগস্ট থেকে সাত লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা রাখাইন থেকে সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশের উপকূলীয় জেলা কক্সবাজারে আশ্রয় নিয়েছে।

মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর এই অমানবিক কর্মকাণ্ডকে ‘জাতিগত নিধন’ হিসেবে বর্ণনা করেছে জাতিসংঘ। এর আগে মিয়ানমার সরকারের বিভিন্ন কর্মকর্তা ঢাকা সফর করে গেলেও এই প্রথম দেশটির কোনো মন্ত্রী রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে এলেন।

কূটনৈতিক সূত্র জানায়, কক্সবাজার থেকে ফিরে বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইস মাহমুদ আলী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সাথে বৈঠক করবেন মিয়াত আই। বৃহস্পতিবার রাতে মিয়ানমারের উদ্দেশে রওনা দিবেন মঙ্গলবার মধ্যরাতে ঢাকায় পৌঁছান বৌদ্ধ ধর্ম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশটির মন্ত্রী।

এর আগে পররাষ্ট্র সচিব এম শহিদুল হক বলেছিলেন, চলতি মাসে মিয়ানমারের একজন মন্ত্রী বাংলাদেশ সফর করবেন।

সম্প্রতি অনুষ্ঠিত রোহিঙ্গা বিষয়ক এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে প্রশ্নের জবাবে সচিব জানান, মিয়ানমারের মন্ত্রী কক্সবাজারে যেতে রাজি হয়েছেন। তাকে নির্দিষ্ট জায়গায় (জিরো লাইনে) নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা আছে। রোহিঙ্গারা কেন নিজ ঘরে ফিরতে পারছে না তা দেখানোর জন্যই তাকে নিয়ে যাওয়া হবে।

এদিকে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের জিরো লাইনে প্রায় পাঁচ হাজার রোহিঙ্গা অবস্থান করছেন। পেছনে মিয়ানমারের সেনাদের কঠোর অবস্থানের কারণে তারা নিজ দেশে ফিরে যেতে পারছে না।

এসব রোহিঙ্গারা বেশিরভাগই মিয়ানমার অংশে অবস্থান করছেন। তাদের নিজ ঘরে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার উত্তম উপায় খুঁজে বের করতে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু করতে বাংলাদেশ ইতোমধ্যে এক হাজার ৬৭৩ রোহিঙ্গা পরিবারের আট হাজার ৩২ জনের তালিকা মিয়ানমারের কাছে হস্তান্তর করেছে। শিগগিরই আরো প্রায় ১০ হাজার জনের তলিকা দেবে। যদিও প্রত্যাবাসনের বিষয়ে মিয়ানমারের পক্ষ থেকে এখনো কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি।