৬ দফা দাবি ও ৩ মাসের কর্মসূচি নিয়ে শাহবাগে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড

মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান অক্ষুন্ন ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবার সুরক্ষা আইন প্রণয়নসহ ৬ দফা দাবিতে রাজধানীর শাহবাগে গণসমাবেশ করেছে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড। রোববারের এ সমাবেশ থেকে দাবি আদায়ের জন্য তিন মাসব্যাপী ৫ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। ১৫ এপ্রিল দুপুরে রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে ডাকা গণসমাবেশ থেকে এসব দাবি তুলে ধরা হয়।

মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের সভাপতি মেহেদি হাসানের সভাপতিত্বে সমাবেশে সঞ্চালনা করেন সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক সেলিম রেজা। এ সমাবেশে সারা দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও জেলা-উপজেলা থেকে মুক্তিযোদ্ধা সন্তান ও তাদের পরিবারের সদস্যরা যোগ দিয়েছেন।

মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদের দেয়া ছয় দফার মধ্যে প্রথম দফায় বলা হয়েছে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান অক্ষুন্ন এবং মুক্তিযোদ্ধা পরিবার সুরক্ষা আইন প্রণয়ন করা, দ্বিতীয় দফায় যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে রাষ্ট্রের আয়ত্বে আনা, তৃতীয় দফায় যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের তালিকা প্রকাশ ও তাদের সন্তানদের ১০ পুরুষকে সরকারি চাকরিতে অযোগ্য ঘোষণা করা, চতুর্থ দফায় কোটা সংস্কারের নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির বাসভবনে হামলা-লুটপাট এবং সারা দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি ও সংগঠনের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া, পঞ্চম দফায় কোটা আন্দোলন নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে অপপ্রচার চালিয়ে অরাজকতা সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া এবং ষষ্ঠ দফায় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোটা সংস্কারের নেপথ্যে মদদ দেয়া প্রতিক্রিয়াশীল শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া দাবি জানানো হয়েছে।

তাদের ঘোষিত তিন মাসব্যাপী কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে ২৫ এপ্রিল বেলা ১১টায় সকল জেলায় জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে দাবিনামা পেশ, ৩০ এপ্রিল বেলা ১১টায় সকল জেলা ও উপজেলা প্রতিনিধিদের নিয়ে শাহবাগে সমবেত হয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবিনামা পেশ, ৮ মে সংবাদ সম্মেলন, নিবন্ধিত সকল রাজনৈতিক দলের কাছে নির্বাচনে যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বা তাদের সন্তান ও প্রজন্মকে মনোনয়ন দিবে কিনা তা লিখিতভাবে অবগত করার জন্য অনুরোধপত্র দেয়া ও ৯ জুন বিকাল তিনটায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশ।

সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কায়সার নাসিম, বাংলাদেশ প্রজন্ম লীগের সভাপতি ফাতেমা জলিল সাথী, বাংলাদেশ প্রজন্ম সংসদের সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব, বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ওমর শরীফসহ আরো অনেকে। ঠাঁকুরগাও সরকারি কলেজ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের সভাপতি আহসান হাবিব বলেন, ‘আন্দোলনের নামে যেভাবে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে অবমাননা করা হচ্ছে তা মেনে নেয়া যায় না। আমরা এর বিচার চাই এবং মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সুরক্ষা চাই।’

সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিল করার বিষয়ে আপনাদের মতামত কী? -এমন প্রশ্নের উত্তরে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড কেন্দ্রীয় কমিটির আইন, হিসাব ও নিরীক্ষা বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম টোয়েন্টিফোর লাইভ নিউজ পেপারকে বলেন, ‘কোটা থাকা না থাকা নিয়ে আমাদের কোন প্রশ্ন নেই। আমাদের প্রশ্ন হল এই আন্দোলনটা কাদের? যারা স্বাধীনতা বিরোধী তাদের একটা পরিকল্পিত কাজ হল এই কোটা বাতিল আন্দোলন। তারা আসলে সরকার হঠানো চক্র। ২০১৩ সালে হেফাজতে ইসলামের আন্দোলনে সফল হতে না পেরে তারা এখন নতুন ইস্যু নিয়ে দাঁড়িয়েছে।’