গভীর রাতে ছাত্রীদের বের করে দেয়া: উপাচার্য যা বলছেন

বৃহস্পতিবার মধ্য রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সুফিয়া কামাল হল থেকে তিনজন ছাত্রীকে তাদের অভিভাবকের সঙ্গে বের করে দেয়ার ব্যাখ্যা দিয়েছেন উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতরুজ্জামান। তিনি বলেছেন, অনাকাঙ্ক্ষিত ঝুঁকি এড়াতেই তাদেরকে অভিভাবকের হাতে ‘তুলে দেয়া’ হয়।

উপাচার্য বলেন, ‘হলে থেকে গুজব ছড়ালে পরিস্থিতি খারাপ হতে পারে। এ জন্যই তাদেরকে অভিভাবকের কাছে তুলে দেয়া হয়েছে। তবে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসতে পারবে। তাদের মধ্যে কয়েকজন খেলোয়াড়। শুক্রবার তাদের খেলা আছে এবং এ জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের আসতে তাদের সামনে বাঁধা নেই।’

কিন্তু মধ্য রাতেই কেনো ছাত্রীদের অভিভাবকের হাতে তুলে দেয়া হলো? এমন প্রশ্নে একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলকে উপাচার্য বলেন, ‘ছাত্রীদের অভিভাবকরা কর্মজীবী মানুষ। তাদেরকে ডাকা হয়েছিলো আগেই। কিন্তু আসতে আসতে তাদের রাত হয়ে গেছে। পুরোটা সময় হল প্রশাসন তাদের জন্য অপেক্ষা করেছে। এতেই বোঝা যায়, মেয়েদের প্রতি তাদের দায়িত্ববোধ ও মেয়েদের নিরাপত্তা দেয়ার ব্যাপারে তারা কতোটা সচেতন। তারা কতোটা কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন, তা স্পষ্ট।’

উপচার্য এ সময় বলেন যে, একজন ছাত্রীর অভিভাবক ধামরাই থেকে এসেছেন। দূর থেকে আসার কারণে তার মধ্য রাত হয়ে যায়। তিনি বলেন, ‘একজনের বাবা এসেছেন ধামরাই থেকে। তার আসতে অনেক দেরি হয়েছে। উনি কর্মজীবী মানুষ। উনার আসতে ১২টা বেজে গেছে। এটার অপব্যাখ্যা করা হচ্ছে যে মধ্যরাতে ছাত্রীদের বের করে দেয়া হয়েছে। বিকেল থেকেই তাদেরকে নিয়ে অপেক্ষা করা হয়েছে। অভিভাবকদের জন্য অপেক্ষা অপেক্ষা করতে রাত হয়ে গেছে। এটাকেই অপতথ্য ও অপব্যাখ্যা করা হচ্ছে।’

রাত ১২টা বেজে গেছে বলে ধামরাই থেকে আসা ওই ব্যক্তির সঙ্গে তার মেয়েকে দেয়া হয়নি বলে দাবি করেন উপাচার্য। কিন্তু রাত ১২টা বাজার ১২ মিনিট আগে শারমিন নামের এক শিক্ষার্থীকে তার অভিভাবকের সঙ্গে কেনো বের করে দেয়া হয়— তার কোনো ব্যাখা দেননি উপাচার্য।

এ সময় তিনি বলেন যে, অভিভাবকরা হল প্রশাসনের এমন পদক্ষেপে খুশি হয়েছেন। তিনি বলেন, ‘অভিভাবকরা বলেছেন, তারা হল প্রশাসনের কাজে খুশি। একজন অভিভাবক কেঁদে দিয়েছেন। তিনি হল প্রশাসনের সঙ্গে বসে রাতে খেয়েছেন। একজন অভিভাবক আবার পুলিশে চাকরি করেন। তিনি বলেন যে, আমার বোন যদি এ রকম অপতথ্য ছড়াতো তাহলে তো আমার চাকরিই চলে যেতো।’

উপাচার্য বলেন আরো বলেন, ‘হল প্রশাসন যখন দেখবে যে কোনো শিক্ষার্থীর কার্যকলাপে ঝুঁকির শঙ্কা আছে, তখন এ ধরনের কিছু করা তাদের রুটিন দায়িত্ব। নিরাপত্তা ও সম্মানের জন্য হল প্রশাসন অভিভাবকসূলভ দায়িত্ব পলন করবে। প্রশাসন যদি এই কাজ না করতো, তাহলে আমি তাদের দোষারোপ করতাম। তাদের জিজ্ঞেস করতাম, কেনো তারা অপকর্ম করার, অপতথ্য প্রচার করার সুযোগ দিলো।’