বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাঙচুর, ছাত্রলীগ সভাপতিসহ আটক ৩৩

পরীক্ষার সেমিস্টার পদ্ধতি পরিবর্তনসহ ১৩ দফা দাবিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরকৃবি) বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা অবস্থান ধর্মঘট ও বিক্ষোভ করেছেন। মঙ্গলবার দিনভর এ কর্মসূচি পালনের পর রাতে বিক্ষুব্ধ ছাত্ররা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও ট্রেজারের অফিস কক্ষ, গাড়িসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র ভাঙচুর করে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।

এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পদকসহ ৩৩ জনকে আটক করেছে পুলিশ। এদিকে বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাঙচুরের প্রতিবাদে একপক্ষ ক্যাম্পাসে মানববন্ধন করলেও ছাত্রনেতাসহ সাধারণ শিক্ষার্থীদের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে অনেক শিক্ষার্থী ক্লাস বর্জন করেছে।

এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ডিন অধ্যাপক সাইফুদ্দিকে আহবায়ক করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।

ক্যাম্পাসের পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। আটক হওয়া ছাত্রলীগ সভাপতি ফজলে রাব্বি বাধন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নন বলে দাবি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের।

সূত্র জানায়, নগরের সালনায় অবস্থিত ওই বিশ্বদ্যিালয়ে গ্রেড কমানো ছাড়াও ১৩ দফা দাবিতে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আন্দোলনে নামে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

তাদের অন্য দাবির মধ্যে রয়েছে- ভর্তি ফি কমানো, আবাসন ও যানবাহন সংকটের সমাধান, হেলথ সেন্টারের প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র ও যন্ত্রপাতি বৃদ্ধি, ২৪ ঘন্টা মেডিকেল সার্ভিস নিশ্চিত করণ, প্রতিটি হলে রিডিং রুম স্থাপন, লাইব্রেরিতে বইয়ের সংখ্যা বৃদ্ধি, বিশ্ববিদ্যালয়ের রাস্তাঘাট পুণঃনির্মাণ ও সংস্কার, প্রতিটি হলের প্রতিটি রুমে সার্বক্ষণিক ইন্টারনেট সুবিধা নিশ্চিত করণ ও দরিদ্র শিক্ষার্থীদের আর্থিক সুবিধা প্রদান।

আন্দোলনের একপর্যায়ে কিছু শিক্ষার্থীকে আটক করা হলে শিক্ষার্থীরা আরো বিক্ষুব্ধ হয়ে ক্যাম্পাসে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। এসময় ভিসির কার্যালয়, তাঁর ব্যক্তিগত গাড়ি, ট্রেজারের গাড়ি, অডিটোরিয়ামের কাঁচসহ আসবাবপত্র ভাঙচুর হয়।

পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সভাপতি ফজলে রাব্বি বাঁধন ও সাধারণ সম্পাদক মীর ওবায়দুর রহমান শাওনসহ ৩৩ জনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আরিফুর রহমান খান জানান, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বহিরাগত কিছু লোকজন নিয়ে যে ১৩ দফা দাবিতে ভিসি ও ট্রেজারারের গাড়ি এবং প্রসাশনিক ভবনে ভাঙচুর চালিয়েছে।

তিনি বলেন, আন্দোলনকারীরা সেসব দাবি করছে তার অনেক সুবিধাই বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদ্যমান রয়েছে আবার তাদের অনেক দাবি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।

প্রক্টর বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মানুযায়ী মাস্টার্সে ভর্তি হতে একজন ছাত্রকে ন্যূনতম ৩ সিজিপিএ থাকতে হয়। কিন্তু তারা ২.৫ সিজিপিএ দিয়ে মাস্টার্সে ভর্তির জন্য আন্দোলন করছে যা গুণগত উচ্চতর শিক্ষার পরিপন্থী।