মহাকাশে বাংলাদেশের স্যাটেলাইট

বাংলাদেশের প্রথম বাণিজ্যিক স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু-১-এর উৎক্ষেপণ সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। বাংলাদেশ সময় শুক্রবার দিবাগত রাত ২টা ১৪ মিনিটে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে এটি উৎক্ষেপণ করা হয়। এর মধ্য দিয়ে বিশ্বের ৫৭তম দেশ হিসেবে নিজস্ব স্যাটেলাইটের মালিক হলো বাংলাদেশ।

এর আগে বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার ভোররাত ৩টা ৪৭ মিনিটে স্যাটেলাইটটি উৎক্ষেপণের সব আয়োজন সম্পন্ন হয়েছিল। কিন্তু কারিগরি ত্রুটির কারণে শেষ মুহূর্তে এসে উৎক্ষেপণ স্থগিত করে তা ২৪ ঘণ্টা পিছিয়ে দেয়া হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা স্পেসএক্সের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছিল, শুক্রবার দিবাগত রাত ২টা ১৪ মিনিট থেকে ৪টা ২১ মিনিটের মধ্যে এটি উৎক্ষেপণ করা হবে। নির্ধারিত সময়ের শুরুর দিকেই স্যাটেলাইটটি নিয়ে মহাকাশের পথে পাড়ি জমায় স্পেসএক্সের ফ্যালকন-৯ ব্লক-৫ রকেট।

এ সময় স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ দেখতে কেনেডি স্পেস সেন্টারে উপস্থিত হয়ে ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে ও উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়। এছাড়া তথ্য প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম, তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক ও বিটিআরসির চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদসহ বাংলাদেশের প্রায় ৩০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দলও সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

রকেট উৎক্ষেপণের প্রায় আধা ঘণ্টা পর বাংলাদেশ সময় রাত ২টা ৪৪ মিনিটে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট কাঙ্ক্ষিত জিওস্টেশনারি ট্রান্সফার অরবিটে পৌঁছায়।

উৎক্ষেপণের লাইভ টেলিকাস্টে ধারণকৃত একটি ভিডিওতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘এর মধ্য দিয়ে নতুন যুগে প্রবেশ করল বাংলাদেশ। আজ আমরাও স্যাটেলাইট ক্লাবের গর্বিত সদস্য হলাম। এখন মহাকাশে বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন হবে।’

প্রধানমন্ত্রী জানান, বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, নেপাল, ভুটান, শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ, ফিলিপিন্স, ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, তাজিকস্তান, কাজাকস্তান ও উজবেকিস্তানের কিছু অংশ এই স্যাটেলাইটের আওতায় আসবে।

দেশের প্রথম এ বাণিজ্যিক স্যাটেলাইট তৈরিতে ২ হাজার ৯৬৭ কোটি টাকা খরচ ধরা হয়েছিল। এর মধ্যে বাংলাদেশ সরকারের ১ হাজার ৩১৫ কোটি টাকা এবং বাকি ১ হাজার ৬৫২ কোটি টাকা এইচএসবিসি ব্যাংক থেকে ঋণ হিসেবে নেওয়া হয়েছে। তবে শেষ পর্যন্ত এ প্রকল্পে ব্যয় হয়েছে ২ হাজার ৭৬৫ কোটি টাকা।