তিন জেলায় ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত আরো ৬

দেশের তিনটি জেলায় বুধবার দিবাগত রাতে কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধে’ আরো ৬ জনের নিহতের কথা জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ফেনী, কুমিল্লা ও মাগুরায় বুধবার দিবাগত মধ্যরাত থেকে ভোর পর্যন্ত এসব ‘বন্দুকযুদ্ধ’ হয়।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভাষ্য, মাদক বিরোধী অভিযানে গেলে তাদের লক্ষ্য করে দুর্বৃত্তরা গুলি ছুড়লে পাল্টা গুলিবিনিয়ে এসব নিহতের ঘটনা ঘটে। র‌্যাব-পুলিশের দাবি, নিহতরা ‘মাদক ব্যবসায়ী’। তাদের বেশির ভাগের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।

কুমিল্লা ও ফেনীতে পুলিশের সাথে ‘মাদক ব্যবসায়ীদের’ এবং মাগুরায় দুই মাদক ব্যবসায়ী গ্রুপের মধ্যে এসব ‘বন্দুকযুদ্ধের’ কথা জানায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

গত ১৩ দিনে নিউজ ডেস্কে আসা খবর অনুযায়ী সারাদেশে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ ৫৫ জন নিহত হলেন। এর মধ্যে গত চারদিনে ৩৫ জনের নিহতের কথা জানাল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। যাদের বেশির ভাগকেই ‘মাদক ব্যবসায়ী’ হিসেবে দাবি করছে র‌্যাব-পুলিশ।

ফেনীতে নিহতরা হলেন- ফুলগাজী উপজেলার মাইজগ্রামের মোহাম্মদ মোস্তফার ছেলে শাহমিরান শামীম ও মনতলা গ্রামের ফটিক মিয়ার ছেলে মজনু মিয়া।

ফুলগাজী থানার ওসি হুমায়ুন কবিরের ভাষ্য, রাত সাড়ে তিনটায় উপজেলার জম্মুরা এলাকায় গোপন সংবাদে মাদক বিরোধী অভিযানে গেলে পুলিশের সাথে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ তারা নিহত হয়।  

ঘটনাস্থল থেকে ৭০০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট, ২০০ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধারের কথা জানান তিনি।

কুমিল্লায় নিহতরা হলেন- চৌদ্দগ্রামের বৌদ্ধেরখিল গ্রামের হাফিজ আহমেদের ছেলে বাবুল ওরফে লম্বা বাবুল ও সদর দক্ষিণ উপজেলার চাঙ্গিনি গ্রামের শাহ আলমের ছেলে রাজিব (২৬)।

চৌদ্দগ্রাম থানার ওসি আবু ফয়সল জানান, রাত ১টায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের আমাগান্দা-সালাকান্দা এলাকায় পুলিশের সাথে ‘গুলি বিনিময়ে’ বাবুল নিহত হয়। তার বিরুদ্ধে থানায় ৫টি মামলা রয়েছে।  

সদর দক্ষিণ থানার ওসি নজরুল ইসলাম জানান, রাত সোয়া ২টায় সদর দক্ষিণ উপজেলার গোয়ালমাথা এলাকায় পুলিশের সাথে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ রাজিব নিহত হয়।

নিহত রাজিবের বিরুদ্ধে ১৩টি মামলা রয়েছে বলে জানান ওসি।

মাগুরায় নিহতরা হলেন- সদর উপজেলার ভায়ানা গ্রামের মিজানুর রহমান কালু (৪২), ও নিজনাদুয়ালি গ্রামের আইয়ুব আলী (৫৫)।

মাগুরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলামের ভাষ্য, রাত ১টা ৩০ মিনিটে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই মাদক ব্যবসায়ী গ্রুপের মধ্যে পারনাদুয়ালি হাউজিং প্রকল্প এলাকায় ‘বন্দুকযুদ্ধ’ হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে দুজনের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করে।

সম্প্রতি ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহতের ঘটনা বেড়ে যাওয়ার মধ্যেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানিয়েছেন, মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে তাদের অভিযান চলমান থাকবে। কোনো মাদক ব্যবসায়ী ছাড় পাবেন না। মঙ্গলবার নিজ দপ্তরে এ বিষয়ে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বাধ্য হয়ে অস্ত্র ব্যবহার করছে। আক্রান্ত হওয়ায় র‌্যাব-পুলিশ পাল্টা আক্রমণ করছে।

এদিকে মাদক বিরোধী অভিযানে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ প্রতিদিন নিহতের ঘটনায় মানবাধিকার সংগঠন, রাজনৈতিক দলসহ নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তারা আইনের আওতায় এনে মাদক ব্যবসায়ী, পাচার ও সরবরাহকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেছে।