ভরা মৌসুমেও ইলিশের আকাল, ‘অনুদান পায়নি’ জেলেরা

লক্ষ্মীপুরের মেঘনা নদীতে গত এক সপ্তাহ ধরে ইলিশের আকাল দেখা দিয়েছে। ইলিশ না পাওয়ায় হাজার হাজার জেলে পরিবারের মাঝে হতাশা বিরাজ করছে। মাছ ঘাটগুলোতে ইলিশের আমদানি না হওয়ায় অলস সময় কাটাচ্ছেন জেলে ও আড়তদাররা।

তবে নাব্যতা কমে যাওয়ার কারণে নদীতে মাছের আকাল দেখা দিয়েছে জানিয়ে মৎস্য বিভাগ বলছে আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই বেশি মাছ ধরা পড়বে।

জেলা মৎস্য অধিদপ্তর জানায়, এখানে প্রায় ৪৬ হাজার জেলে রয়েছে। এদের মধ্যে প্রায় ২৯ হাজার নিবন্ধিত জেলে রয়েছে যাদের অধিকাংশই মেঘনা নদীতে মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করে। লক্ষ্মীপুরের রামগতির আলেকজান্ডার থেকে চাঁদপুরের ষাটনল এলাকার ১শ কিলোমিটার পর্যন্ত মেঘনা নদীতে মাছ শিকার করে থাকেন এখানকার জেলেরা। জাটকা সংরক্ষণ ও ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে গত মার্চ-এপ্রিল দু মাস সকল ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ ছিল। কিন্তু নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার ২৬ দিন পার হলেও জেলেদের জালে মিলছে না ইলিশ।

মতির হাট, মজু চৌধুরীর হাট, লধুয়াঘাট ও মোল্লার হাটসহ বিভিন্ন হাটে ঘুরে দেখা যায়, ঘাটে তেমন মাছ নেই বললেই চলে। জেলে ও আড়তদাররা অলস সময় পার করছেন। এসময় জেলে কবির হোসেন, মনির মাঝি, সালামত উল্যাহ ও আড়ৎতদার লিটন মেম্বারসহ অনেক জেলে অভিযোগ করে বলেন, নিষেধাজ্ঞা উঠে গেলেও নদীতে মাছ নেই।

তারা আরো বলেন, সারাদিন নদীতে জাল ফেলে এবং মাছ শিকার করলে দুই/চারটা মাছ পাওয়া যায়। এ দিয়ে ইঞ্জিনচালিত নৌকার তেলের খরচও জোগাড় করা যায় না। এছাড়া নিষেধাজ্ঞার সময় দুই মাস ও মে-জুন দুই মাসসহ চার মাস ৪০ কেজি হারে চাল দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু এসব ঘাটের আশপাশের তেমন কোনো জেলেই চাল পায়নি বলে অভিযোগ করেন তারা।

জেলেদের অভিযোগ, স্থানীয় চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যরা নিজেদের স্বজনদের নাম তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করে তাদের চাল দিয়েছে। এসব তালিকার বেশিরভাগই জেলে নয়, বিভিন্ন পেশার লোকজন বলে দাবি তাদের।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এইচ এম মহিব উল্যাহ জানান, জলবায়ুর পরিবর্তনের ফলে জীব-বৈচিত্র্যের ওপর ভারসাম্যহীন আঘাতের ফলে মেঘনা নদীর গভীরতা ক্রমান্বয়ে কমে যাওয়ায় ইলিশের প্রজনন প্রক্রিয়ায় বাধাগ্রস্ত হয়। এর ফলে নদীতে ভরা মৌসুমে ইলিশ মাছের অকাল দেখা দিয়েছে।

তিনি আরো জানান, জাটকা ইলিশ যেখানে প্রতিপালিত হয় সেরকম ৮/১০টি স্থান দিন দিন ভরাট হয়ে গেছে। ওই স্থানগুলো ড্রেজিং করলে আবার নদীতে ইলিশের দেখা মিলতে পারে।

মো. কাউছার, ইউএনবি।