রমজানে চরম ভোগান্তিতে ঘরমুখো যাত্রীরা

পবিত্র রমজানের শুরু থেকে পরিবর্তিত অফিস সময় অনুযায়ী যাতায়াতে নগরীর যাত্রী সাধারণ চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে বলে জানিয়েছে যাত্রী কল্যাণ সমিতি। এই সময়ে সকাল ৭টা থেকে ১১টা এবং দুপুর ২টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত নগরীতে চলাচলকারী বাস-মিনিবাসের প্রায় ৯৬ শতাংশ সিটিং সার্ভিসের নামে দরজা বন্ধ করে যাতায়াত করছে। এতে নগরীর মাঝপথের যাত্রী সাধারণ চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে।

এইসব বাসগুলো সরকার নির্ধারিত ভাড়ার পরিবর্তে কোম্পানি কর্তৃক নির্ধারিত অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে। এতে করে নিম্নআয়ের লোকজনের যাতায়াত দুর্বিসহ হয়ে উঠেছে।

অন্যদিকে নগরীতে চলাচলকারী সিএনজি অটোরিক্সার ৯৪ শতাংশ চুক্তিতে চলাচল করছে। ৯৮ শতাংশ অটোরিক্সা মিটারের অতিরিক্ত ভাড়া বা বকশিস দাবি করছে। আগে ১০ টাকা বকশিস চাইলেও রমজানে ৩০/৫০ টাকা বকশিস দাবি করা হচ্ছে।

চলতি রমজানে নগরীতে যাতায়াতকারী যাত্রী সাধারণের ভোগান্তি নিয়ে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির পরিচালিত এক জরিপে এসব চিত্র উঠে এসেছে।

এদিকে শনির আখড়া, গুলিস্তান, সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ি, পোস্তগোলা, শাহবাগ, ফার্মগেট, মিরপুর-১০, মহাখালী, আগারগাঁও, ধানমণ্ডি, বনানী, বারিধারাসহ নগরীর অনেক গুরুত্বপূর্ণ এলাকার রাস্তায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকেও ট্যাক্সিক্যাবের দেখা মেলে না। এতে পাঠাও, উবারসহ অ্যাপস ভিক্তিক পরিবহনগুলো অসহায় যাত্রীদের কিছুটা স্বস্তি দিতে পাশে দাঁড়াচ্ছে।

বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির গণপরিবহনের ভাড়া নৈরাজ্য পর্যবেক্ষণ উপ-কমিটির পাঁচটি টিম গত ছয় দিন যাবৎ নগরীতে উল্লেখিত স্পট সমূহে রমজান মাসে যাত্রী ভোগান্তি ও ভাড়া নৈরাজ্য পর্যবেক্ষণ করে। পর্যবেক্ষণকালে ৩১০টি বাস ও ৫৫৭ জন বাসযাত্রী, ২১৪টি অটোরিক্সা ১৮৫ জন অটোরিক্সার যাত্রী, ৫৬ জন ট্যাক্সিক্যাব যাত্রীর সাথে কথা বলে এই জরিপ পরিচালনা করে।

পর্যবেক্ষণকালে ৮২ শতাংশ যাত্রী রমজানে গণপরিবহন ব্যবস্থার এমন কর্মকাণ্ডের ওপর তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেন। ৯২ শতাংশ যাত্রী প্রতিদিন যাতায়াতে দুর্ভোগের শিকার হন। ৯৮ শতাংশ যাত্রী অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের শিকার হন। ৬২ শতাংশ যাত্রী চলন্তবাসে উঠানামা করতে বাধ্য হন। সিটিং সার্ভিসের নামে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়েও ২৮ শতাংশ যাত্রী দাঁড়িয়ে যেতে বাধ্য হন।

এছাড়াও হয়রানির শিকার হলেও অভিযোগ কোথায় করতে হয় জানে না ৯৩ শতাংশ যাত্রী, তবে ৮৮ শতাংশ যাত্রী মনে করেন অভিযোগ করে কোনো প্রতিকার পাওয়া যায় না বলেই তারা অভিযোগ করেন না।