ব্যাটে-বলে আইপিএল মাতালেন যারা

এমএস ধোনির চেন্নাই সুপার কিংসের শ্রেষ্ঠত্বের মাধ্যমে শেষ হয়ে গেলো ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) একাদশ আসর। নানা কারণে আইপিএলের অন্য যে কোনো আসরের তুলনায় এবার আসর ছিলো বেশি আকর্ষণীয়। তরুণ ক্রিকেটারদের অনেকেই জ্বলে উঠেছেন। অভিজ্ঞদের মধ্যেও অনেকে দেখিয়েছেন বুড়ো হাড়ের ভেলকি। কেউ আবার ছুঁতে পারেননি প্রত্যাশা। ঘটনা-দুর্ঘটনায় মোড়া একাদশ আইপিএলে ব্যাটে-বলে দুর্দান্ত ছিলেন যারা, তাদের এই নিয়ে আয়োজন।

ব্যাটিংয়ের নানা কীর্তি

সবচেয়ে বেশি রান: আইপিএল শেষে তিনি পরাজিত দলের অধিনায়ক। কিন্তু ব্যাটসম্যান হিসেবে এই আইপিএলের সবচেয়ে চিত্তাকর্ষক চরিত্রের নাম কেন উইলিয়ামসন। ১৭ ম্যাচে তার ব্যাট থেকে এসেছে ৭৩৫ রান। অন্য কারো ছয়টির বেশি হাফ সেঞ্চুরি নেই। কিন্তু উইলিয়ামসন করেছেন আটটি। বল টেম্পারিংয়ে জড়িয়ে শাস্তিতে থাকা ডেভিড ওয়ার্নার এবার খেলতে পারেননি। অধিনায়ক হিসেবে তার শূন্যস্থানে বসানো হয় উইলিয়ামসনকে। কিন্তু ব্যাটসম্যান ওয়ার্নারের শূন্যতা কে পূরণ করবে— এ নিয়ে সন্দিহান ছিলো সানরাইজার্স। যে সন্দেহ কর্পুরের মতো হাওয়া হয়ে গেছে উইলিয়ামসনের অসাধারণ ব্যাটিংয়ে।

উইলিয়ামসনের পর এবারের আইপিএলে সবচেয়ে বেশি রান করা চার ব্যাটসম্যান হলেন রিশাব পান্ট (৬৮৪), লোকেশ রাহুল (৬৫৯), আম্বাতি রাইডু (৬০২) ও শেন ওয়াটসন (৫৫৫)। এদের মধ্যে রিশাব পান্ট ও লোকেশ রাহুল ছিলেন অসাধারণ। এ দুজনকে কেনো ভারতীয় ক্রিকেটের ভবিষৎ মনে করা হয়, তার প্রমাণ তারা দিয়ে দিয়েছেন।

এদের বাইরে ব্যাট হাতে এই আইপিএল মাতিয়েছেন শ্রেয়াস আয়ার, সূর্যকুমার যাদব, সাঞ্জু স্যামসনের মতো তরুণরাও। একসঙ্গে এতো বেশি তরুণ ব্যাটসম্যানকে আর কখনো এতোটা মেতে উঠতে দেখা যায়নি। এবারের আইপিএলের সবচেয়ে বড় সৌন্দর্য্য বোধহয় এটাই।

সেঞ্চুরি-হাফ সেঞ্চুরি: এবারের আইপিএলে সেঞ্চুরি হয়েছে মোট পাঁচটি। এর মধ্যে দুটিই করেছেন শেন ওয়াটসন। একটি করে করেছেন রিশাব পান্ট, ক্রিস গেইল ও আম্বাতি রাইডু। এদের মধ্যে সবচেয়ে বড় সেঞ্চুরিটি পান্টের। তিনি করেছেন ১২৮ রান। সবচেয়ে বেশি হাফ সেঞ্চুরি করেছেন কেন উইলিয়ামসন। ১৭ ম্যাচে আটবার ৫০-এর বেশি রান করেছেন তিনি।

বোলিংয়ের নানা কীর্তি

সবচেয়ে বেশি উইকেট: এবারের আইপিএলে বোলারদের খুব বেশি দাপট দেখা যায়নি। ২০টির বেশি উইকেট পেয়েছেন মাত্র চারজন বোলার। এদের মধ্যে শীর্ষে ছিলেন অস্ট্রেলিয়ার ৩১ বছর বয়সী পেসার অ্যান্ড্রু টাই। ১৪ ম্যাচে ২৪ উইকেট নিয়েছেন তিনি। ইনিংসে তিনবার চারটি করে উইকেট নিয়েছেন এই পেসার। এই কীর্তি একবারের বেশি করতে পারেননি আর কেউ। কিংস এলিভেন পাঞ্জাব যদি প্লে অফে সুযোগ পেতো, টাই পেতে পারতেন আরো উইকেট।

অ্যান্ড্রু টাইয়ের পর এবারের সেরা চার বোলার হলেন রশিদ খান (২১ উইকেট), সিদ্ধার্থ কাউল (২১), উমেশ যাদব (২০) ও হার্দিক পান্ডিয়া (১৮)। ট্রেন্ট বোল্টও পেয়েছেন ১৮ উইকেট। উইকেট সংখ্যায় সবার উপরে না থকলেও আইপিএলজুড়ে বোলরদের মধ্যে আলোচনার শীর্ষে ছিলেন রশিদ খান। আফগানিস্তানের এই পেসার সানরাইজর্স হায়দরবাদের বোলিং আক্রমণের প্রাণভোমরা ছিলেন।

সেরা বোলিং: কিংস এলিভেন পাঞ্জাবের হয়ে আটটি ম্যাচ খেলা অঙ্কিত রাজপুত এবারের আইপিএলের সেরা বোলিংয়ের রেকর্ডধারী। আট ম্যাচের একটিতে ইনিংসে মাত্র ১৪ রান দিয়ে পাঁচ উইকেট নিয়েছেন তিনি। আর কোনো বোলার ৬৬ ম্যাচের কোনোটিতে ইনিংসে পাঁচ উইকেট নিতে পারেননি। অঙ্কিত তার খেলা আট ম্যাচে তুলে নেন মোট ১১টি উইকেট।

এদের বাইরে শার্দুল ঠাকুর, জাসপ্রিট বোমরা ও কুলদিপ যাদবরাও একাদশ আইপিএলে বল হাতে অসাধারণ ছিলেন। সব মিলিয়ে এবরের আইপিএলে ব্যাট-বলের যুদ্ধ অন্য যে কোনো আসরের তুলনায় বেশি ছিলো।