গ্রুপের এই হিসেব মেসিদের জন্য ‘বড়ই আতঙ্কের’

বাছাই পর্বে বড় বিপদ কাটিয়ে রাশিয়া বিশ্বকাপের টিকিট পেয়েছে আর্জেন্টিনা। তবে নিশ্চিত করলেও বিশ্বকাপ যত ঘনিয়ে আসছে আর্জেন্টিনার বিপদ যেন ততোই বাড়ছে! ইনজুরির কারণে প্রথম পছন্দের গোলরক্ষক সার্জিও রোমেরোকে হারাতে হয়েছে।

শুধু রোমেরো নয়, ইনজুরিতে ভুগছেন লুকাস বিলিয়া, গ্যাব্রিয়েল মার্কাদো। একদিন আগের খবর, অনুশীলনের সময় কুঁচকিতে ব্যথা পেয়েছেন নিকোলাস ওটামেন্ডিও! তবে শুধু ইনজুরি সমস্যা কাটিয়ে ওঠা নয়, বিশ্বকাপের আগ মূহূর্তে তাদের ভাবতে হচ্ছে অন্য অনেক বিষয় নিয়েও। বিশেষ করে গ্রুপের হিসেবটা মেসির দলের জন্য অনেকটা ‘ভয়ঙ্করই’।

অনেকে বলাবলি করছে, আগামী রাশিয়া বিশ্বকাপের ‘ডি’ গ্রুপটাই ডেথ গ্রুপ। আর এই গ্রুপেই পড়েছে আর্জেন্টিনা। ‘ডি’ গ্রুপের অপর তিন দল হলো আইসল্যান্ড, ক্রোয়েশিয়া ও ‘আফ্রিকার সুপার ঈগল’ নাইজেরিয়া।

নাইজেরিয়া নিঃস্বন্দেহে আফ্রিকার অন্যতম শক্ত দল। গত ব্রাজিল বিশ্বকাপে শেষ ষোলো পর্যন্ত পৌঁছেছিল দলটি। নাইজেরিয়ার এবারের বিশ্বকাপ দলটিও বেশ শক্তিশালী। সব পজিশনে ভালো ফুটবলার আছে আফ্রিকার সুপার ঈগলদের। মোটামুটি ব্যালেন্স টিম বলতে যা বোঝায়। সব মিলিয়ে প্রথম রাউন্ড পেরুনো খুব করেই সম্ভব নাইজেরিয়ার পক্ষে।

গ্রুপের অপর দুই দল ক্রোয়েশিয়া ও আইসল্যান্ডের ক্ষেত্রেও একই কথা। এই মুহূর্তে বিশ্বের অন্যতম সেরা দুই মিডফিল্ডার ক্রোয়েশিয়া দলে। লুকা মডরিচ অনেক বছর ধরেই রিয়াল মাদ্রিদের মাঝমাঠে দুর্দান্ত খেলছেন। বার্সেলোনার মাঝমাঠে ইভান রাকিতিচও বেশ দুর্দান্ত। এই দুজন যখন ক্রোয়েশিয়ার জার্সিতে একসাথে নামবেন তখন অনেক কিছুই সম্ভব। তাছাড়া ক্রোয়েশিয়ার বিশ্বকাপ দলটি বেশ গোছালো। সব মিলিয়ে প্রথমপর্ব পেরুনোর ভালো সম্ভাবনাই রয়েছে ক্রোয়েশিয়ার।

তুরস্ক, ফিনল্যান্ড, ক্রোয়েশিয়ার মতো দলকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপে উঠেছে বিশ্বের সবচেয়ে কম জনসংখ্যার (৩ লাখ ৩৫ হাজার) দেশ আইসল্যান্ড। বাছাই পর্বে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে বিশ্বকাপে উঠেছে দলটি। ফলে ‘অঘটন’ ঘটানোর সম্ভাবনা ভালো করেই আছে তাদের। আর এই তিন দলের এমন সম্ভাবনা বিপদের কারণ হতে পারে আর্জেন্টিনার জন্য।

বিশ্বকাপে প্রতিটি গ্রুপ থেকে দুটি করে দল পরের রাউন্ডে যাবে। আর দুটি দল বাদ পড়বে। মেসিরা ওই দুই দলের মধ্যে একটি হতে পারবে কিনা তাতে সন্দেহ খোদ দিয়েগো ম্যারাডোনারও!

আর্জেন্টিনা অনেক বছর যাবতই আক্রমণভাগ নির্ভর দল। এবারের বিশ্বকাপ দলটাও হয়েছে তেমনই। আক্রমণভাগে বড় বড় তারকা থাকলেও মাঝমাঠ, রক্ষণ বা গোলরবারের নিচে বিশ্বের অন্যতম সেরা কেউ নেই। অর্থাৎ যা করতে হবে ওই আক্রমণভাগকেই করতে হবে।

এক লিওনেল মেসির ছাড়া আর্জেন্টিনার বর্তমান আক্রমণভাগের অন্যরা আবার খুব বেশি আস্থাভাজনও নয়। সম্প্রতি বছরগুলোতে সার্জিও আগুয়েরো ও গঞ্জালো হিগুয়েইনরা জাতীয় দলের জার্সিগে কখনোই ধারাবাহিকভাবে ভালো খেলতে পারেননি। এসব হিসেব রাশিয়ায় আর্জেন্টিনাকে বিপদে ফেলে দেয় কিনা কে জানে!