তামাকের ধোঁয়ায় উড়ে যাচ্ছে ১.৪ শতাংশ জিডিপি

বাংলাদেশের ১৫ বছরের অধিক জনগোষ্ঠীর কমপক্ষে ৪৩ শতাংশ গতবছর তামাক সেবন করেছেন। আর ২০১৬ সালে দেশে তামাকের কারণে মারা গেছেন ১৬ লাখের মতো মানুষ। ওয়াশিংটনের জনস্বাস্থ্য বিষয়ক স্বাধীন গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইনস্টিটিউট ফর হেলথ ম্যাট্রিক্স অ্যান্ড ইভ্যালুয়েশনের (আইএইচএমই) গত বছরের জরিপের বরাত দিয়ে সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছে তামাকবিরোধী সংগঠনগুলোর আন্দোলনকারীরা।

আইএইচএমইয়ের ‘গ্লোবাল বার্ডেন অব ডিজিজ স্টাডি-২০১৭’ শীর্ষক জরিপের বরাত দিয়ে তারা আরো জানায়, বাংলাদেশে তামাক ব্যবহারের কারণে উৎপাদনশীলতা হ্রাস থেকে সরাসরি স্বাস্থ্যসেবা ব্যয় মিলিয়ে মোট অর্থনৈতিক ক্ষতি হয় ১৫ হাজার ৮৬০ কোটি মার্কিন ডলার বা জিডিপির ১.৪ শতাংশ।

তামাকবিরোধী ৭টি সংগঠন যৌথভাবে ‘তামাকজনিত রোগ ও মৃত্যু কমাতে কঠোর করনীতি প্রণয়নে জনপ্রতিনিধিদের প্রতি আহ্বান’ শীর্ষক এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।

সংগঠনগুলো হলো- বাংলাদেশ তামাকবিরোধী জোট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যুরো অব ইকোনোমিক রিসার্চ, বাংলাদেশ ক্যান্সার সোসাইটি, বাংলাদেশ লাঙ ফাউন্ডেশন, ডক্টরস ফর হেলথ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট, তামাকবিরোধী নারী জোট এবং ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, মাদক গ্রহণের প্রথম ধাপ হলো তামাকজাতীয় পণ্য গ্রহণ করা। আর নতুন তামাক গ্রহণকারীদের মধ্যে বেশির ভাগই তরুণ। তাদের তামাক গ্রহণ বন্ধ করতে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য এখনই সবচেয়ে উপযুক্ত সময়।

তারা তামাকের ওপর উচ্চ কর আরোপের দাবি জানিয়ে বলেন, এর ফলে তামাকের মূল্য বৃদ্ধি পাবে এবং এতে করে মানুষ তামাক ব্যবহারে আগ্রহ হারাবে।

নরওয়ে, কানাডা, দক্ষিণ আফ্রিকা ও থাইল্যান্ডের কঠোর কর আইনের উল্লেখ করে বক্তারা আরো বলেন, বাংলাদেশে গত আট বছরে তামাক ব্যবহার কমপক্ষে ৮ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। সরকারের তামাকবিরোধী উদ্যোগের কারণে তা সম্ভব হয়েছে। কিন্তু এখনো তামাক ব্যবহারকারীদের সংখ্যা অনেক বেশি রয়ে গেছে।

তামাকবিরোধী নারী জোটের আহ্বায়ক ফরিদা আখতার, বাংলাদেশ লাঙ ফাউন্ডেশনের আইটি সেলের সদস্য সচিব ডা. হেনা খাতুন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. রুমানা হক, বাংলাদেশ ক্যান্সার সোসাইটির প্রকল্প পরিচালক অধ্যাপক ডা. গোলাম মহিউদ্দিন ফারুক, পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের (পবা) চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ তামাকবিরোধী জোটের উপদেষ্টা আবু নাসের খান, বাংলাদেশ ক্যান্সার সোসাইটির সভাপতি অধ্যাপক মোল্লা ওবায়দুল্লাহ বাকী, বাংলাদেশ তামাকবিরোধী জোটের সমন্বয়কারী সাইফুদ্দিন আহমেদ প্রমুখ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।