মুসলিম রাষ্ট্র হিসেবে সারা বিশ্বে পরিচিত ইরান। প্রাচীন ইতিহাস ও সভ্যতার কারণেও বিখ্যাত হয়ে আছে দেশটি। ফুটবলের বৈশ্বিক আসরে যাদের ইতিহাস কখনোই সমৃদ্ধ ছিল না। ১৯৭৮ সালে বিশ্বকাপে অভিষেক হওয়ার পর এ নিয়ে পঞ্চম আসর খেলতে যাচ্ছে এশিয়ার দলটি।

iran football team 2018

চল্লিশ বছরের বিশ্বকাপ অধ্যায়ে তারা অনেকটা অতিথির মতো। আগের দশটি আসরে আসা-যাওয়ার মধ্যেই পথ চলেছে ইরান। পার্সিয়ানদের দ্বিতীয়বার বিশ্বমঞ্চের মূলপর্বে নাম লেখানোর জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছে দুই দশক। এই চার বিশ্বকাপের মধ্যে দুবার তারা ব্যর্থ হয়েছে বাছাইপর্বের গণ্ডি পাড়ি দিতে। ১৯৮২ সালে সুযোগ পেয়েও সেটা হাতছাড়া করেছিল ইরান। ১৯৮৬ সালের বিশ্বকাপে আবার নিষিদ্ধ ছিল দেশটি।

ইরান ফেরে ১৯৯৮ সালে, ফ্রান্স বিশ্বকাপে। ওই আসরে তাদের বিদায় নিতে হয় গ্রুপপর্বেই। ২০০৬ ও ২০১৪ বিশ্বকাপে খেললেও মাঝের দুই আসরে ইরান ছিল দর্শক সারিতে। ইরানের মানুষদের জন্য হতাশার ব্যাপার হচ্ছে বিশ্বমঞ্চে তাদের জয় মাত্র একটি; সেটাও কুড়ি বছর আগে যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে।

ইরানকে আরো হতাশ করে তাদের দুঃস্বপ্নের ইতিহাস। যে চারটি বিশ্বকাপে তারা অংশ নিয়েছে প্রতিবারই তাদের স্বপ্নযাত্রা থেমেছে গ্রুপপর্বে। এবার প্রথম রাউন্ডের প্রাচীর ডিঙাতে মরিয়া হয়ে উঠেছে এশিয়ার দলটি।

বিশ্বমঞ্চে অভিষেকের আগেই দেশটি পার করেছে স্বর্ণযুগ। এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই এশিয়ান কাপে হ্যাটট্রিক চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ইরান। ১৯৬৮ থেকে ১৯৭৬ সাল পর্যন্ত এশিয়ার ফুটবলের ঝাণ্ডাটা ছিল তাদের হাতেই। কিন্তু পরপর তিনটি শিরোপা জয়ের পর কোথায় যেন হারিয়ে যায় দলটি। শিরোপা জেতা দূরে থাক, আর ফাইনালেই উঠতে পারেনি তারা। এশিয়ান কাপের শেষ তিনটি আসরেই তাদের যাত্রা থেমেছে কোয়ার্টার ফাইনালে।

ইরান ফুটবলের গেল তিন দশকে এশিয়ার মঞ্চে দ্যুতি ছড়াতে না পারার পেছনে যৌক্তিক একটা কারণ আছে। দেশের মাটিতে আন্তর্জাতিক ফুটবল আয়োজন নিষিদ্ধ ছিল। দীর্ঘ ২৮ বছরের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার পর দেশটির ফুটবলকর্তারা আশাবাদী এবার নতুন এক শুরু হবে ইরানের। যেটার শুরুটা আসন্ন রাশিয়া বিশ্বকাপ দিয়েই করতে চান তারা।

এ নিয়ে টানা দ্বিতীয়বার বিশ্বকাপে খেলতে যাচ্ছে ইরান। অতীতের দুঃস্বপ্ন পেছনে ফেলে এবার সামনে এগিয়ে যেতে চায় দেশটি। এ যাত্রায় তাদের ভরসার নাম করিম আনসারিফার্দ। গ্রিক ক্লাব অলিম্পিয়াকোসের হয়ে গত মৌসুমে দ্যুতি ছড়িয়েছেন এই ফরওয়ার্ড। ২৮ বছর বয়সী এই ফুটবলারের অভিজ্ঞতারও কমতি নেই। খেলেছেন গত বিশ্বকাপ। কিন্তু ব্রাজিল বিশ্বকাপে কোনো গোলের দেখা পাননি তিনি। এবার সেই আক্ষেপটা দূর করতে চান আনসারিফার্দ।

গত আট বছর ধরে ইরানের দায়িত্ব পালন করে আসছেন কার্লোস কুয়েরোজ। পার্সিয়ানরা টানা দ্বিতীয়বার যে বিশ্বকাপের টিকিট পেয়েছে সেটার নেপথ্য নায়ক এই পর্তুগিজ কোচই। আগের বিশ্বকাপের ভুলত্রুটি থেকে এবার শিক্ষা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি। এ যাত্রায় তার তুরুপের দ্বিতীয় তাস রুবিন কাজান স্ট্রাইকার সরদার আজমাউন।

২৩ বছর বয়সী এই তরুণ তুর্কির কাছ থেকে কীভাবে সর্বোচ্চটা বের করে আনতে হয় সেটা ভালোই জানা আছে পর্তুগিজ কোচের। কারণ ২০১৪ সালে ইরানের জার্সিতে সুযোগ দেয়ার পর শিষ্যের কাছ থেকে ৩১ ম্যাচে ২৩ গোল পেয়েছেন তিনি। এই ফর্মটা বিশ্বকাপেও বয়ে নিতে চান আজমাউন।

আক্রমণে আজমাউন-আনসারি ফার্দকে সহায়তা করার জন্য মধ্য মাঠে আছেন অলিম্পিয়াকোস তারকা এহসান আজসাফি এবং নটিংহাম ফরেস্টের প্লে-মেকার আশকান ডেজাগাহ। মধ্য মাঠ তো বটেই, পুরো দলের নেতৃত্ব দেবেন মাসোদ শোজায়ি। গোলপোস্টের নিচে ইরান কোচের আস্থা আলিরেজা বেইরানবান্দ। প্রায় সাড়ে ছয় ফুট উচ্চতার এই গোলরক্ষককে পরাস্ত করা কতটা কঠিন সেটা প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলো ভালোই টের পেয়েছে।

দ্বিতীয় রাউন্ডের স্বপ্নটা পূরণ করতে হলে ইরানকে দেখাতে হবে চমক। কারণ ‘বি’ গ্রুপে তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে আছে ইউরোপের দুই পরাশক্তি- সাবেক চ্যাম্পিয়ন স্পেন ও ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর পর্তুগাল। পার্সিয়ানদের জন্য আশার খবর হচ্ছে- গ্রুপপর্বের প্রথম ম্যাচে তারা খেলবে মরোক্কোর সঙ্গে। ১৫ জুন তাদের প্রথম ম্যাচের মঞ্চ সেন্ট পিটার্সবার্গ।

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.