দল পর্যালোচনা: ফের রূপকথার আশায় সেনেগাল
- Details
- by খেলাধুলা ডেস্ক
ধূমকেতুর মতোই বিশ্বমঞ্চে আবির্ভাব হয়েছিল সেনেগালের। অভিষেক আসরটা রীতিমতো কাঁপয়ে দিয়েছিল আফ্রিকান দেশটি। ২০০২ জাপান-দক্ষিণ কোরিয়া বিশ্বকাপের সবচেয়ে বড় চমক হিসেবেই হাজির হয়েছিল সেনেগাল। তাদের রূপকথার যাত্রাটা থেমেছিল কোয়ার্টার ফাইনালে। ১৬ বছর পর আরেকটি রূপকথার আশায় বিশ্বকাপে ফিরেছে পশ্চিম আফ্রিকার দেশটি।
সেনেগালের শুরুটাই হয়েছিল স্বপ্নের মতো। বিশ্বকাপের ইতিহাসে নিজেদের প্রথম ম্যাচেই ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সকে হারিয়ে ফুটবল দুনিয়াকে ভড়কে দিয়েছিল দিয়েছিল তারা। গ্রুপপর্বের পরের দুই ম্যাচে ডেনমার্ক, উরুগুয়ের মতো পরাশক্তিকেও রুখে দিয়েছিল সেনেগাল। পাঁচ পয়েন্ট নিয়ে তারা জায়গা করে নেয় নক আউট পর্বে।
সেনেগালের চমকটা থাকল দ্বিতীয় রাউন্ডেও। এ যাত্রায় ইউরোপের আরেক পরাশক্তি সুইডেনের স্বপ্নের সমাধি করে ফেলে আফ্রিকার সিংহরা। শেষ মুহূর্তে গোল হজম করে বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে যায় সুইডিশরা। আর তাতেই আফ্রিকার দ্বিতীয় দল হিসেবে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠে যায় সেনেগাল। নাম লেখায় ক্যামেরুনের পাশে।
‘জায়ান্ট কিলার’ হয়ে ওঠা সেনেগালের রূপকথা থামল শেষ আটে; তুরস্কের কাছে। তবে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিলেও তাদের দুর্দান্ত পারফরম্যান্স ছুঁয়ে গেছে ফুটবলপ্রেমীদের। দলের বীরযোদ্ধারা দেশে ফেরার পর কী সংবর্ধনাই না পেয়েছিলেন। স্বপ্নসারথীদের বরণ করে নিতে বিমানবন্দরে চলে এসেছিলেন খোদ সেনেগালের প্রেসিডেন্ট নিজেই!
কিন্তু বিশ্বকাপ শেষ হওয়ার পরই দেশটির ফুটবলে লেগে যায় ভাটির টান। টানা তিনটি বিশ্বকাপে বাছাইপর্বের বাধা ডিঙাতে পারেনি তারা। দ্বিতীয় বিশ্বকাপ খেলার জন্য তাদের অপেক্ষা করতে হলো ২০১৮ সাল পর্যন্ত। ২০১০ বিশ্বকাপের আয়োজক দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে চূড়ান্ত পর্ব নিশ্চিত করে সেনেগাল। এবার রাশিয়ায় ফেরার বিশ্বকাপটা রাজসিক ঢঙে সাজাতে আদাজল খেয়ে নেমেছে তারা।
সেনেগালকে এবারো স্বপ্ন দেখাচ্ছেন আলিও সিসে। ২০০২ বিশ্বকাপে তার নেতৃত্বেই কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছিল সেনেগাল। সেবার অধিনায়কের দায়িত্বে থাকা সিসে এবার দাঁড়াচ্ছেন সেনেগালের ডাগ আউটে। খেলোয়াড় ভূমিকায় নিজেকে প্রমাণ করার পর এবার কোচ হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করতে চান সিসে।
অবশ্য বিশ্বমঞ্চে ওঠার আগেই রণ কৌশলে নিজে জাত চিনিয়েছেন তিনি। আফ্রিকা অঞ্চলের বাছাইপর্বে ‘ডি’ গ্রুপে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন দল হিসেবে সেনেগালকে এনে দিয়েছেন মূলপর্বের টিকিট। বাছাইপর্বের এই মিশনে তার তুরুপের তাস ছিলেন সাদিও মানে। বিশ্বকাপেও তার ভরসা এই লিভারপুল ফরওয়ার্ড।
কদিন আগে শেষ হওয়া ইউরোপিয়ান ক্লাব মৌসুমেও দ্যুতি ছড়িয়েছেন সাদিও মানে। এক দশক পর উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগে লিভারপুলের ফাইনালে ওঠার যে কজন নায়ক ছিলেন তাদের মধ্যে মানে ছিলেন অন্যতম। ফাইনালসহ টুর্নামেন্টে নয় গোল করেছিলেন তিনি। এ ছাড়া ইংলিশ লিগেও দশবার জালের ঠিকানা খুঁজে নিয়েছেন এই ফরওয়ার্ড। আসন্ন বিশ্বকাপে সেনেগালের নেতৃত্বের জোয়ালটা থাকছে তার কাঁধেই।
আক্রমণভাগে আফ্রিকান দলটিকে নেতৃত্ব দেবেন মানে। রক্ষণভাগে সিসের আস্থা মোবদজির ওপর। যিনি গত ডিসেম্বর থেকে হাঁটুর চোটে ভুগলেও তাকে বিশ্বকাপের চূড়ান্ত দলে রেখেছেন সেনেগাল কোচ। আফ্রিকান দলটি আশাবাদী আসর শুরুর আগেই শতভাগ ফিট হয়ে উঠবেন অ্যান্ডারলেখট ডিফেন্ডার।
এ দুজন ছাড়াও পারফর্ম করার মতো বেশ কয়েকজন ফুটবলার আছেন সেনেগাল দলে। এই দলের সাতজনই বিদায়ী মৌসুমে খেলেছেন ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে। তবে আশার কথা হচ্ছে- এবারের সেনেগাল দলটি আগের বিশ্বকাপের চেয়েও বেশি ভারসম্যপূর্ণ। এবারের দলটা এতটাই শক্তিশালী যে, এভারটন স্ট্রাইকার ওমার নিয়াসকেও দলের স্বপ্নযাত্রায় রাখার প্রয়োজন মনে করেননি সেনেগাল কোচ।
সেনেগালের জন্য আরেকটি স্বস্তির খবর হচ্ছে- তাদের গ্রুপে বড় কোনো দল নেই। ‘এইচ’ গ্রুপের তাদের তিন প্রতিদ্বন্দ্বীই মাঝারি শক্তির। গ্রুপে আছে তিন মহাদেশের তিন দল- জাপান, পোল্যান্ড ও কলম্বিয়া। সেনেগালের স্বর্ণালী অতীত বলছে, এসব বাধা ডিঙানোটা তাদের পক্ষে সম্ভব। আগামী ১৯ জুন পোল্যান্ডের বিপক্ষের ম্যাচ দিয়ে রাশিয়া বিশ্বকাপ মিশন শুরু করবে সেনেগাল।
গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...
খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর
Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.
Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.