উত্তর আমেরিকা মহাদেশের ফুটবল মানেই মেক্সিকোকে বোঝায়। কিন্তু মহাদেশটিতে ফুটবলের জনপ্রিয়তায় মেক্সিকানদের হারিয়ে দেয় কোস্টারিকা। কনকাকাফ অঞ্চলের ফুটবলের দ্বিতীয় পরাশক্তি তারা। এ নিয়ে পঞ্চম বিশ্বকাপ খেলতে যাচ্ছে দেশটি। তবে বিশ্বমঞ্চে এখনো সেভাবে মাথা তুলে দাঁড়াতে পারেনি ক্যারিবীয় ও প্রশান্ত মহাসাগরের তীরে অবস্থিত কোস্টারিকা।

costa rica football team 2018

অথচ দেশটির ফুটবল ইতিহাস অনেক প্রাচীন। কিন্তু স্বপ্নের মঞ্চে অভিষেকের জন্য তাদের অপেক্ষা করতে হয়েছে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত। তাদের অভিষেক আসরটাই ছিল চমক দেওয়ার মতো। সুইডেন ও স্কটল্যান্ডের মতো দলকে টপকে দ্বিতীয় রাউন্ডে জায়গা করে নেয় উত্তর আমেরিকার দেশটি। কিন্তু শুরুর মতো কোস্টারিকার পথচলা মসৃণ ছিল না। পরের দুই বিশ্বকাপের বাছাইপর্ব পার হতে পারেনি তারা।

২০০২ সালে এশিয়ার প্রথম বিশ্বকাপে আবার তারা ফেরে। কিন্তু সময়টা রাঙাতে পারেনি তারা। সাদামাটা ছিল তাদের পারফরম্যান্স। ২০০৬ জার্মানি বিশ্বকাপেও টিকোসদের পথচলা থেমেছিল গ্রুপপর্বেই। তাদের হতাশা আরো বেড়ে যায় ২০১০ বিশ্বকাপের দর্শক সারিতে চলে যাওয়ায়। সেই হতাশাটা কোস্টারিকা কাটিয়ে ওঠে গেল বিশ্বকাপে। ব্রাজিলেই সুদিনের দেখা পায় তারা।

২০১৪ বিশ্বকাপে কোস্টারিকার পারফরম্যান্স ছিল ঈর্ষণীয়। প্রথম ম্যাচেই দুইবারের চ্যাম্পিয়ন উরুগুয়েকে তারা উড়িয়ে দেয় ৩-১ গোলে। পরের ম্যাচে চারবারের বিশ্বসেরা ইতালিকে শিকারে পরিণত করে কোস্টারিকা। আজ্জুরিদের তারা হারায় ১-০ গোলে। গ্রুপপর্বে কোস্টারিকা ঝড় থামে ইংল্যান্ডের কাছে। অবস্থা এমন যে, ইংলিশরাই ড্র করেছে তাদের সাথে! ওই ম্যাচ শেষে ইংল্যান্ড কোচ ভূয়সী প্রসংশা করেছিলেন কোস্টারিকানদের।

সাবেক তিন চ্যাম্পিয়নের বিপক্ষে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের সুবাদে দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠে যায় কোস্টারিকা। কিন্তু জায়ান্ট কিলার হয়ে ওঠা দলটির রথযাত্রা থামেনি গ্রিসের কাছেও। নির্ধারিত সময় পর্যন্ত ম্যাচ ১-১ গোলে লড়াই অমীমাংসিত থাকায় ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকে। সেখানেই বাজিমাত করে কোস্টারিকা। ৫-৩ গোলে জিতে প্রথমবারের মতো কোয়ার্টার ফাইনালে নাম লেখায় তারা। বিদায় নেয় গ্রিকরা।

সেমিফাইনালে উঠার লড়াইয়েও এমনই ভাগ্য নির্ধারণীর পেনাল্টির সামনে পড়তে হয় তাদের। ইউরোপের পরাশক্তি নেদারল্যান্ডের সঙ্গে দাঁতে দাঁত চেপে লড়াই করে কোস্টারিকা। নির্ধারিত সময় কাটে গোলখরায়। অতিরিক্ত ত্রিশ মিনিটেও নিস্ফলা থেকে যায় লড়াইটি। কিন্তু এবার আর ভাগ্যকে পাশে পায়নি উত্তর আমেরিকার দেশটি, প্যানাল্টি শ্যুটআউটে বিদায় নেয় তারা। 

ব্রাজিল বিশ্বকাপের পর নতুন করে পথ চলতে শুরু করে কোস্টারিকা। দলের দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয় অস্কার র‌্যামিরেজের কাছে। গত কয়েক বছরে স্বদেশি কোচের অধীনে আরো ক্ষুরধার হয়ে উঠেছে কোস্টারিকা। এর প্রভাবটা যাচ্ছে র‌্যাঙ্কিংয়ে। আপাতত ফিফার তালিকায় ২৫ নাম্বার দল হিসেবে আছে কোস্টারিকা। র‌্যামিরেজের অধীনে তো ইতিহাস সেরা র‌্যাঙ্কিং ১৩ নাম্বারেও চলে এসেছিল কোস্টারিকানরা।

ফুটবল বিশ্লেষকদের মতে কোস্টারিকার এবারের দলটি আগের চেয়ে বেশ পরিণত। দলে অভিজ্ঞ ফুটবলার ও প্রতিভার অভাব নেই। অনেকের মতে তাদের দলটা রাশিয়া বিশ্বকাপের সবচেয়ে ভারসম্যপূর্ণ দলগুলোর মধ্যে অন্যতম। দলে আছেন স্পোর্টিং সিপি উইঙ্গার ব্রায়ান রুইজ। এবারের বিশ্বকাপে কোস্টারিকাকে নেতৃত্ব দেবেন তিনিই।

তবে দলের সবচেয়ে বড় তারকা কেইলর নাভাস। রিয়াল মাদ্রিদের এই গোলরক্ষককে ফাঁকি দেওয়া বিশ্বের যে কোনো ফুটবলারের জন্যই কঠিন। স্বাভাবিকভাবেই রাশিয়ার মঞ্চে আলাদাভাবে লাইমলাইটে থাকবেন নাভাস। সদ্য বিদায়ী ইউরোপিয়ান ক্লাব মৌসুমটাও দারুণ কাটিয়েছেন তিনি। বিশ্বকাপে তার কাছে তাই আশাটাও বেশি কোস্টারিকার। 

আক্রমণে রুইজ এবং রক্ষণে নাভাস; এই দুজনই মূলত আশা দেখাচ্ছেন কোস্টারিকাকে। কিন্তু বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচেই বড় পরীক্ষাটা দিতে হচ্ছে তাদের। ‘ই’ গ্রুপে শুরুর ম্যাচেই যে পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিলের মুখোমুখি হবে তারা। প্রথম রাউন্ডে কোস্টারিকানরা অন্য দুটি ম্যাচ খেলবে সুইজারল্যান্ড ও সার্বিয়ার বিপক্ষে। তবে অকুতোভয় উত্তর আমেরিকার দেশটি। জায়ান্ট ‘কিলার তকমা’টা যে আগে থেকেই মাখানো আছে তাদের গায়ে!

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.