নীল জার্সি পরে কলম্বিয়ার বিপক্ষে খেলতে নেমেছিলো এশিয়ান ফুটবল পরাশক্তি জাপান। কিন্তু ম্যাচ শেষে বেদনার নীল রঙটা রইলো কেবল কলম্বিয়ার জন্য। জাপানি সামুরাইদের দল ১০ জনের কলম্বিয়াকে ১-২ গোলে হারিয়ে গড়লো অবিস্মরণীয় ইতিহাস। পৃথিবী দেখলো নীল কখনো কখনো কিভাবে বিজয়ের চোখ ধাঁধানো বর্ণ হয়ে উঠতে পারে!

japan beat colombia in world cup

বিশ্বকাপের ইতিহাসে কোনো এশিয়ান দল কোনো দক্ষিণ আমেরিকার দলকে কোনো দিন হারাতে পারেনি। এ কথাটা যেনো হয়ে উঠছিলো চিরন্তন সত্য। কিন্তু আর কতো? এবার জাপান ঠিকই গড়ে দিলো ইতিহাসের নতুন অধ্যায়। তারাই এখন এশিয়ার প্রথম দল, যারা বিশ্বকাপে দক্ষিণ আমেরিকার কোনো দেশকে হারালো।

মর্ডোভিয়া এরেনায় হাজার হাজার দর্শক এসেছিলেন হলুদ জার্সি পরে। তারা যে কলম্বিয়ার শ্রেষ্ঠত্বের গল্প দেখতে এসেছিলেন, তা হয়ে থাকলো মরীচিকা। ম্যাচের মাত্র তৃতীয় মিনিটেই ১০ জনের দলের পরিণত হওয়া কলম্বিয়া জোর লড়াই করলো বটে, কিন্তু শেষ হাসিটা থেকে গেলো জাপানি সামুরাইদের ঠোঁটে।

দলের সাথে এ দিন ইতিহাসে ঢুকে গেলেন জাপানের কোচ আকিরা নিশিনোও। এবারই প্রথম বিশ্বকাপে জাতীয় দলের কোচ হিসেবে এলেন তিনি এবং এসেই দেশকে এনে দিলেন এমন এক জয়, যা নিয়ে নাগাসাকি-হিরোসিমার দেশ গর্ব করবে বহুদিন। অন্য দিকে শ্রেণীবৈষম্য, মাদক চোরাচালান ও রাজনৈতিক অস্থিরতায় ডুবে থাকা কলম্বিয়া শান্তির ছোঁয়া পেতে যে বিশ্বকাপের দিকে তাকিয়ে আছে, তার প্রথমটা মোড়ানো থাকলো অশান্তির মেঘে। হোসে পেকাম্যান ডাগআউটে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখলেন দলের মুখ লুকানো পরাজয়।

ম্যাচের প্রথমার্ধ শেষ হয় ১-১ ব্যবধানে। ছয় মিনিটেই পেনাল্টি থেকে গোল দেন জাপানের শিনজি কাগাওয়া। বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের এই মিডফিল্ডার পেনাল্টিটি পান কার্লোস সানচেজের ‘সৌজন্যে’। ম্যাচের তৃতীয় মিনিটে তার শট হাত দিয়ে ঠেকান সানচেজ।

ডি বক্সের ভিতর এই ‘পাপ’ করায় তাকে সরাসরি লাল কার্ড দেখিয়ে দেন রেফারি। বিশ্বকাপের ইতিহাসে এতো দ্রুত লাল কার্ড দেখার কোনো নজির এতোদিন ছিলো না। কিন্তু দলের গোল বাঁচাতে কাজটা করা ছাড়া উপায় ছিলো না সানচেজের।

তৃতীয় মিনিটে একটা গোল বাঁচাতে গিয়ে দলকে ম্যাচের বাকি সময়ের জন্য বিপদে ফেলে দেন তিনি। মাত্র তিন মিনিটেই কলম্বিয়া পরিণত হয় ১০ জনের দলে এবং একটা গোলও হজম করতে হয় তাদের। পেনাল্টির সুযোগ কাজে লাগাতে একদমই ভুল করেননি কাগাওয়া।

এই গোলটা ফিরিয়ে দিতে ১০ জনের কলম্বিয়াকে অপেক্ষা করতে হয় ৩৩ মিনিট। ম্যাচের ৩৯ মিনিটে গিয়ে ডি বক্সের ডান প্রান্তের সামান্য বাইরে ফ্রি কিক পায় কলম্বিয়া। দারুণ দক্ষতায় এই সুযোগ কাজে লাগান জুয়ান কুইন্টেরো। সামনে দাঁড়ানো মানব দেয়ালের পায়ের নিচ দিয়ে তিনি বল পাঠিয়ে দেন জাপানের জালে।

বলটা অবশ্য ঠিক জালে যায়নি, বরং তা শুধুমাত্র গোল লাইনটা পার হয়। জাপানের গোলরক্ষক প্রাথমিকভাবে গোল নয় বলে দাবি করেন। কিন্তু প্রযুক্তির জালে জড়ানো বিশ্বকাপের প্রযুক্তি গোললাইন গোল নিশ্চিত করে। গোললাইন প্রযুক্তিতে দেখা যায়, জাপানের গোলরক্ষক যখন বলটা ধরেছেন, তখন তা পেরিয়ে গেছে গোল লাইন।

সমতা ফেরানোর পর কলম্বিয়া খেলতে থাকে আরো গতি ও সাহসের সাথে। এর মধ্যে প্রথম গোল করা কুইন্টেরোকে উঠিয়ে নেন কলম্বিয়ার কোচ হোসে পেকারম্যান। ইনজুরির কারণে সেরা একাদশে না থাকা হ্যামেশ রদ্রিগেজকে মাঠে নামান তিনি। বেড়ে যায় কলম্বিয়ার আক্রমণের ধার।

রদ্রিগেজের উপস্থিতিতে কলম্বিয়া যখন নতুন প্রাণচাঞ্চল্য নিয়ে জাপানের ডিফেন্স ব্যতিব্যস্ত করে রাখার চেষ্টা করছে, এর মধ্যেই এক প্রতিআক্রমণে কর্নার পেয়ে যায় জাপান। কিক নেন জাপানের ইতিহাসের অন্যতম সেরা ফুটবলার, কিয়েস হোন্ডা। গোলমুখে উড়ে আসতে থাকা বল হেড করেন ইওয়া ওসাকা। এগিয়ে যায় জাপান। ৭৩ মিনিটে জাপানের দেয়া এই গোল আর ফেরত দিতে পারেনি কলম্বিয়া।

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.