'বিএনপির নেতাকর্মীরা এখন ঢাকায় রিকশা চালায়'

বিএনপির নেতাকর্মীরা এখন ঢাকায় রিকশা চালাচ্ছেন বলে মন্তব্য করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন এবং ঢাকা সাংবদিক ইউনিয়নের একাংশের যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় এ মন্তব্য করেন তিনি।

দলের নেতাকর্মীদের বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরতে গিয়ে ফখরুল বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৬ জুনের পর সাংবাদিক ভাইয়েরা যেমন ফল বিক্রি করেছেন, আজ তেমনি আমাদের রাজনৈতিক কর্মীরা ঢাকায় রিকশা চালাচ্ছেন। কেউ এলাকায় থাকতে পারছেন না, সবাই চলে এসেছেন যে যার মতো করে। এই ঢাকা শহরের এক পাড়ার লোক সে পাড়ায় থাকতে পারছেন না, অন্য পাড়ায় চলে যেতে বাধ্য হচ্ছেন। তারা হকার হয়েছেন, তারা কোনো বাড়ির নাইট গার্ডের কাজ করেন।

১৯৭৫ সালের ১৬ জুনের পরে যেমন সাংবাদিক ভাইয়েরা অনেকে ফল বিক্রি করেছেন, বায়তুল মোকাররমের সামনে কাগজ বিক্রি করেছেন উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, আমাদের রাজনৈতিক কর্মীরা সারাদেশে প্রায় ১৮ লাখ আসামি। আজ আমাদের রাজনৈতিক কর্মীরা রিকশা চালান এই ঢাকায়, তারা হকার হয়েছেন, তারা কোনো বাড়ির নাইট গার্ডের কাজ করছেন।

আমরা ধীরে ধীরে একটা অন্ধকার গহ্বরের দিকে প্রবেশ করেছি, যে গহ্ববরের শেষ দিকে আলোর রেখা দেখা যাচ্ছে না মন্তব্য করে তিনি বলেন, প্রতিদিনই আমরা কথা বলছি, কথা শুনছি, অনেক কথা বলছি। এখন এই কথাবার্তা খুব বেশি আমার নিজেরই শুনতে ইচ্ছে করে না, বলতেও ইচ্ছে করে না।

বিএনপির এই মহাসচিব বলেন, আমার মনে পড়ে, এই প্রেস ক্লাবেই ২০১০ সালে মাহামুদুর রহমান সাহেব গ্রেফতার হওয়ার পরে পাশেই একটি আলোচনা সভায় আমি জোরের সঙ্গে বলেছিলাম যে, আমরা একদলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রবর্তনের সব লক্ষণগুলো দেখতে পাচ্ছি।

তিনি বলেন, আমাদের দলের অনেকে এসে বলে, স্যার কী হবে? আমি বলি, হতাশাই শেষ কথা হতে পারে না, লড়াই করো, লড়াই করতে করতে আমরা একটা জায়গায় গিয়ে পৌঁছাব-ই। আমরা তো এই বংলাদেশেই দেখেছি, নয় বছর, দশ বছর, বাংলাদেশেই তো একদলীয় শাসন ব্যবস্থা বাকশাল দেখেছি, কিন্তু এই বাংলাদেশের মানুষ কিন্তু জেগে উঠেছে। এই বাংলাদেশের মানুষই কিন্তু ঘুরে দাঁড়িয়েছে। ধ্বংসস্তূপ থেকে ফিনিক্স পাখির মতো উড়ে গেছে। আমাদেরকে সেইভাবে এগোতে হবে।

সভায় সাংবাদিক নেতা রুহুল আমিন গাজী, শওকত মাহমুদ, আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, সৈয়দ আবদাল আহমেদ, কাদের গনি চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।