আপনি পড়ছেন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. রুশাদ ফরিদী। তিনি বলেছেন, এই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে আমরা গর্ব করি। এখানে আমরা ভাষা আন্দোলনের কথা টেনে আনি, স্বৈরশাসক পতনের কথা টেনে আনি। সেখানে আমার ছাত্র, যাকে আমি ক্লাশে পড়াতাম, আমার বিভাগের না হলেও তাকে নির্মমভাবে পিটানো হচ্ছে। তারপর তাকে বিনা অপরাধে রিমান্ডে নিয়ে যাচ্ছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে কতজন ছাত্র-শিক্ষক আছেন? ৪০ হাজার, আজ এখানে ক’জন এসেছেন, কতজন ছাত্র এসেছেন, কতজন শিক্ষক এসেছেন? কেন নাই? এটা তো এখন মৃত্যুপুরী।’

rushad foridi du techer

কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে পুলিশ কর্তৃক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. ফাহমিদুল হককে লাঞ্চিত করার প্রতিবাদে আজ ০৪ জুলাই, বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে মানববন্ধনে দাঁড়িয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

এই মৃত্যুপুরীর অবসান কে ঘটাবে প্রশ্ন করে তিনি বলেন, 'এখন আর কোনো সময় নেই। দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। যে কয়জন আসুক তাদের নিয়ে দাঁড়িয়ে পড়তে হবে। আমরা এখন বিপর্যয়ের মুখে। এখন আর মানববন্ধন বিবৃতির এগুলোর সময় নেই। এখন আমাদের সরাসরি কর্মসূচিতে যেতে হবে। একজন হোক, দুজন হোক তাদের নিয়ে মাঠে থাকতে হবে।'

Ghiti ara nasrin du teacherমনববন্ধনে কথা বলেন অধ্যাপক ড. গীতি আরা নাসরীন, ছবি: এম.এস.আই খান

শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের এই মানবন্ধনে অধ্যাপক ড. গীতি আরা নাসরীন বলেন, 'ঢাকা বিশ্ববিদালয়ের ঢোকার মুখে একটা তোরণ নির্মাণ করেছেন। যারা নাম মুক্তি ও গণতন্ত্র তোরণ। এই তোরণ দিয়ে এই ইতিহাসের বুকে পা ফেলে যখন আপনারা এইখানে ঢুকবেন, এখানে অপরাজেয় বাংলা দেখেন, শহীদ মিনার দেখেন, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যেকটি জায়গায় সংগ্রামের চিহ্ন রয়েছে। এ রকম একটি জায়গায় আমরা আশ্চর্য হয়ে দেখি, একটি আন্দোলন একটি দাবি এবং যে দাবীর যৌক্তিকতা শুধু আজকে নয়, বহুদিন ধরে বলা হচ্ছে সেটিকে থামিয়ে দেয়া হচ্ছে।'

গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সাবেক এই চেয়ারম্যান বলেন, 'অভিভাবকদের কষ্টার্জিত অর্থে এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলো চলে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব তাদের সন্তানদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। সবাই মিডিয়াতে দেখেছেন কী ধরনের নৃশংস-বর্বর আক্রমণ চালানো হয়েছে। হতভম্ব হয়ে যাওয়া ছাড়া, এর কোনো ব্যাখ্যা আমার কাছে নেই। এই ধরনের একটি নির্যাতন সবার চোখের সামনে কিভাবে ঘটে। শুধু এই বিশ্ববিদ্যালয় নয়, অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও এই ধরনের ঘটনা ঘটছে। চোখের সামনে এই ধরনের বর্বর আক্রমন চলছে তাতে উদ্বিগ্ন হয়েই অভিভাবক কিছু মানুষ গতকাল প্রেসক্লাবে দাঁড়িয়েছিলেন। তাদের কনসার্ন সেখানে জানাতে গিয়েছেন। তাদের সেখানে বলা হয়েছে আপনারা এখানে দাঁড়াতে পারবেন না।'

তিনি বলেন, 'কবে থেকে এই দেশে একটি সাধারণ মানুষ কথা বলতে পারবে না, কবে থেকে এ ধরণের পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে? আমি শুধু শিক্ষক ফাহমিদুল হকের কথা বলছি না। প্রত্যেকটি নাগরিকের এই অধিকার রয়েছে। উদ্বেগ প্রকাশ করার অধিকার সবার আছে। কিন্তু এই উদ্বেগ প্রকাশ করতে গিয়ে তাদের কিভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। তাদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে লাঞ্চনা করা হয়েছে। ঠিক এইভাবে নিজেদের কথা স্পষ্টভাবে বলতে হবে। সন্তানদের উপর যাতে নির্যাতন না হয় এই জন্য কজন কথা বলবেন? নিজেদের জায়গা ফিরিয়ে আনতে হবে। অত্যাচার নির্যাতনের তদন্ত চাই, বিচার চাই।'

masud al mahdi du studentবক্তব্য রাখছেন শিক্ষার্থী মাসুদ আল মাহদি, ছবি: এম.এস.আই খান

ঘণ্টাব্যাপী এই মানববন্ধনে বিভাগের শিক্ষার্থী মাসুদ আল মাহদি বলেন, ‘আজকে আমাদের সবার স্বীকার করতে হবে, আমরা একটা ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রে বসবাস করি। কারণ গত কয়েক বছরে এমন অসংখ্য মানববন্ধন করেছি। একটারও বিচার পাইনি। তাই এটা মেনে নিয়ে যখন আমরা কর্মসূচি দিতে পারব, সব কিছু বন্ধ করে দিতে পারব, তখন এসব ঘটনার বিচার হবে। প্রধানমন্ত্রী কী আজকে দেখেন না, আমাদের স্যারের ওপর হামলা হয়? তিনি কী দেখেন না আমাদের শরীর থেকে রক্ত ঝড়ে?’

পূর্বে ডাকসুর দাবিতে আন্দোলনকারী এই শিক্ষার্থী সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া ঘটনায় শিক্ষকদের নির্লিপ্ততা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, ‘আমাদের কতজন শিক্ষক আছে? আজকে তারা কই? তারা ফুল দেয়ার সময় যান, বিভিন্ন জায়গায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বলার জন্য যান, কিন্তু আজকে ফাহমিদ স্যারের ওপর হামলা হলে তারা কথা বলেন না। তারা আমাদের পড়ান ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়তে হবে, তারা আমাদের পড়ান বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বায়ত্বশাসন আছে কিন্তু আজকে আমরা মার খেয়ে রাস্তায় পড়ে থাকলে তারা দাঁড়ান না। এরা আমাদের শিক্ষক না এরা দালাল।’

মানববন্ধনে শিক্ষকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. ফাহমিদুল হক, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তানজীম উদ্দিন খান, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. সামিনা লুৎফা প্রমুখ। মানববন্ধন শেষে বিভাগের শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেন।

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.