চার জেলায় ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত ৫

কুষ্টিয়া, নাটোর, ঢাকার কেরানীগঞ্জ ও লক্ষ্মীপুর জেলায় কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধে’ পাঁচজনের নিহতের কথা জানিয়েছে র‌্যাব ও পুলিশ। নিহতদের মধ্যে চারজনকে ‘মাদক ব্যবসায়ী’ ও একজনকে ‘ডাকাত দলের সদস্য’ দাবি করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ‘বন্দুকযুদ্ধে’ কুষ্টিয়ায় দুজন এবং নাটোর, কেরানীগঞ্জ ও লক্ষ্মীপুরে একজন করে নিহত হয়েছেন। র‌্যাব ও পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার দিবাগত মধ্য রাত থেকে বুধবার ভোর পর্যন্ত সারাদেশে মাদকবিরোধী অভিযানের সময় এসব ‘বন্দুকযুদ্ধ’ হয়।

কেরানীগঞ্জ ডিবি পুলিশের পরিদর্শক মনিরুল ইসলামের ভাষ্য, দেউশুরে ডায়মন্ড মেলামাইন এলাকায় রাত ৩টায় গোয়েন্দা পুলিশ মাদকবিরোধী অভিযানে গেলে মাদক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ একজন নিহত হন।

নিহত নূর হোসাইন নুরুকে মাদক ব্যবসায়ী দাবি করে তিনি বলেন, নূর হোসাইনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ১২টি মামলা রয়েছে।

ডিবি পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ঘটনাস্থল থেকে ৩৫ পিস ইয়াবা এবং আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।

কুষ্টিয়ার মিরপুরে র‌্যাবের সঙ্গে কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধে" মাদক ব্যবসায়ী মামা-ভাগ্নে ফুটু ওরফে মোন্না (৩৫) ও রাসেল আহম্মেদ (৩০) নামের দুই ব্যক্তির নিহতের কথা জানিয়েছে র‌্যাব।

র‌্যাবের দাবি, এ ঘটনায় তাদের দুই সদস্য আহত হয়েছেন। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ অস্ত্র, গুলি ও মাদকদ্রব্য উদ্ধার করেছে।

বুধবার ভোর রাতে মিরপুর উপজেলার কূর্শা ইউনিয়নের আনান্দ বাজার বালুচর সংলগ্ন জোয়াদ্দারের ইটভাটার কাছে এ ‘বন্দুকযুদ্ধ’ হয়।

র‌্যাব-১২ কুষ্টিয়া ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার মোহাইমিনুলের ভাষ্য, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ঘটনাস্থলে অভিযান গেলে মাদক ব্যবসায়ীরা র‌্যাবকে লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়ে। র‌্যাব পাল্টা গুলি চালালে দুজন গুলিবিদ্ধ হয়। তাদের উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

ঘটনাস্থল থেকে একটি বিদেশি নাইন এমএম পিস্তল, একটি দেশি ওয়ান শুটারগান, ২টি কার্তুজ, ১২ রাউন্ড গুলি এবং ৪০ লিটার চোলাই মদ, ১৫০০ পিচ ইয়াবা ও ২৩০ বোতল ফেন্সিডিল উদ্ধারের কথা জানায় র‌্যাব।

অপরদিকে নাটোরের বড়াইগ্রামে কথিত বন্দুকযুদ্ধে ওসমান গণী নামে এক ব্যক্তির নিহতের কথা জানিয়েছে র‌্যাব।

নিহত ওসমানকে চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী দাবি করে র‌্যাব জানায়, ঘটনাস্থল থেকে অস্ত্র, গুলি ও মাদক দ্রব্য উদ্ধার করা হয়েছে।

র‌্যাব-৫ নাটোর ক্যাম্পের কমান্ডার মেজর শিবলী মোস্তফার ভাষ্য, রাত পৌনে ১২টার দিকে র‌্যাবের একটি টহল দল বড়াইগ্রাম উপজেলার বাহিমালী এলাকার কাঁচা রাস্তায় টর্চ জালিয়ে কয়েকজন লোককে আনাগোনা করতে দেখে সেদিকে অগ্রসর হয়।

এসময় লোকগুলো পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে র‌্যাব সদস্যরা তাদের আত্নসমর্পণের নির্দেশ দিলে তারা র‌্যাবকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। র‌্যাবও পাল্টা গুলি চালায়। পরে ঘটনাস্থল থেকে ‘মাদক ব্যবসায়ী’ ওসমান গণীর গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করা হয়।

এদিকে লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার চরপাতা এলাকায় বুধবার ভোররাতে কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধে’ সোহেল (২৬) নামে এক যুবকের নিহতের কথা জানিয়েছে পুলিশ। সে রায়পুর উপজেলার দেনায়েতপুর গ্রামের আবদুল মুনাফের ছেলে।

পুলিশের ভাষ্য, নিহত সোহেল ডাকাত দলের সদস্য। তার বিরুদ্ধে চাঁদপুর ও রায়পুর থানায় বিভিন্ন অপরাধে ১৯টি মামলা রয়েছে।

এর আগে মঙ্গলবার বিকাল ৫টায় লক্ষ্মীপুর শহরের ঝুমুর সিনেমা হল এলাকা থেকে সোহেলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

রায়পুর থানার ওসি আজিজুর রহমানের ভাষ্য, বুধবার দিবাগত রাত ৩টায় পুলিশ ডাকাত সদস্য সোহেলকে নিয়ে মাদক ও অস্ত্র উদ্ধার করতে ঘটনাস্থলে গেলে তার সহযোগীরা গুলি চালায়। পুলিশ পাল্টা গুলি চালালে ডাকাত সদস্যরা পালিয়ে যায়। সোহেল তার সহযোগীদের গুলিতে আহত হলে তাকে প্রথমে রায়পুর ও পরে লক্ষ্মীপুর জেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করে।

ঘটনাস্থল থেকে ৩ রাউন্ড গুলি, ৩০০ পিস ইয়াবা ও একটি এলজি উদ্ধারের কথা জানিয়ে ওসি বলেন, ‘গোলাগুলিতে’ পুলিশের দুই সদস্য আহত হয়েছেন। ইউএনবি।