ইউটার্ন নিল ঢাবি প্রশাসন: বহিরাগত প্রবেশে বাধা নেই

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ‘বহিরাগত’ প্রবেশের বিষয়ে নিজেদের অবস্থান পাল্টে ‘নতুন বক্তব্য’ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ‘বহিরাগত প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়নি’ এমন দাবি করে তারা ওই বক্তব্যের জন্য গণমাধ্যমকে দুষেছেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনের নবনির্মিত গেটে লাগানো ফলক, ছবি: প্রতিবেদক

১১ জুলাই, বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এব বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভোস্ট কমিটির সিদ্ধান্তের বিষয়ে দেশের কিছু গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে খণ্ডিতভাবে তথ্য প্রচারের ফলে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কাউকে প্রবেশ বা গমনাগমণে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয় নাই। বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচারের মাধ্যমে অশুভ শক্তিকে উৎসাহিত না করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে অনুরোধ জানানো যাচ্ছে।’

এর আগে গত ৯ জুলাই “ঢাবি ‘প্রভোস্ট কমিটি’র সভার সিদ্ধান্ত” শিরোনামে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়,‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস শুধুমাত্র এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য উন্মুক্ত। এখানে বহিরাগতরা বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বা প্রক্টরের পূর্বানুমতি ছাড়া ক্যাম্পাসে অবস্থান ও ঘোরাফেরা এবং কোনো ধরণের কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবে না। এ বিষয়ে প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তা নিবেন।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো ওই প্রেস বিজ্ঞপ্তির বিষয়ে নিশ্চিত হতে টোয়েন্টিফোর লাইভ নিউজপেপারের পক্ষ থেকে প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রাব্বানী’র সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি মুঠোফোনেও এ খবর নিশ্চিত করেন। যার রেকর্ড টোয়েন্টিফোর লাইভ নিউজপেপারের কাছে সংরক্ষিত রয়েছে।

৯ তারিখে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তি

বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রবেশের ক্ষেত্রে ‘পূর্বানুমতি’ নেওয়ার প্রক্রিয়া কী রকম হবে সে বিষয়েও সেদিন প্রক্টর তার ধারণা দিয়েছিলেন। বহিরাগতরা মৌখিকভাবে নাকি লিখিতভাবে আবেদন করে অনুমতি নিবেন এ বিষয়ে তিনি বলেছিলেন, ‘এটা নির্ভর করে বিষয়ের ওপর। তারা চাইলে আমার প্রক্টর অফিসে আবেদন করতে পারবে। অথবা সংশ্লিষ্ট বিভাগের চেয়ারম্যান বা ডিন মহোদয়ের কাছেও করতে পারবে। কেউ যদি মেডিকেল সেন্টারে যায় তবে সংশ্লিষ্ট মেডিকেল টিমের কাছে করবে, ইনস্টিটিউট গেলে সেখানে করবে।’

‘কিন্তু অনুমতি নিতে হলে তো আবেদনপত্র নিয়ে তাকে (বহিরাগত) অনুমতি ছাড়াই ক্যাম্পাসে আসতে হবে। সেক্ষেত্রে তো নিয়ম ভঙ্গ করা হয়’ প্রশ্ন করলে প্রক্টর গোলাম রব্বানী সেদিন বলেছিলেন, ‘সেক্ষেত্রে তারা আমাদের মোবাইলে জানাবে কিংবা ওয়েবসাইটে অনলাইনে বা ই-মেইলে আবেদন করবে।’

বহিরাগত প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারির বিষয়ে প্রশাসনের এই সিদ্ধান্ত গণমাধ্যমে প্রকাশ হলে নানা মহল থেকে সমালোচনার ঝড় ওঠে। এমন পরিস্থিতিতে আজ বুধবার এ বিষয়ে প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে আগের ওই বার্তাকে অস্বীকার করা হয়।

নতুন এ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘যেসব সিদ্ধান্ত ও পদক্ষেপের কথা প্রভোস্ট কমিটি বলেছে সেগুলো ঐতিহ্যবাহী এ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত রীতি, নীতি ও সিদ্ধান্তের আলোকে নেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সভা-সমাবেশসহ যেকোন ধরণের কর্মসূচি পালনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমতি আবশ্যক হয়, এটা নতুন কিছু নয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশ পথে সব সময়েই পূর্বের ন্যায় বর্তমানেও নিরাপত্তা প্রহরী দায়িত্ব পালন করছে।’

বুধবারের বিজ্ঞপ্তিতে আরো দাবি করা হয়, ‘তাদের (নিরাপত্তা প্রহরী) দায়িত্ব পালনের অনুকূল কর্ম-পরিবেশ তৈরি করা প্রয়োজন। নিরাপত্তা প্রহরীদের দায়িত্ব ও কর্মদক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কর্তৃপক্ষ মাঝে-মধ্যে বিভিন্ন দিক-নির্দেশনা প্রদান করে থাকেন। বর্তমান পদক্ষেপ তার অংশ মাত্র।’