তিন নম্বরে কি সাকিবই স্থির হচ্ছেন?

ওয়ানডেতে তিন নম্বরে কে ব্যাটিং করবেন, এ নিয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের দুশ্চিন্তা ফুরাচ্ছেই না। তিন নম্বরে সর্বশেষ তিনজনকে নিয়ে চেষ্টা করা হয়েছে। এদের মধ্যে ছিলেন ইমরুল কায়েস, ছিলেন সাব্বির রহমান এবং চেষ্টা করা হয়েছে লিটন দাসকেও। কিন্তু কাঙ্ক্ষিত সাড়া দিতে পারেননি তারা। কিন্তু এ বছরের শুরুতে তিন নম্বরে উঠা সাকিব আল হাসান গুরুত্বপূর্ণ এই জায়গায় করছেন দারুণ পারফর্ম। তাহলে তিনিই কি তিন নম্বরের দুশ্চিন্তার সমাপ্তি ঘটিয়ে দিবেন?

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে চলমান সিরিজের প্রথম দুই ওয়ানডেতেই তিন নম্বরে নিজের ব্যাটিং সক্ষমতার প্রমাণ দিয়েছেন সাকিব। প্রথম ম্যাচে মাত্র তিন রানের জন্য সেঞ্চুরি মিস করেন তিনি। ৯৭ রানের ইনিংসটি খেলার পথে তামিম ইকবালের সাথে ২০০ রানের জুটিও গড়েন সাকিব। ঠিক পরের ম্যাচে আবার হাফ সেঞ্চুরি আসে এই অলরাউন্ডারের ব্যাট থেকে।

তিন নম্বর জায়গার জন্য অনেক দিন ধরেই একজন নিয়মিত পারফর্মারের খুঁজে ছিলো বাংলাদেশ। সাকিবেরও ইচ্ছে ছিলো নিয়মিত পজিশন পরিবর্তন করে আরো উপরের দিকে ব্যাট করার। সাকিবের ইচ্ছে পূরণ করার পথটা মূলত খুলে দিন তিন নম্বরে যাদের সুযোগ দেয়া হয়েছিলো, তারাই। বেশ কয়েকবার সুযোগ পেয়েও তারা তিন নম্বরে নিজেদের প্রমাণ করতে পারেননি।

দীর্ঘ মেয়াদের চিন্তায় সাকিবকে প্রথম তিন নম্বরে সুযোগ দেয়া হয় চলতি বছরের শুরুতে দেশের মাটিতে অনুষ্ঠেয় ত্রিদেশীয় সিরিজে। সেখানে চার ম্যাচে দুটি হাফ সেঞ্চুরি করেন সাকিব। এরপর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে আবার তাকে তিনে সুযোগ দেয়া হয়। এবারও সাকিব ধরে রাখেন ধারাবাহিকতা।

তিন নম্বরে সাকিবের এমন পারফর্ম আশাবাদী করে তুলেছে নির্বাচকদের। তিন নম্বর নিয়ে দুশ্চিন্তা দূর হয়ে যাওয়ার ইঙ্গিত পেয়ে প্রধান নির্বাচক সংবাদ মাধ্যমের কাছে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন।

এ বিষয়ে বিসিবির প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, 'তিন নম্বর পজিশনে এমন কাউকে আমরা চাই যে ধারাবাহিক পারফর্ম করবে এবং ওই পজিশনে কী করতে হয়, তার জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত ও পরিস্থিতি মোকাবেলার যোগ্য হবে। তিন নম্বরে এখনো আমরা কাউকে স্থির করিনি। তবে সাকিবকে দেখে মনে হচ্ছে এই জায়গায় সে ভালো কিছু করতে প্রস্তুত। মনে হচ্ছে সে তিন নম্বরে নিজেকে মানিয়ে নিয়েছে।'

প্রধান নির্বাচক আরো বলেন, 'সাকিবকে দলে পাওয়া মানে বিশ্বের সেরা অলরাউন্ডারকে দলে পাওয়া। এ ছাড়া সে যে কোনো পজিশনে ব্যাটিং করার অভিজ্ঞতাসম্পন্ন। তিন নম্বরেও সে অসাধারণ খেলছে। আমরা মনে করি, কোনো খেলোয়াড় যদি নির্দিষ্ট পজিশনে ভালো খেলার বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী হয় এবং পারফর্ম করে, তাহলে তাকে সেখানেই সুযোগ দেয়া উচিত।'

সাকিব তিন নম্বরে ব্যাটিংয়ের জন্য অনেক আগে থেকেই তার ইচ্ছের কথা প্রকাশ করে আসছিলেন। কিন্তু সাবেক কোচ চান্দিকা হাথুরুসিংহে এতে রাজি ছিলেন না। তার চাওয়া ছিলো সাকিব লোয়ার অর্ডারে ব্যাটিং করুক, যাতে শেষ দিকে তার অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে দ্রুত রান তোলা সম্ভব হয়।

তিন নম্বরে সব সব মিলিয়ে আটটি ম্যাচে তিন নম্বরে ব্যাটিং করেছেন। এতে ৪৩.১২ গড়ে ৩৪৫ রান করেছেন তিনি। এই পজিশনে তার সর্বোচ্চ সংগ্রহ ৯৭ রান। সাকিবের ক্যারিয়ার গড় ৩৫.৫০; সে তুলনায় তিন নম্বরে তার গড় যথেষ্ট ভালো। এই পরিসংখ্যান নিশ্চিতভাবেই তিন নম্বরে সাকিবের স্থির হওয়ায় দারুণ সহায়তা করবে।