রাজনীতির মাঠে ঝড় তোলা পাঁচ ক্রিকেটার

পাকিস্তানি রাজনীতিতে ঝড় তুলেছেন ইমরান খান। পাকিস্তান ক্রিকেট দলকে একমাত্র বিশ্বকাপ জয়ে নেতৃত্ব দেয়া ইমরান এখন দেশটির ভবিষ্যতে রূপকার হতে চলেছেন। ক্রিকেটার থেকে রাজনীতিতে আসা প্রথম ব্যক্তি কিন্তু ইমরান নন। উপমহাদেশের আরো বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার ক্যারিয়ার শেষে যোগ দিয়েছেন রাজনীতিতে।

পাকিস্তানের সর্বশেষ সাধারণ নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি ভোট পেয়ে আলোচনার শীর্ষে ইমরানের প্রতিষ্ঠিত দল পিটিআই। এর মধ্যে আলোচনায় এসে যাচ্ছেন ক্রিকেটার থেকে রাজনীতিক হওয়া ব্যক্তিরাও। তাদের মধ্যে পাঁচজন নিয়ে এই প্রতিবেদন।

ইমরান খান: এই তালিকায় ইমরান খানকেই রাখতে হচ্ছে এক নম্বরে। ১৯৮৬ সালে ইমরান পাকিস্তান তেহরিক ই ইনসাফ বা পিটিআই নামের দল গড়েন। প্রাথমিকভাবে তিনি রাজনীতিতে মোটেই সফল ব্যক্তি ছিলেন না। কিন্তু ধীরে হলেও তিনি জনপ্রিয়তার তুঙ্গে উঠতে থাকেন।

তার অসাধারণ নেতৃত্বগুণ ও ধৈর্য্যশক্তি তাকে নিয়ে এসেছে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার মতো পরিস্থিতিতে। উপমহাদেশে ক্রিকেটারদের রাজনীতিক হওয়ার যে প্রবণতা, তা হয়তো ইমরানের সাফল্যের পর আরো বেড়ে যাবে।

মোহাম্মদ আজহারউদ্দিন: ভারতীয় বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার রাজনীতিতে জড়িয়েছেন। তাদের মধ্যে আছেন ভারতের সাবেক অধিনায়ক মোহাম্মদ আজহারউদ্দিনও। ১৯৯০ সাল থেকে ৪৭টি টেস্টে ভারতকে নেতৃত্ব দেন এই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান। খেলেন মোট ৯৯টি টেস্ট। কিন্তু একটা পর্যায়ে ম্যাচ ফিক্সিংয়ের মতো গুরুতর অন্যায়ে তার নাম জড়িয়ে পড়ে এবং ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড তাকে আজীবন নিষিদ্ধ ঘোষণা করে।

২০০০ সালে নিষিদ্ধ হওয়ার নয় বছর পর, ২০০৯ সালে তিনি ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল কংগ্রেস পার্টিতে যোগ দেন। ওই বছর উত্তর প্রদেশের মুরাদাবাদ অঞ্চল থেকে নির্বাচন করে সংসদ সদস্যও নির্বাচিত হন তিনি।

সনাথ জয়সুরিয়া: শ্রীলঙ্কার ইতিহাসের অন্যতম সেরা ক্রিকেটার তো বটেই, ওয়ানডে ইতিহাসে সর্বকালেরই সেরাদের একজন সনাথ জয়সুরিয়া। বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান তার ধ্বংসাত্মক ব্যাটিং ক্ষমতা দিয়ে বহু ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে জয় এনে দিয়েছেন। ক্রিকেট মাঠের মতো রাজনীতির মাঠেও জয়সুরিয়া দেখিয়েছেন সমান পারদর্শিতা।

খেলোয়াড়ি জীবন শেষ করার আগেই রাজনীতিতে ঢোকেন জয়সুরিয়া। নিজের জেলা মাতারা থেকে নির্বাচনও করেন তিনি। শ্রীলঙ্কার সাবেক সরকার প্রধান মাহিন্দা রাজাপাকসের ক্ষমতার সময় জয়সুরিয়া উপমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বও পালন করেন।

অর্জুনা রানাতুঙ্গা: ইমরান খান ও অর্জুনা রানাতুঙ্গার মধ্যে একটি বিশেষ মিল হলো, এরা দুজনই দেশকে প্রথম বিশ্বকাপ জয়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন। রানাতুঙ্গার অসাধারণ নেতৃত্বে বিশ্বকাপ জেতার পর বদলে যায় শ্রীলঙ্কার ক্রিকেট। ক্রিকেট ক্যারিয়ার শেষ করার পর, রানাতুঙ্গা শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট বোর্ডে দীর্ঘদিন নানা পদে কাজ করেন।

রানাতুঙ্গা ২০০১ সালে তার নিজ জেলার হয়ে নির্বাচন করেন। শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটকে চিরদিনের জন্য বদলে দেয়া রানাতুঙ্গা তার দেশের সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করেন। বর্তমানে বন্দর মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করছেন তিনি।

মনসুর আলি খান পতৌদি: বলিউড অভিনেতা সাইফ আলি খানের বাবা মনসুর আলি খান পতৌদিও রাজনীতিতে নাম লেখিয়েছিলেন। ভারতীয় দলের সাবেক এই অধিনায়ক ও উইকেটরক্ষক তার সময়ে পৃথিবীর সেরা ফিল্ডার বলে পরিচিত ছিলেন।

ক্রিকেটার হিসেবে মোটামুটি স্মরণীয় হলেও রাজনীতিতে খুব একটা সুবিধা করতে পারেননি এই নবাব। ১৯৯১ সালে কংগ্রেসের হয়ে নির্বাচন করেন তিনি। কিন্তু ব্যর্থ হন। এর আগে ১৯৭১ সালেও একবার সাধারণ নির্বাচনে লড়েন সাইফ আলি খানের বাবা। তখনও ব্যর্থতার তিক্ত স্বাদ নিতে হয়েছিলো তাকে।