একদিনের ক্রিকেটে অভিষেকেই দ্যুতি ছড়ানো ক্রিকেটারের সংখ্যাটা অনেক। তবে ক্যারিয়ারের প্রথম ওয়ানডেতেই সেঞ্চুরি হাঁকানোর কীর্তিটা খুব কম ক্রিকেটারেরই আছে। যার শুরুটা হয়েছিল ইংল্যান্ডের ডেনিস অ্যামিসকে দিয়ে। সবশেষ অভিষেক ম্যাচে ক্রিকেট দুনিয়াকে শতক উপহার দিয়েছেন রিজা হেন্ড্রিকস।

temba bavuma south african batsman

সম্প্রতি দক্ষিণ আফ্রিকার রঙিন জার্সিতে সেঞ্চুরি তুলে নিয়ে অভিষেকটা চিরস্মরণীয় করে রেখেছেন এই ব্যাটসম্যান। এতে করে একদিকে যেমন আশার আলো দেখা যাচ্ছে, তেমনিভাবে অশনি একটা সংকেতও উঁকি দিচ্ছে। কারণ দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে ওয়ানডেতে যে দুজন অভিষেকে সেঞ্চুরি করেছেন তাদের দুজনই হারিয়ে গেছেন।

শুধু আফ্রিকান ক্রিকেটারই নন, এমন বেশ কয়েকজন ব্যাটসম্যান আছেন যারা অভিষেকেই বাজিমাত করেছেন। সব মিলিয়ে সংখ্যাটা ১৪। কিন্তু এদের মধ্যে ক্যারিয়ারটা বেশি দূর দীর্ঘায়িত করতে পারেননি অনেকেই; সময়ের বিবর্তনে দ্রুতই বিলীন গেছেন তারা। এমন কয়েকজন ক্রিকেটারের ক্যারিয়ারের বর্ণিল শুরু ও শেষের করুণ গল্পটা পাঠকের জন্য তুলে ধরা হলো:

টেম্বা বাভুমা (দক্ষিণ আফ্রিকা): ওয়ানডে অভিষেকেই ইতিহাস গড়েছিলেন টেম্বা বাভুমা। দক্ষিণ আফ্রিকান প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ ব্যাটসম্যান হিসেবে অভিষেকেই সেঞ্চুরি করেছিলেন তিনি। ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে এক ম্যাচের সিরিজে ১১৩ রানের ইনিংস খেলেছিলেন বাভুমা।

বাভুমার আগে প্রোটিয়াদের জার্সিতে প্রথম ম্যাচে একজনই সেঞ্চুরি করেছিলেন। তার সেঞ্চুরির ওপর দাঁড়িয়ে আইরিশদের কাঁধে ৩৫৪ রানের পাহাড় চাপিয়ে প্রোটিয়ারা জিতেছিল রেকর্ড ২০৬ রানের ব্যবধানে। অথচ ওয়ানডে অভিষেকের পর আর মাত্র একটা ওয়ানডে ম্যাচই খেলার সৌভাগ্য হয়েছিল বাভুমার।

গত বছরের অক্টোবরে বাংলাদেশের বিপক্ষে দ্বিতীয় ও শেষ ওয়ানডে ম্যাচটা খেলেছেন তিনি। তবে ওয়ানডে ক্যারিয়ারে ধুঁকলেও দক্ষিণ আফ্রিকার টেস্ট দলের নিয়মিত খেলোয়াড় হয়ে উঠেছেন বাভুমা। সাদা পোশাকে ইতোমধ্যে ৩১টি ম্যাচ খেলে ফেলেছেন তিনি।

mark chapman hongkong batsman

মার্ক চ্যাপমান (হংকং): ২০১৫ সালের নভেম্বরে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে অভিষেক ম্যাচেই ব্যক্তিগত সংগ্রহে তিন অংক ছুঁয়েছিলেন মার্ক চ্যাপম্যান। দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত আইসিসি বিশ্ব ক্রিকেট লিগে ১১৫ বলে ১২৪ রানের রাজসিক ইনিংস খেলেছিলেন হংকংয়ের ব্যাটসম্যান। চার নাম্বারে ব্যাট করতে এসে শেষ পর্যন্ত অজেয় ছিলেন তিনি।

হংকংয়ের ইতিহাসে সেদিন প্রথম সেঞ্চুরিয়ান হিসেবে রেকর্ড গড়েন চ্যাপম্যান। শুধু তাই নয়, আইসিসি সহযোগী দেশগুলোর মধ্যে অভিষেকেই সেঞ্চুরি করা প্রথম এবং একমাত্র ব্যাটসম্যান তিনি। তার দুর্দান্ত ব্যাটিং নৈপুণ্যের সুবাদে সেদিন আরব আমিরাতকে ৮৯ রানে হারিয়েছিল হংকং। হংকংয়ের ২৯৮ রানের জবাব দিতে নেমে স্বাগতিক দল অলআউট হয়েছিল ২০৯ রানে।

অবশ্য হংকংয়ের হয়ে রাজসিক সূচনা করলেও এই জার্সিতে নিয়মিত হননি চ্যাপম্যান। তিনি এখন নিউজিল্যান্ডের ক্রিকেটার। গেল ১৩ ফেব্রুয়ারিতে কিউইদের জার্সিতে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে তার অভিষেকও হয়ে গেছে। এরই সঙ্গে দুই দেশের হয়ে খেলা দশম ক্রিকেটার হিসেবে নাম লিখিয়েছেন চ্যাপম্যান। টি-টোয়েন্টি অভিষেকের ঠিক দুই সপ্তাহ পরই নিউজিল্যান্ডের জার্সিতে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডেতে প্রথম ম্যাচটি খেলেন তিনি।

rob nicol new zealand batsman

রব নিকোল (নিউজিল্যান্ড): ২০১১ সালের অক্টোবরে নিউজিল্যান্ডের পক্ষে অভিষেক ম্যাচেই সেঞ্চুরি তুলে নেন রব নিকোল। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথমটিতে ১০৮ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। কিন্তু সেদিন টেলরের ১২৮ রানের ইনিংসের কারণে অনেকটা আড়ালে থেকে গেছেন অভিষিক্ত নিকোল।

তবে দারুণ শুরুর পরও আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারটা লম্বা করতে পারেননি এই ব্যাটসম্যান। ব্ল্যাক ক্যাপসদের হয়ে ২২টি ওয়ানডে, ২১টি টি-টোয়েন্টি এবং দুটি টেস্ট খেলেন নিকোল। গেল জুনে সবধরণের ক্রিকেটকে বিদায় জানিয়ে দেন তিনি।

colin ingram south africa

কলিন ইনগ্রাম (দক্ষিণ আফ্রিকা): দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে অভিষেক ওয়ানডে ম্যাচে তিন অংকের ম্যাজিক ফিগার স্পর্শ করেন কোলিন ইনগ্রাম। ২০১০ সালের অক্টোবরে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ১২৪ রানের দারুণ ইনিংস খেলেন এই টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান। সেদিন শতক হাঁকিয়েছিলেন ওপেনার হাশিম আমলাও। তাদের দুজনের সেঞ্চুরির সুবাদে ৩৫১ রান করেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা।

সেদিন সেঞ্চুরি হয়েছিল আরো একটি। প্রোটিয়াদের ছুড়ে দেওয়া সাড়ে তিনশোর্ধ রানের জবাব দিতে নেমে ১৪৫ রানে অপরাজিত থাকেন ওপেনার ব্রেন্ডন টেলর। তবু দলকে জেতাতে পারেননি তিনি। তার দল জিম্বাবুয়েকে হারতে হয়েছিল ৬৪ রানে। তবে দলের জয়ে অবদান রাখলেও এরপর থেকেই হারাতে শুরু করেন ইনগ্রাম। আপাতত ইংলিশ কাউন্টি দল গ্লামারগানকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন তিনি।

phil huges australian batsman

ফিল হিউজ (অস্ট্রেলিয়া): ক্রিকেট ইতিহাসের সম্ভবত সবচেয়ে মর্মান্তিক দুর্ঘটনার শিকার হয়েছিলেন ফিল হিউজ। মস্কিষ্কে রক্তক্ষরণে মৃত্যু হয় তার। স্বদেশি পেসার শন অ্যাবটের ভয়ঙ্কর একটা বাউন্সার কেড়ে নেয় হিউজের জীবন। মাত্র ২৫ বছর বয়সে ক্রিকেট দুনিয়াকে কাঁদিয়ে ওপারে পাড়ি জমান অস্ট্রেলিয়ান এই খেলোয়াড়। ২০১৪ সালে হিউজের মৃত্যুকে দৃষ্টান্ত হিসেবে দাঁড় করিয়ে এখন অবধি হেলমেট ব্যবহারে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে।

অথচ অস্ট্রেলিয়ার জার্সিতে ক্যারিয়ারের শুরুটা কী দুর্দান্তই না করেছিলেন হিউজ। ২০১৩ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে অভিষেক ম্যাচেই সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছিলেন তিনি। হিউজের ১১২ রানের সুবাদে লঙ্কানদের ৩০৫ রানের চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। জবাব দিতে নেমে আশা জাগিয়েও অবিশ্বাস্য ব্যাটিং ধসে ১০৭ রানে হেরে যায় লঙ্কানরা। ৮৮ রানের মধ্যে শেষ আট উইকেট হারায় এশিয়ার দলটি।

কিন্তু অভিষেকে ম্যাচ সেরার পুরস্কার পাওয়া হিউজ দলে জায়গা হারান এরপরই। ফেরার লড়াইয়ে অনেকদূর এগিয়ে ছিলেন তিনি। অস্ট্রেলিয়ান ঘরোয়া ক্রিকেটে ৬৩ রানে অপরাজিত থেকে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন হিউজ। মাঠে অপ্রতিরোধ্য হয়ে ওঠা অ্যাবট দুইদিন জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থাকার পর হারিয়ে যান চিরতরে।

Stay on top of the latest sports news, including cricket and football, from around the world. Get comprehensive coverage of matches, tournaments, and leagues— along with expert analysis and commentary from our team of sports journalists. Whether you're a die-hard fan or a casual observer, you'll find everything you need to know about your favorite sports here.

Sports, cricket, and football are popular topics in the world of sports. Cricket is a bat-and-ball game played between two teams of eleven players and is particularly popular in South Asian countries. Football, also known as soccer, is a team sport played with a spherical ball between two teams of eleven players and is widely popular worldwide. Sports enthusiasts follow the latest news, matches, tournaments, and leagues in these sports and analyze and comment on the performances of players and teams.