ইলিশের জন্য ঢাকায় ভারতীয় পাইলটের ‘লঙ্কাকাণ্ড’

পছন্দের পদ্মার ইলিশ নিয়ে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তুলকালাম কাণ্ড ঘটিয়েছেন এক ভারতীয় পাইলট। আড়াই কেজি ইলিশের জন্য এক ঘণ্টা দেরিতে ফ্লাইট ছাড়েন তিনি। গত ৮ আগস্টে ঘটে যাওয়া ঘটনাটি এতদিন গোপন ছিল। বিষয়টি তদন্ত করে দেখার কথা জানিয়েছে এয়ার ইন্ডিয়া কর্তৃপক্ষ।

জানা গেছে, এয়ার ইন্ডিয়ার ওই পাইলটের নাম রাজেশ কুয়াশেকা। তিনি ইলিশের প্যাকেট নিয়ে বিমানে প্রবেশের চেষ্টা করছিলেন। এ সময় নিরাপত্তা কর্মীরা বাধা দিলে ঘটনার সূত্রপাত ঘটে। পরে ‘বদ মেজাজি’ এ পাইলটের কারণে নির্ধারিত সময়ের এক ঘণ্টা পর ফ্লাইটটি ত্যাগ করে!

ফ্লাইট বিলম্বিত হওয়ায় কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে এ তথ্য জানতে পারে এয়ার ইন্ডিয়া কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটি শনিবার জানায়, তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

জানা যায়, গত ৮ আগস্ট এয়ার ইন্ডিয়ার ২২৯ নম্বর বিমানের ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দর ছাড়ার কথা ছিল রাত সোয়া ৯টায়। কিন্তু সময় মতো সব যাত্রী আসন গ্রহণ করলেও প্রায় এক ঘণ্টা দেরিতে ফ্লাইটটি ছাড়া হয়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ফ্লাইট ছাড়ার ঠিক আগ মুহূর্তে বরফে ঢাকা আড়াই কেজি ওজনের ইলিশের একটি পার্সেল নিয়ে বিমানের কাছে আসেন বিমানবন্দরের এক কর্মী। কিন্তু ওই পার্সেল বিমানে তুলতে গেলে বাধা দেন একজন নিরাপত্তা কর্মকর্তা।

এ সময় ওই নিরাপত্তা কর্মকর্তা বলেন, ‘ইলিশ রপ্তানিতে বর্তমানে নিষেধাজ্ঞা থাকায় পার্সেলটি উড়োজাহাজে তোলা যাবে না। এতে ওই কর্মকর্তার সঙ্গে রীতিমতো ঝগড়ায় লিপ্ত হন ভারতীয় পাইলট রাজেশ।

পরে বিমানবন্দরের কর্মকর্তা জানান, ইলিশ না হয়ে অন্য কিছু হলেও পার্সেলটি ওভাবে নেয়ার অনুমতি দেয়া সম্ভব ছিল না। কারণ, উড়োজাহাজে করে লাইসেন্স ছাড়া এ জাতীয় কোনো জিনিস নেয়ার অনুমতি নেই।

এতে রেগে গিয়ে ওই পাইলট এয়ারক্রাফট রিলিজ সার্টিফিকেটে স্বাক্ষর না করেই বিমানের দরজা বন্ধ করার নির্দেশ দেন। এক পর্যায়ে বিমানটিকে ফিরিয়ে আনতে এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলকে নির্দেশ পাঠানো হয়। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে ফিরে আসেন এবং বাকি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে রাত সাড়ে ১০টার দিকে কলকাতার উদ্দেশে ফ্লাইটটি বিমানবন্দর ত্যাগ করে।

এদিকে বিমানবন্দরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে পাইলটের মধ্যে তর্ক-বিতর্ক দেখে কৌতূহলী হয়ে পড়েন বিমানটির যাত্রীরা। তবে ফ্লাইট দেরির কারণ হিসেবে লগ বুকে ‘প্রকৌশলী সমস্যা’র কথা উল্লেখ করা হয়েছে।