খেলার আগে এইসব স্মৃতি কি মনে পড়বে বাংলাদেশের?
- Details
- by সাইফ বিন আইয়ুব
এশিয়া কাপে আজ পাকিস্তানের মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশ। ২০১৫ সালের পর ওয়ানডেতে এটাই পাকিস্তানের সাথে প্রথম দেখা। আরব আমিরাতের আবু ধাবিতে শেখ জায়েদ স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় আজ বিকাল ৫:৩০টায় পাকিস্তানের বিপক্ষে লড়াইয়ে নামবে টাইগাররা। আজকের ম্যাচটা অলিখিত সেমিফাইনাল হয়ে দাঁড়িয়েছে দুই দলের জন্যই। আজকে যে জয়ী হবে সেই দলই ২৮ সেপ্টেম্বর ভারতের বিপক্ষে ফাইনালে খেলবে।
এই পর্যন্ত পাকিস্তানের বিপক্ষে ৩৫টি আন্তর্জাতিক ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে জয় এসেছে মাত্র চারটিতে। ১৯৯৯ সালে ওই ঐতিহাসিক জয়ের পর ২০১৫ সালে এসে আবার সাফল্যের দেখা পায় টাইগাররা। পরপর তিন ম্যাচে পাকিদের ধরাশায়ী করে সাকিব আল হাসানের দল। ওই সিরিজে বাংলার দামাল ছেলেদের সামনে দাঁড়াতেই পারেনি সরফরাজ-আজহার আলীরা। ওটাই ওয়ানডেতে পাকিস্তানের সাথে শেষ দেখা।
আবু ধাবিতে আজ মাঠে নামার আগে বাংলাদেশকে অনুপ্রেরণা যোগাবে পাকিস্তানের বিপক্ষে সর্বশেষ ওই তিন ওয়ানডের ফলাফল। আজকের ম্যাচ শুরু হওয়ার আগে চলুন আরও ভালোভাবে দেখে আসি পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের ওই জয়গুলো।
সেই প্রথম ঐতিহাসিক জয়
৩১ মে, ১৯৯৯। বিশ্বকাপের আসর বসেছে ইংল্যান্ডে। ওই বিশ্বকাপে পাকিস্তান অন্যতম ফেভারিট দল। স্কোয়াডে তখন সাঈদ আনোয়ার, শহীদ আফ্রিদি, ইনজামাম-উল হক, সেলিম মালিকদের মতো বাঘা বাঘা ব্যাটসম্যান। আর বোলিংয়ে নেতৃত্ব দিচ্ছেন টু ডাব্লিউ ওয়াসিম আকরাম এবং ওয়াকার ইউনিস, শোয়েব আখতারের মতো পেসার। উল্টো দিকে বাংলাদেশ তখন অনেকটা পঁচা শামুকের মতো। কিন্তু শেষমেশ ওই পঁচা শামুকেই পা কেটে বসলো পাকিস্তান।
ইংল্যান্ডের নর্দাম্পটনে সেদিন মুখোমুখি দুই দল। টসে জিতে বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ে পাঠান ওয়াসিম আকরাম। ইচ্ছা ছিলো হয়তো, অল্প রানে বাংলাদেশকে বেঁধে ফেলবেন, তারপর খুব সহজেই ম্যাচটা জিতে দলের খেলোয়াড়দের বিশ্রাম নেয়ার সুযোগ করে দিবেন। কিন্তু ওপর থেকে স্রষ্টা বুঝি তখন মুচকি হাসছিলেন।
শুরুটা অবশ্য তেমন ভালো ছিলো না বাংলাদেশের। ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদের কেউই ৫০ রানের অঙ্ক ছুঁতে পারেননি। আকরাম খানের ৪২, শাহরিয়ার হোসেনের ৩৯, খালেদ মাহমুদের ২৭ এবং মি.এক্সট্রার ৪০ রানের সৌজন্যে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ২২৩ রান করে বাংলাদেশ। পাকিস্তানের পক্ষে সাকলাইন মোশতাক পাঁচ উইকেট নেন।
জবাবে পাকিস্তান ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই বিপদে পড়ে যায়। দলীয় পাঁচ ও সাত রানে দুই উইকেট হারিয়ে পাকি ব্যাটসম্যানদের আসা-যাওয়ার যে মিছিল শুরু হয় তা আর কখনোই থামেনি। বাংলাদেশের বোলিং তোপের মুখে নির্ধারিত সময় পর পর আউট হতে থাকে পাকিস্তানের ব্যাটসম্যানরা। ফলাফল- দলীয় ১৬১ রানেই গুটিয়ে যায় পাকিস্তান। বল হাতে তিন উইকেট নেন খালেদ মাহমুদ। আর বাংলাদেশ পায় ৬২ রানের বিশাল জয়।
পাকিস্তানের বিপক্ষে ২য় জয়
১৯৯৯ সালের পর পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের দ্বিতীয় জয় আসে ১৬ বছর পর, ২০১৭ সালে। তিন ম্যাচের সিরিজ খেলতে বাংলাদেশ সফরে আসে পাকিস্তান। ১৭ এপ্রিল মিরপুরে পাকিস্তানের মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ।
টসে জিতে প্রথমেই ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ। মাঠে নেমেই চার-ছয়ের ফুলঝুরি ছোটান তামিম ইকবাল। ১৫টি চার ও তিনটি ছক্কায় তামিম করেন অনবদ্য ১৩২ রান। তবে ম্যাচে আউটস্ট্যান্ডিং পারফর্ম করেন মুশফিকুর রহিম। ১৩টি চার ও দুই ছক্কায় মাত্র ৭৭ বলে ১০৬ রান করেন জাতীয় দলের এই কিপার। দুই সেঞ্চুরি ও অন্যান্যদের সহযোগিতায় নির্ধারিত ৫০ ওভারে ছয় উইকেট হারিয়ে ৩২৯ রান করে বাংলাদেশ।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে ২৫০ রানেই অলআউট হয় পাকিস্তান। দলের পক্ষে আজহার আলী ৭২, মোহাম্মদ রিজওয়ান ৬৭ এবং হারিস সোহাইল ৫১ করলেও তা জয়ের জন্য যথেষ্ট ছিলো না। ফলে বাংলাদেশ পায় ৭৯ রানের বিশাল জয়। বাংলাদেশের পক্ষে তাসকিন ও আরাফাত সানি তিনটি করে উইকেট নেন।
পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ জয়
মাত্র দুই দিন আগে পাকিস্তানের বিপক্ষে জয়ের স্মৃতি নিয়ে এপ্রিলের ১৯ তারিখে আবারও মাঠে নামে বাংলাদেশ। মিরপুর শেরাবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে মুখোমুখি বাংলাদেশ-পাকিস্তান। টসে জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন আজহার আলী। তবে যে মনোবাসনা নিয়ে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন পাক অধিনায়ক, ব্যাটিং অর্ডারের ব্যর্থতায় তা আর পূরন হয়নি। সাদ নাসিমের ৭৭ রানের সুবাদে বাংলাদেশের সামনে ২৪০ রানের টার্গেট দেয় পাকিস্তান।
এই ম্যাচেও সেঞ্চুরি হাঁকান তামিম ইকবাল। তার অনবদ্য ১১৬ রান ও মুশফিকুর রহিমের ৬৫ রানের সুবাদে ৩৮ ওভারেই জয়ের বন্দরে পৌছে যায় টাইগাররা। সিরিজ জয়ের আনন্দে ভাসে পুরো দেশ।
হোয়াইট ওয়াশ
সিরিজের আরও একটা ম্যাচ তখনও বাকি। পাকিস্তান তখন হোয়াইট ওয়াশ এড়াতে মরিয়া। আর বাংলাদেশ পাকিস্তানকে ধবল ধোলাইয়ের লজ্জায় ফেলতে চায়। এমন সমীকরণ নিয়েই ২২ এপ্রিল আবার মুখোমুখি হয় বাংলাদেস-পাকিস্তান। এই ম্যাচেও টসে জিতে পাকিস্তান ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয়।
আগের দুই ম্যাচের হারের জ্বালা নিয়ে সিরিজের শেষ ম্যাচে জ্বলে উঠেন পাক অধিনায়ক আজহার আলী। তার ১০০ রান ও হারিস সোহাইলের ৫২ রানে ভর করে বাংলাদেশের সামনে ২৫১ রানের টার্গেট ছুঁড়ে দেয় পাকিস্তান। বাংলাদেশের সম্মিলিত বোলিং তোপের মুখে ৪৯ ওভারেই অলআউট হয় পাকিরা।
বাংলাদেশের ইনিংসের শুরুতেই জ্বলে উঠেন সৌম্য ও দারুণ ফর্মে থাকা তামিম। সৌম্যর অপরাজিত ১২৭ আর তামিমের ৬৪ রান ম্যাচটাকে হাতের মুঠোয় এনে দেয় বাংলাদেশের। বাকি কাজটুকু সারেন আরেক ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিম। তার ৪৯ নট আউটের ভূমিকায় পাকিস্তানকে হোয়াইট ওয়াশ করে বাংলাদেশ। পুরো দেশ ফেটে পড়ে আনন্দে।
আজকে শেখ জায়েদ স্টেডিয়ামে নামার আগে এইসব স্মৃতি কি মনে পড়বে বাংলাদেশের?
গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...
খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর
Stay on top of the latest sports news, including cricket and football, from around the world. Get comprehensive coverage of matches, tournaments, and leagues— along with expert analysis and commentary from our team of sports journalists. Whether you're a die-hard fan or a casual observer, you'll find everything you need to know about your favorite sports here.
Sports, cricket, and football are popular topics in the world of sports. Cricket is a bat-and-ball game played between two teams of eleven players and is particularly popular in South Asian countries. Football, also known as soccer, is a team sport played with a spherical ball between two teams of eleven players and is widely popular worldwide. Sports enthusiasts follow the latest news, matches, tournaments, and leagues in these sports and analyze and comment on the performances of players and teams.