মুশফিক যেনো ফিনিক্স পাখি...

গ্রিক পুরাণে যেভাবে ফিনিক্স পাখির পুনর্জন্ম হয়, ধ্বংসস্তুপ থেকে যেভাবে নবপ্রাণের জাগরণ ঘটে, মুশফিকুর রহিমও যেনো তেমনি; বাংলাদেশের ব্যাটিং যেখান ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়, মুশফিক সেখানে ডানা মেলে দেন ফিনিক্স পাখির নতুন রূপ নিয়ে!

এশিয়া কাপে আরো একটা সেঞ্চুরি থেকে মাত্র এক রান দূরে থাকতে আউট হয়ে গেছেন মুশফিকুর রহিম। এই প্রথম বাংলাদেশের কোনো ব্যাটসম্যান ৯৯ রানে উইকেট হারিয়ে পুড়লেন সেঞ্চুরি মিসের যন্ত্রণায়।

পাকিস্তানের বিপক্ষে ৯৯ রান করা মুশফিক তবু থাকছেন আলোতেই। তার ১৪৪ রানে ভর করে এশিয়া কাপের প্রথম ম্যাচে অসাধারণ জয় পায় বাংলাদেশ। সেই ম্যাচেও প্রথম ওভারেই দুই উইকেট হারিয়ে বসেছিলেন মাশরাফিরা। তিন নম্বর ওভারে হাতে আঘাত পেয়ে ফেরেন তামিম ইকবালও। তিন ওভারে কার্যত তিন উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ যখন দুঃসহ শুরুর আতঙ্কে, তখনই দাঁড়িয়ে যান মুশফিক। মোহাম্মদ মিঠুনকে নিয়ে গড়েন অসাধারণ এক জুটি। যা শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের জয়ের ভিত হয়ে থাকে।

মুশফিক আবার জ্বলে উঠলেন এমন ম্যাচে, যা বাংলাদেশের জন্য হয়ে দাঁড়িয়েছে সেমিফাইনাল। টানা দ্বিতীয় এশিয়া কাপের ফাইনালে উঠতে যখন বাংলাদেশের জয় ছাড়া কিছুই করার নেই। এমন সময়ে আবার তাসের ঘরের মতো উড়ে গেলো টপ অর্ডার। তারপরও বাংলাদেশের আশর বেলুন থাকলো ফুলে; কারণ মুশফিক যে আছেন!

সত্যিই মুশফিক থাকলেন এবং আরো এবার পাখা মেললেন ফিনিক্স পাখির মতো। পুরাণের ফিনিক্স পাখি অতিকাল্পনিক হলেও, মুশফিক তা নন। মুশফিক বরং জলজ্যান্ত বাস্তব। মুশফিক বরং সঞ্জীবনী সুধা বয়ে চলা রক্তস্রোত।

পাকিস্তানের বিপক্ষে স্কোরবোর্ডে ২০ রান তোলার আগেই তিন উইকেট হারিয়ে বসে বাংলাদেশ। ফাইনাল খেলার স্বপ্নের সামনে তখন ক্রমেই স্পষ্ট হয়ে উঠছে প্রশ্নবোধক চিহ্ন। কিন্তু মুশফিক, আবার মোহাম্মদ মিঠুনকে নিয়ে গড়লেন ১৪৪ রানের জুটি। যা বাংলাদেশকে দেয় বড় স্কোরের ভিত। এক রানের জন্য সেঞ্চুরি মিসের যন্ত্রণায় পুড়লেও মুশফিক আলো ছড়িয়েছেন ঠিকই, এখন এই আলোর পথ বেয়ে বাংলাদেশ ফাইনালের সিঁড়িতে পা রাখতে পারে কিনা, সেটাই দেখার বিষয়।