দেড় বছরে ২১ রোগী বহনে জ্বালানি খরচ ৬ লাখ টাকা!

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (যবিপ্রবি) ক্যাম্পাস থেকে রোগী বহনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের রয়েছে একটি অ্যাম্বুলেন্স। এটি দিয়ে গত বিশ মাসে ২১ জন রোগী বহন করা হয়েছে। যাতে খরচ হয়েছে প্রায় ৬ লাখ টাকা। অথচ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যশোর জেনারেল হাসপাতালের দূরত্ব মাত্র ১৪ কিলোমিটার।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বলছে, তাদের এই অ্যাম্বুলেন্সটি দিয়ে রোগী বহনে কর্তৃপক্ষের ৮ হাজার ৯১৫ লিটার তেল বাবদ ৫ লাখ ৮০ হাজার ৩৬৭ টাকা খরচ হয়েছে। তবে এক হিসাবে জানা গেছে, গত দেড় বছরের এই অ্যাম্বুলেন্স দিয়ে মাত্র ২১ জন রোগীকে বহন করা হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই হিসাবের গড়মিল নিয়ে নানামহলে বিভিন্ন প্রশ্ন উঠেছে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তা বলছেন, 'যে হিসাবের কথা বলা হচ্ছে সেটি মূলত অফিস চলাকালে রোগী পরিবহনের সংখ্যা। এর বাইরের হিসাব বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন দপ্তর বলতে পারবে।' পরে পরিবহন প্রশাসক ড. সিরাজুল ইসলাম জানান, রোগীর সংখ্যা বিশ্ববিদ্যালয়ে সংরক্ষিত থাকে না। তবে অ্যাম্বুলেন্স কোথায়, কত দূরত্বে যাচ্ছে সেই হিসাব অনুযায়ী বিল করা হয়।

গত ১১ সেপ্টেম্বর তথ্য অধিকার আইনে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে এবিষয়ক তথ্য চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষে কাছে আবেদন করেন একটি জাতীয় দৈনিকের প্রতিবেদক। পরে ২৪ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. দীপক কুমার মণ্ডল ও পরিবহন প্রশাসক ড. সিরাজুল ইসলাম স্বাক্ষরিত পৃথক চিঠিতে রোগীর তথ্য জানানো হয়।

প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তা সাক্ষরিত চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০১৭ সালের জানুয়ারি থেকে চলতি বছরের আগস্ট মাস পর্যন্ত অফিস চলাকালে ২১ জন রোগীকে ক্যাম্পাস থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য যশোর জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। অ্যাম্বুলেন্সটি বর্তমানে পরিবহন পুলের নিয়ন্ত্রণে আছে। অফিস টাইমের বাইরে ছাত্র, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীরা যে কেউ চিকিৎসা কাজে অ্যাম্বুলেন্সটি ব্যবহার করতে চাইলে পরিবহন দপ্তরের অনুমতি সাপেক্ষে করতে পারে।

এদিকে পরিবহন প্রশাসক ড. সিরাজুল ইসলামের সরবরাহকৃত তথ্যে বলা হয়, ২০১৭ সালের জানুয়ারি থেকে চলতি আগস্ট মাস পর্যন্ত জ্বালানি বাবদ ৮ হাজার ৯১৫ লিটার তেল খরচ হয়েছে। যার মূল্য হিসেবে ৫ লাখ ৮০ হাজার ৩৬৭ টাকা পরিশোধ করা হয়েছে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে অ্যাম্বুলেন্সটি রোগী পরিবহনের পরিবর্তে বিভিন্ন কাজে ব্যবহার হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের যথাযথ দেখভালের অভাবে দিনের পর দিন সুবিধাবাদী কয়েকজন শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শিক্ষার্থীরা অ্যাম্বুলেন্সটি নিজের কাজে ব্যবহার করছেন।