‘বৈঠক না হওয়া পর্যন্ত পরিবহন ধর্মঘট চলবে’

সম্প্রতি সংসদে পাস হওয়া ‘সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮’-এর কয়েকটি ধারা সংশোধনসহ মোট ৮ দফা দাবি আদায়ে পরিবহন ধর্মঘটের কর্মসূচি পালন করছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন। চলবে মঙ্গলবার সকাল ৬টা পর্যন্ত। এমতাবস্থায় আজ কর্মসূচি চলাকালীন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী বলেছেন, 'আইন সংশোধনের জন্য সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় শ্রমিকদের সঙ্গে বৈঠকে না বসা পর্যন্ত সারা দেশে পরিবহন ধর্মঘট চলবে।'

এর আগে নির্বাচনের আগমুহূর্তে আইন পরিবর্তন করে শ্রমিকদের দাবি মেনে নেয়া সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। জনগণের ভোগান্তির বিবেচনা করে ধর্মঘট প্রত্যাহারের আহ্বান ও আগামী সংসদ পর্যন্ত অপেক্ষা করার আহ্বান জানান তিনি। এরপরই ওসমান আলী এমন ঘোষণা দিলেন।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী বলেন, 'এক মাস আগে শ্রমিকদের দাবির বিষয়টি উল্লেখ করে সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছিলাম, কিন্তু সাড়া পাওয়া যায়নি। আমরা কি আওয়ামী লীগ বিদ্বেষী? ২০১৩-১৪ সালে জীবন বাজি রেখে আমরা বিরোধীদলের অবরোধ ঠেকিয়ে দেই। আমাদের কারো সঙ্গে বিরোধ নাই। সড়ক পরিবহন ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠক না হওয়া পর্যন্ত শ্রমিকদের কর্মসূচি চলবে।'

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন যে আট দফা দাবিকে সামনে রেখে আন্দোলন করছে সেগুলো হলো- সড়ক দুর্ঘটনায় মামলা জামিনযোগ্য করতে হবে, শ্রমিকদের অর্থদণ্ড ৫ লাখ টাকা করা যাবে না, সড়ক দুর্ঘটনা তদন্ত কমিটিতে শ্রমিক প্রতিনিধি রাখতে হবে, ড্রাইভিং লাইসেন্সে শিক্ষাগত যোগ্যতা পঞ্চম শ্রেণি করতে হবে, ওয়েস্কেলে (ট্রাক ওজন স্কেল) জরিমানা কমানোসহ শাস্তি বাতিল করতে হবে।

এছাড়াও সড়কে পুলিশের হয়রানি বন্ধ করতে হবে, গাড়ির রেজিস্ট্রেশনের সময় শ্রমিকদের নিয়োগপত্র সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সত্যায়িত স্বাক্ষর থাকার ব্যবস্থা করতে হবে। সব জেলায় শ্রমিকদের ব্যাপক হারে প্রশিক্ষণ দিয়ে ড্রাইভিং লাইসেন্স ইস্যু করতে হবে এবং লাইসেন্স ইস্যুর ক্ষেত্রে দুর্নীতি ও অনিয়ম বন্ধ করতে হবে।

গত ২৯ জুলাই রাজধানীতে বাস চাপায় দুই স্কুল শিক্ষার্থীর মৃত্যুর পর দেশব্যাপী সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে সরকার দীর্ঘদিন ধরে ঝুলিয়ে রাখা সড়ক পরিবহন আইন পাস করে। পরিবহন শ্রমিকরা সেই আইনের কয়েকটি ধারা নিয়ে আপত্তি তুলে সেগুলো বাতিলের দাবিতে আন্দোলন করছে।

জনদুর্ভোগ অবসানে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকও পরিবহন শ্রমিকদের এই ধর্মঘট প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছেন। আর যোগাযোগমন্ত্রী অপেক্ষা করতে বলেন। এ বিষয়ে ওসমান আলী বলেন, 'আইন মেনে নেয়া সম্ভব নয়। আমরা একমাস আগেই চিঠি দিয়েছিলাম। তখন তারা ব্যবস্থা নিলো না। আজ যখন আন্দোলন শুরু হল তখন উনি টিভিতে এসব বললেন। আমাদের ডাকলেনও না। বিষয়টা বৈঠকে সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।'