জাপাকে যে ৪০ আসন দিতে চায় আ. লীগ

আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মহাজোটের অন্যতম শরিক জাতীয় পার্টিকে (জাপা) ৪০টি আসনে ছাড় দিতে পারে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। তবে জাপা চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে নিয়ে সন্দেহ, সংশয় এখনো কাটেনি। তাই আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি কৌশলে এগুচ্ছে বলে জানা গেছে।

একাধিক সুত্র জানায়, এবার ৭০টি আসন চেয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে চিঠি দিয়েছেন এরশাদ। দলটি শেষ পর্যন্ত ৫৫টি আসন পাওয়ার ব্যাপারে দর কষাকষি করছে। কিন্তু ৪০টি আসন দিতে সম্মত হয়েছে আওয়ামী লীগ। তবে শেষ মুহূর্তে এসে এ সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। কারণ, দর কষাকষি করতে গিয়ে আওয়ামী লীগ দীর্ঘদিনের মিত্র জাতীয় পার্টিকে কোনো অবস্থাতেই হারাতে চায় না।

গত শনিবার আসন বণ্টনের তাগাদা দিয়ে এরশাদের দেয়া চিঠিটি গ্রহণ করেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। চিঠির সাথে জাতীয় পার্টির সম্ভাব্য প্রার্থীদের একটি তালিকাও দেয়া হয়। পরে মঙ্গলবার জাপাকে আসন বণ্টনের একটি তালিকা দেয় আওয়ামী লীগ। ওই তালিকায় ৪০টি আসনের কথা বলা হয়েছে।

তবে এ বিষয়ে আওয়ামী লীগ বা জাতীয় পার্টির কোনো নেতা মন্তব্য করতে রাজি হননি। তারা জানান, বিষয়টি নির্ভর করছে জোটনেত্রী শেখ হাসিনার ওপর। তিনিই ২ একদিনের মধ্যে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সংসদীয় বোর্ডের সদস্য কাজী জাফরউল্লাহ বলেন, ‘জাতীয় পার্টি ৭০টি আসন চেয়ে চিঠি দিয়েছে। তাদের কয়টি আসন ছাড়া হবে তা দুই-একদিনের মধ্যে চূড়ান্ত করা হবে। এ ব্যাপারে নেত্রীই সিদ্ধান্ত নিবেন।’

জাতীয় পার্টির মহাসচিব রুহুল আমীন হাওলাদার এ বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু না বললেও তিনি জানান, মনোনয়ন নিয়ে জোটের সম্পর্ক খারাপ হোক, তা জাতীয় পার্টি চায় না। জিততে পারবে এমন ব্যক্তিদের মনোনয়ন দেয়ার কথা জানিয়েছেন তিনি।

মহাজোট থেকে লড়তে চান জাপার যেসব প্রার্থী:

ময়মনসিংহ-৪, রওশন এরশাদ, পটুয়াখালী-১, এবিএম রুহুল আমীন হাওলাদার, লালমনিরহাট-৩ জিএম কাদের, চট্টগ্রাম-৫ আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, চট্টগ্রাম-৯ জিয়া উদ্দিন বাবলু, গাইবান্ধা-১, রংপুর-১ মসিউর রহমান রাঙ্গা, কিশোরগঞ্জ-৩ মুজিবুল হক, নীলফামারী-৪ শওকত চৌধুরী, কুড়িগ্রাম-১ মোস্তাফিজুর রহমান, শামীম হায়দার পাটোয়ারী, বগুড়া-২ শরিফুল ইসলাম জিন্নাহ, বগুড়া-৩ নূরুল ইসলাম তালুকদার, বগুড়া-৬ নূরুল ইসলাম ওমর, বগুড়া-৭ মুহম্মাদ আলতাফ আলী, বরিশাল-৬ নাসরিন জাহান রতনা, জামালপুর-৪ মামুনুর রশিদ, মংমনসিংহ-৫ সালাহউদ্দিন আহমেদ মুক্তি, ময়মনসিংহ-৮ ফখরুল ইমাম, ঢাকা-১ সালমা ইসলাম, ঢাকা-৪ সৈয়দ আবু হোসেন, ঢাকা-৫ আবদুস সবুর আসুদ, ঢাকা-৬ কাজী ফিরোজ রশীদ, নারায়নগঞ্জ-৩ লিয়াকত হোসেন খোকা, নারায়ণগঞ্জ-৫ একেএম সেলিম ওসমান, সুনামগঞ্জ-৪ পীর ফজলুর রহমান, সিলেট-২ ইয়াহইয়া চৌধুরী, সিলেট-৫ সেলিম উদ্দিন, হবিগঞ্জ-১ আবদুল মুনিম চৌধুরী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ জিয়াউল হক মৃধা, কুমিল্লা-২ আমির হোসেন, কুমিল্লা-৮ নূরুল ইসলাম মিলন, লক্ষ্মীপুর-২ মোহাম্মদ নোমান, কক্সবাজার-৩ সন্তোষ শর্মা, ফেনী-৩ লে. জেনারেল (অব) মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী, পিরোজপুর-৩ রুস্তম আলী ফরাজী এবং টাঙ্গাইল-৫ আসনে পীরজাদা শফিউল্লাহ আল মুনির।

জানা গেছে, এ তালিকার বাইরে রংপুর বিভাগে জাতীয় পার্টিকে সর্বোচ্চ আরো ৫টি আসন ছাড়তে পারে আওয়ামী লীগ। তার মধ্যে এরশাদের একটি আসন থাকছে। তবে এরশাদ রংপুরের আসনসহ ঢাকা-১৭ আসনটিও চান।